দিনাজপুর: মানি লন্ডারিং মামলায় দিনাজপুরের আলোচিত যুবলীগ নেতা খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টনকে আবারও জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মানি লন্ডারিং মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত হয়ে দিনাজপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্থায়ীভাবে জামিন নিতে আসলে আদালতের বিচারক বিএম তারিকুল কবীর মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তোহা বলেন, মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় হাইকোর্টের জামিনের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল লিভ টু আপিল দায়ের করেছেন। আপিলে কোর্টের বিচারক চেম্বার জজ ওবায়দুর রহমান লিভ টু আপিল নামঞ্জুর করে ৫ তারিখ পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য দিন ধার্য্য করেছেন। আসাসিকে ধার্য্য তারিখের ৭ দিনের মধ্যে দিনাজপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বরাবরে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মোতাবেক আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে দুই পক্ষের শুনানিতে আমরা জামিনের বিরোধিতা করি। সেই ক্ষেত্রে আসামির জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আসামির বিরুদ্ধে দেশে ১৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়াও বিদেশের ওমানের মাসকোটে সিটি ব্যাংকের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে বলে আদালতে জানিয়েছে তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এদিকে দিনাজপুর আদালত পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত মিল্টনের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা বিচারাধীন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, চাকরি দেওয়ার নাম করে, বালু মহাল ইজারাসহ বিভিন্ন মানুষ প্রতারণার মামলা দায়ের করেছেন। প্রতারণার পাশাপাশি মিল্টন আয় বহির্ভূতভাবে অবৈধভাবে ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৫ টাকা অর্জন করে বিদেশে পাচারের চেষ্টা করেছেন। এ মামলার স্থায়ী জামিনের জন্য আসলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কোর্ট পুলিশ যথাযথ যুক্তির মাধ্যমে স্থায়ী জামিনের বিরোধীতা করলে বিচারক এজাহার পর্যালোচনাক্রমে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর আলোচিত যুবলীগ নেতা খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টনের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করেন দিনাজপুর সিআইডির উপ-পুলিশ পরিদর্শক রোকনুজ্জামান (মামলা নং-৩৮)। মামলায় মানি লন্ডারিংকৃত টাকার পরিমাণ ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৫ টাকা বলা হয়।
অভিযুক্ত খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টন দিনাজপুর জেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক। তিনি খানসামা উপজেলার পূর্ববাসুলী গ্রামের হাবিবুল্লাহ আজাদের ছেলে। তার বাবা হাবিবুল্লহ আজাদ একজন তালিকাভুক্ত যুদ্ধাপরাধী। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২১ জুলাই খানসামা উপজেলার রাজাকারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকায় ৯ নম্বরে তার নাম রয়েছে।
মানি লন্ডারিং ছাড়াও মিল্টনের বিরুদ্ধে বালুমহল ইজারা নিয়ে দেওয়ার নাম করে অর্থ আদায়, সরকারি কর্মচারীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সরকারি কাজে বাধা এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীদের ভয়-ভীতি ও হুমকিসহ বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। এর আগে গত ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর তাকে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২১
আরএ