নওগাঁ: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রথমবারের মতো একজন নারী চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ঘিরে বেশ আলোচনা চলছে। একটি এডিট করা ছবিই সেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মনোনয়ন না পেয়ে এই ষড়যন্ত্রে সরাসরি মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা এরশাদুল হক টুলু।
এমন ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পঞ্চম ধাপে আগামী ০৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে সান্তাহার ইউপি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নারী উদ্যোক্তা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য নাহিদ সুলতানা তৃপ্তিকে (নৌকা) মনোনয়ন দেওয়া হয়।
এদিকে, মনোনয়ন না পাওয়ায় তার বিরুদ্ধাচারণ শুরু করেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা এরশাদুল হক টুলু। গত ০২ ডিসেম্বর মনোনয়ন ঘোষণার পর তিনি এলাকায় ফিরে একটি এডিট করা ছবি পুঁজি করে তার বিরুদ্ধাচারণ শুরু করেন। প্রথমে ওই ছবিতে একটি ক্যাপশন দিয়ে ‘০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সালে রাজাকার আব্দুল মোমিন তালুকদারের কাছে ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগদান করেন তৃপ্তি। ’ এরপর সেই ছবি স্থানীয় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের হাতে পৌঁছে দেন। পরে সেই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। শুধু তাই নয়, তৃপ্তি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এমন অভিযোগ এনে গত সোমবার (০৬ ডিসেম্বর) দুপুরে দলীয় মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সান্তাহার ডাকবাংলোতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। পরের দিন তিনি স্থানীয় কিছু নারী-পুরুষকে দিয়ে একটি মানববন্ধনও করান। আর এসব কারণে তৃপ্তির নামে তার ষড়যন্ত্রের বহি:প্রকাশ ঘটে।
এ ব্যাপারে এরশাদুল হক টুলু বাংলানিউজকে বলেন, তৃপ্তি আগে কখনও আওয়ামী লীগ করেননি। তিনি সাবেক বিএনপির দলীয় সংসদ আব্দুল মোমিন তালুকদার খোকার কাছে গিয়ে ফুলের তোড়া দিয়ে যোগদান করেন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগে ভিড়েছেন।
ছবির বিষয়ে তিনি বলেন, ফেসবুকে ছবিটি পেয়েছি।
এ বিষয়ে তৃপ্তি বাংলানিউজকে বলেন, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ অন্য নেতারা সান্তাহার পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার প্রচারণাকালে আমার অফিসে এলে, তাদের ফুলের তোরা দিয়ে শুভেচ্ছা জানাই। আর সেই ছবিটি ফেসবুক থেকে নিয়ে তারা এডিট করে আমাকে বিএনপি বানানোর চেষ্টা চালিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। অথচ আমি দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামী লীগ করে আসছি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নিসরুল হামিদ ফুতু বাংলানিউজকে বলেন, তৃপ্তি একজন যোগ্য প্রার্থী। এ কারণে আমরা তাকে সমর্থন করি। সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে তিনি জয়লাভ করবে ইনশাআল্লাহ। তাছাড়া তৃপ্তির নামে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে, সে সবের কোনো সত্যতা নেই। কেউ নৌকার বিরুদ্ধে গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই কথা বললেন সান্তাহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জামিল হোসেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সান্তাহার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মন্টু বলেন, তৃপ্তি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য। প্রধানমন্ত্রী তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। নৌকার জয় লাভের জন্য আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা উচিত। অথচ সেখানে নৌকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২১
এসআরএস