ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

নির্দলীয় সরকারের অধীনেই স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব: রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২২
নির্দলীয় সরকারের অধীনেই স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব: রিজভী

ঢাকা: একমাত্র নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই স্বচ্ছ-অবাধ নির্বাচন সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

মঙ্গলবার (১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নবগঠিত কমিটির নেতাদের সঙ্গে নিয়ে রুহুল কবির রিজভী জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা ও ফাতেহা পাঠ করেন।

আলোচনা করলে অনেক কিছু সমাধান হতে পারে নতুন নির্বাচন কমিশনারের এ ধরনের বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, এ ধরনের কথা আগের নির্বাচন কমিশনারও বলেছিলেন। সেই আলোচনায় বিএনপি গেছে। তারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, এমনকি তারা আশ্বাস দিয়েছিলেন যে ইভিএমের ব্যাপারে জনগণ, রাজনৈতিক দলগুলোর সন্দেহ আছে। হুদা সাহেব বলেছিলেন, অধিকাংশ দল না চাইলে ইভিএমে ভোট হবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কথায় সেই হুদা সাহেব ইভিএমও রেখেছেন এবং দিনের ভোট রাতে করেছেন। সুতরাং তার (নতুন সিইসির) কথার কোনো গ্যারান্টি নেই। কারণ তিনিতো পুরস্কৃত হয়েছেন। তিনি সরকারের কাছ থেকে এত পেয়েছেন তাতে জনগণ বিশ্বাস করে না যে তিনি একটি অবাধ নির্বাচন করবেন। কারণ তার মাথার ওপরেতো শেখ হাসিনা আছেন। শেখ হাসিনার চিন্তা, চেতনা, রাজনৈতিক দর্শনে বহুদলীয় গণতন্ত্র নেই। সুতরাং তার অধীনে তিনি (সিইসি) কী নির্বাচন করবেন? তিনিতো নির্বাচন করতে পারবেন না। অর্থাৎ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই একমাত্র নির্বাচন স্বচ্ছ-অবাধ হবে। এটা বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বিশ্বাস করে।  

রিজভী বলেন, আমরা একটা কঠিন দুর্দিন অতিক্রম করছি। আজকে মানুষের পেটে খাবার নেই। চারিদিকে হাহাকার। সরকার শুধু উন্নয়নের গালভরা বুলি আওরায়। অথচ মানুষ খাবার, চিকিৎসার অভাবে সন্তান বিক্রি করছে। খাবারের অভাবে একজন ছাত্র আমি দুবেলা খেতে চাই, ছাত্র পড়ানোর বিনিময়ে।

তিনি অভিযোগ করেন, আজকে তথাকথিত উন্নয়নের নামে এ সরকারের লোকেরা লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। ক্ষমতাসীন দলের লোকদের টাকার পাহাড় হয়েছে। তারা বিভিন্ন দেশে বাড়ি করেছে, অট্টালিকা করেছে। লন্ডন, কানাডা, মালয়েশিয়া, দুবাইতে বাড়ি করেছে। এগুলো বানানো কথা নয়, দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে এসব খবর এসেছে। অর্থাৎ যে টাকা বাংলাদেশের মানুষের আর্থিক উন্নয়নে কাজ হতো সেই টাকা তারা নিজেরা আত্মসাৎ করেছে।

রিজভী বলেন, আজকে সবার বক্তব্য উপেক্ষা করে তারা জয় বাংলায় লালিতদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন করেছে। গত সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করলে কেউ ভোট কাটতে পারবে না। আপনার আগের কমিশন হুদা সাহেবওতো তাই বলেছেন। তারপর কী নির্লজ্জভাবে সরকারের প্রতিটি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছেন, নির্লজ্জভাবে দিনের ভোট রাতে কেড়ে নিয়ে গেছেন। অর্থাৎ সব গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কবর দেওয়া হয়েছে। সুতরাং দাবি একটাই, নির্বাচন কমিশন, সার্চ কমিটি সম্পূর্ণরূপে একটা প্রহসন। এরা সবাই প্রধানমন্ত্রীর চেতনায় লালিত। তারা আগে প্রধানমন্ত্রীর চাকরি করেছে, প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রমোশন দিয়েছে, তারা প্রধানমন্ত্রীর বাইরে যাবেন এ ধরনের দৃষ্টান্ত তাদের অতীতের কর্মকাণ্ড থেকে পাইনি। তাই অবাধ নির্বাচনের একমাত্র গ্যারান্টি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার। সেই নির্বাচনে যেই আসুক না কেন, তারাই সরকার গঠন করবে। এ দাবিতে আজকে সারাদেশের মানুষ রাজপথে বেরিয়ে আসবে।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাসাস আহ্বায়ক হেলাল খান ও সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, জাসাস মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মো. শরীফুল ইসলাম স্বপন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মালেক মুন্সি, সদস্য সচিব মো. আনোয়ার হোসেন আনু, মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম স্বপন, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক শওকত আজিজ, সদস্য সচিব শফিকুল হাসান রতন প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২২
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।