ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী অজান্তেই চা খাওয়ার কথা বলেছেন: গয়েশ্বর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
প্রধানমন্ত্রী অজান্তেই চা খাওয়ার কথা বলেছেন: গয়েশ্বর

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী অজান্তেই চা খাওয়ার কথা বলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।  

তিনি বলেন, মিডনাইট সরকারের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার বাড়ি ঘেরাও করতে গেলে চা দিয়ে আমন্ত্রণ করবেন।

আপনার বাড়ি ঘেরাও করতে হলে যত লোক যাবে, সেই লোকের চা খাওয়ানোর মতো পানি কি মজুদ আছে? নাই। আপনার চায়ের দাওয়াতে হয়তো যাবে না; যদি দেশের জনগণ গণভবন ঘেরাও করতে যায়, জিনিসপত্র গুছিয়ে গাড়িতে তুলে দিয়ে আপনাকে বিদায় জানাতে যেতে পারে। হয়তো আপনি মনের অজান্তে চা খাওয়ার কথাটা বলেছেন।

বুধবার (২৭ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ কথা বলেন।  

স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে সংগঠনের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার,  সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ইয়াছিন আলী প্রমুখ।  

গয়েশ্বর রায় বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়াকে টুস করে পানিতে ফেলে দেওয়া এটা একান্তই হিউমার। অর্থাৎ শেখ হাসিনা ঠাট্টাও জানেন। ঠাট্টা খালেদা জিয়ার সঙ্গে করেন, কিন্তু জাতির সামনে যে ঠাট্টা ১৪ বছর যাবৎ করছেন, এটার হিসাব জনগণ একদিন নিতেই পারে।  

প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিদ্যুৎ খাতের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের গল্প ছয় মাস আগেও শুনেছি। প্রয়োজন আমাদের ১১ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু এখন ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎও নেই। এখন বিদ্যুৎ যায় না; মাঝে মাঝে দেখা করতে আসে। বিদ্যুৎ বলে আমরা এখনও জীবিত আছি, মরিনি। এই হলো বিদ্যুতের অবস্থা। হারিকেন তাও বুঝি খুঁজে পাওয়া যায় না। এই সরকারের উন্নতি, ঘরে ঘরে মোমবাতি।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কিছুদিন আগে বলেছিলাম এই সরকার জনগণের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে। বিদ্যুৎ নাই। কিন্তু আমাদের টাকা গেল কই? বিদ্যুতের জন্য যত টাকা ঋণ করেছেন, সেই টাকা তো আমাকে অর্থাৎ জনগণকে পরিশোধ করতে হবে। কেন আমরা এই ঋণ পরিশোধ করব। দ্রুত চাহিদা মেটানোর জন্য কাকে কাকে কুইক রেন্টাল প্রজেক্ট দিয়েছেন তাদের নাম মনে হয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ফাইলবন্দী আছে। এই কোম্পানিগুলো কী পরিমান টাকা ঋণ নিয়েছে, কী পরিমান জ্বালানি  দেওয়া হয়েছে এবং কী পরিমান বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে, যে প্রতিবেদন সরকারকে দিয়েছে তার হিসাবটা দেন। যে বিদ্যুৎ তারা দিয়েছে তার মূল্য কত, তাদের কাছে পাওনা কত? এই বিদ্যুতের নামে বিদ্রুপ করে জনগণের টাকা লুটপাট করেছেন, তার পরিমান দশ লাখ কোটি টাকার বেশি বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এই টাকা তো নতুন করে ছাপিয়ে বিদেশে পাচার করা হয়নি। কোনো না কোনো প্রজেক্ট থেকে হাতিয়ে নিয়ে এই টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এই টাকার হিসাব জনগণের নেওয়ার অধিকার রয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, শুনতে পাচ্ছি বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য সপ্তাহে তিন দিন স্কুল কলেজ বন্ধ রাখবে, জেনারেটর চলতে পারবে না, ডিজেল খুচরা বাজারে দেবেন না- তাহলে মানুষ কী করে বাঁচবে? শিল্প কলকারখানা কীভাবে চলবে? কৃষি, পোশাকখাতসহ সামগ্রীক উৎপাদনে কী পরিমান ঘাটতি হবে? সেই ঘাটতি পূরণ করে বিদেশি বাজার ধরে রাখা কঠিন হবে। তাহলে দেশ কীভাবে চলবে?

গয়েশ্বর বলেন, মূদ্রা পাচারের মধ্য দিয়ে ব্যাংক শেষ। রিজার্ভের কথা শোনা যায়- অবস্থা এমন হয়তো দুই তিন মাস পরে দেশের আমদানিকারকরা এলসি খুলতে পারবে না। ডলারের দাম উর্ধ্বগতি; খোলাবাজার থেকে যদি ডলার কিনে পণ্য আমদানি করতে হয় তাহলেও ২০ শতাংশ এ কারণেই বেড়ে যাবে।  

বিএনপির এই নেতা বলেন, অর্থমন্ত্রী একজন আদমবেপারী। তিনি বলেন, আইএমএফের কাছে কোনো টাকা চাই না। আবার ভেতরে ভেতরে আইএমএফের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। আবার আইএমএফ কোন প্রজেক্টে কত টাকা খরচ করেছে তার হিসাব চেয়েছে। যে ঋণ দেবে, তারা কী হিসাব নেবে না?  

নির্বাচন কমিশনের প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই যে নির্বাচন কমিশন রয়েছে। সকালে এক কথা বিকালে এক কথা বলে। এত কথা বলেন কেন? কে নির্বাচনে আসবে, কে নির্বাচনে আসবে না এই কথা বলার আপনি কে? হু আর ইউ? রাজনৈতিক মীমাংসা হবে রাজনৈতিকভাবে। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন। সরকার চিন্তা করবে কিভাবে জনগণের সাথে তারা মীমাংসা করবে, কীভাবে জনগণের ভোটাধিকার ফেরত দেবে, এটা। ঠুটো জগন্নাথ নির্বাচন কমিশনের না।  

দলের অবস্থান তুলে ধরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আমাদের একটাই স্লোগান- হটাও হাসিনা বাঁচাও দেশ, টেকব্যাক বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
এমএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।