ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০২২
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ও অবিলম্বে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন দল ও সংগঠন।

শনিবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসব কর্মসূচি পালিত হয়।

বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনকারী দল এবং সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি, ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি, কৃষকের বাতিঘর সহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন।

বিক্ষোভ সমাবেশে বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা বলেন, দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা দেশের সাধারণ মানুষের চরম এক দুঃসময়ে। এরমধ্যে জ্বালানি তেলের দাম একলাফে প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছির বাড়ানো জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাবে। ইতোমধ্যে পরিবহন সেক্টরে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হবে, ফলে আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়বে। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেক ছোট ছোট শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে একদিকে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে জাতীয় অর্থনীতি ওপর চাপ আরও বাড়বে। অন্যদিকে বেকারত্ব সমস্যা আরও প্রকট হবে।

নেতারা বলেন, সরকার দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যেই নিজেদের লাগামহীন দুর্নীতি ও লুটপাট অব্যাহত রাখার জন্যই অস্বাভাবিকভাবে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি করেছে। সরকার অতীতে দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণের কথা বলে কুইক রেন্টালের নামে ৭০ হাজার কোটি টাকা গচ্ছা দিলেও দেশে এখন লোডশেডিং-এর মহোৎসব চলছে।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বিক্রি করা মোট জ্বালানি তেলের ৬৫ শতাংশ ব্যবহার করে পরিবহন খাত। প্রায় ১৬ শতাংশ ব্যবহৃত হয় কৃষি খাতে। শিল্প খাতে ৭ ও বিদ্যুৎ খাতে ১০ শতাংশ তেল ব্যবহৃত হয়। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে নতুন করে বাস, লঞ্চ ও ট্রাকভাড়া বাড়বে। প্রাইভেট কারের মালিক ও মোটরসাইকেলের চালকদের খরচও বাড়বে। ব্যয় বাড়বে কৃষি ও বিদ্যুৎ খাতে, যা বাড়িয়ে দেবে পণ্যের দাম। বাজারে এখন চাল, ডাল, তেল, চিনি, সাবান, টুথপেস্টসহ প্রায় সব পণ্যের দাম বেশি। গত মে মাসের পর ডলারের দাম ৮৬ থেকে ১০৮ টাকায় উঠে যাওয়ায় আমদানি করা সব পণ্যের দাম বাড়ছে। এমন অবস্থায় জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি মানুষকে বড় সংকটে ফেলবে।

সার ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে দিশেহারা কৃষক। অথচ কৃষিতে অপার সম্ভাবনা রয়েছে, যা কাজে লাগাতে পারলে জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষির অবদান আরও বৃদ্ধি পাবে, কর্মসংস্থান বাড়বে এবং জনগণের ক্রয়ক্ষমতায় শুভ প্রভাব পড়বে। এসব কারণেই কৃষিকে অগ্রাধিকারে রাখতে হবে। কৃষি উৎপাদন আরও বাড়তে হবে। উৎপাদিত পণ্যের বহুমুখীকরণ, পণ্য সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পের প্রসার ঘটাতে সরকারের পক্ষ থেকে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য দ্রুত প্রত্যাহার করার দাবি জানান তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।