ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

রাজপথ দখলের আহ্বান জানালেন মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২২
রাজপথ দখলের আহ্বান জানালেন মির্জা ফখরুল ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: দেশের ১৮ কোটি মানুষকে বাঁচাতে তরুণ-যুব সমাজকে জেগে উঠে রাজপথ দখলের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

তারেক রহমানের নেতৃত্বে তরুণ সমাজ জেগে উঠেছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের জেগে উঠতে হবে। আবার নতুন করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করবো। লড়াই সংগ্রাম শুরু হয়েছে। এ লড়াই আমাদের বেঁচে থাকার লড়াই। এ লড়াই বাংলাদেশকে রক্ষা করবার লড়াই। শুধু বিএনপির নয়, তারেক রহমানের নয়, আমাদের নয় এ লড়াই বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে বাঁচাবার লড়াই। এ লড়াইয়ে আমাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। রাজপথ আমাদের দখল করতে হবে। রাজপথে লড়াই চালিয়েই আমরা এ ফ্যাসিস্ট, মাফিয়া সরকারকে সরিয়ে একটি জনগণের সরকার ও একটি জনগণের সমাজ তৈরি করবো।  

সরকারের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, হাসিনা সরকারকে পরিষ্কার করে বলতে চাই আর কাল বিলম্ব না করে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন। নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দিয়ে নতুন পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে।


 


মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের অনেকে বলেন আওয়ামী লীগ একটি ফোরটুয়েন্টি পার্টি। আমি তাদের সঙ্গে একমত হয়ে বলতে চাই আওয়ামী লীগ একটি প্রতারক দল। এ সরকার প্রতারণা করে মানুষের অধিকারগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা কী বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন আমি ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াব, ঘরে ঘরে চাকরি দেব, বিনা পয়সায় সার দেব। তাই না? এখন সারের দাম কত? ২২ টাকা। আজকে সেই সারের দাম আবার ৩৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। আর ঘরে ঘরে চাকরি… অনেক শিক্ষিত ছেলেদের কাজ নেই। শিক্ষিত ছেলেরা মোটরবাইক চালায়। আমাদের অনেক ছেলেরা আছে যারা বলে না, তারা এখন রিকশা চালায়, অটোরিকশা চালায়। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের অত্যাচারে এলাকায় থাকতে পারে না। ঢাকায় চলে এসেছে। এখানে এ কাজগুলো করে তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে।

এ সরকার কাদের চাকরি দেয় প্রশ্ন করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের রিকমেন্ড লাগবে সঙ্গে ১৫/২০ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হবে। এ হচ্ছে আওয়ামী লীগের কাজ। তারা বলেছিল দেশে গণতন্ত্র দেবে, বাক স্বাধীনতা দেবে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দেবে। সমস্ত কিছু তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। এখানে সাংবাদিক ভাইয়েরা আছেন, তারা জানেন যে তারা কতটুকু লিখতে পারেন। টেলিভিশনের ভাইয়েরা এখানে সকাল থেকে আছেন। কিন্তু তারা গিয়ে দেখবেন দুই থেকে তিন সেকেন্ড দেখাবে।  

এ সরকার বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু তাই না, বিচারপতি খায়রুল হককে দিয়ে তারা এ দেশের সংবিধানকে ধ্বংস করেছে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা যার মাধ্যমে আমরা একটা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন পেতাম। যে ব্যবস্থায় এ দেশের মানুষ তাদের ভোট দিতে পারতো। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চারটা নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেই ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা করেছে। সেদিন থেকেই তারা এ দেশের রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের মধ্য দিয়ে দেশে নতুন করে সংঘাত ও অস্থিতিশীলতা শুরু হলো।  

 

 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আফরোজা খান রিতা, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল মিলন প্রমুখ।  

হাজার হাজার নেতাকর্মীর মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি নেতা আজিজুল বারী হেলাল, জেড খান রিয়াজ উদ্দিন নসু, কামরুজ্জামান রতন, ইশরাক হোসেন, মীর সরাফত আলী সপু, সাইফুল আলম নীরব, আমিরুজ্জামান শিমুল, মীর নেওয়াজ আলী, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, ওলামা দলের মাওলানা নেছারুল হক, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, সাংবাদিক নেতা এম আবদুল্লাহ, নুরুল আমিন রোকন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২২
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।