ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

গুমের বিষয়ে জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত চান মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
গুমের বিষয়ে জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত চান মির্জা ফখরুল

ঢাকা: সুইডেন ভিত্তিক নিউজপোর্টাল নেত্রনিউজে প্রচারিত সংবাদের সূত্র ধরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমি দাবি করছি নেত্রনিউজে প্রকাশিত ‘আয়নাঘর’ সম্পর্কে জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা ও গণ আন্দোলনে নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনায় আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে তিনি এ দাবি করেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এই মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করে। ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন না করে একদিন পর তার সুস্থতার জন্য এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

নেত্রনিউজে প্রচারিত সংবাদের বিষয়টি তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সুইডেন থেকে একটি পত্রিকা (নিউজপোর্টাল) বের হয়। তার নাম নেত্রনিউজ। সেই নেত্রনিউজ এই অবৈধ সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা পরিচালিত ‘আয়নাঘর’ সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই আয়নাঘরে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আটক রাখা হয়েছে, তাদের সেখানে অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, নেত্রনিউজের এই সংবাদ প্রতিবেদন প্রচারের পরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গতকালই (সোমবার) স্টেটমেন্ট দিয়েছে। ভয়াবহ ভয়ঙ্কর মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র, এটা অবশ্যই জঘন্যতম একটা ঘটনা। তারা বাংলাদেশে বর্তমানে অবস্থানরত জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনারকে বলেছেন যে, আপনি এটার নিন্দা করেন এবং এ সম্পর্কে নিরপেক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত করেন।

তিনি বলেন, এটাকে হালকা করে দেখার কোনো কারণ নেই। আমাদের বহু ভাই চলে গেছেন, যাকে আমরা ফেরত পাইনি। আমাদের বহু নেতা চলে গেছেন, যাকে ফেরত পাইনি। আমাদের ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে এভাবে গুম করা হয়েছে, অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে। আমি আজকের এই মিলাদ মাহফিল থেকে দাবি করছি, জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে অত্যাচার নির্যাতন করে, ত্রাস সৃষ্টি করে, জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। আমরা এ কথাগুলো বহুবার বলেছি। আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দিয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রেখেছে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা। ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করেছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ভোলায় ছাত্রদল নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিদিন হত্যা করা হচ্ছে। এসব কথা আর গোপন নেই।

তিনি বলেন, আমরা জানি, এ সরকার সহজে যাবে না। তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। মানুষ তাদের সঙ্গে নেই। সেজন্যে আমরা সমস্ত রাজনৈতিক দল ও জনগণকে সংগঠিত করে এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের সরকার নিয়ে আসতে চাই। সেজন্য আমাদের প্রথম শর্ত গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়াকে অবশ্যই নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ৩৫ লাখ মানুষের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করে নতুন একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই কমিশনের মাধ্যমে একটা জনগণের সংসদ গঠন করতে হবে।

দোয়া ও মিলাদে আরও অংশ নেন, মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, শিমুল বিশ্বাস, সাইফুল আলম নীরব, মহানগর বিএনপি নেতা রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, ইশরাক হোসেন, যুবদল নেতা সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, শ্রমিক দলের সুমন ভূইয়া প্রমুখ।

দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।