ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

বরগুনায় জেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২২
বরগুনায় জেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

বরগুনা: বরগুনায় শোক দিবসে ছাত্রলীগের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে সড়ক অবরোধ করে জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল পালন করা হয়।

সমাবেশে বরগুনা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, জেলা ছাত্রলীগের কমিটির আগে কোনো কাউন্সিল করা হয়নি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ লাখ টাকার বিনিময়ে কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। এ কমিটিকে জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ কেউ সহায়তা করবে না। মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের কমিটিতে রাখা হয় নাই। এ কমিটি বাতিল করতে হবে। ‌নতুন পদ পাওয়া সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি। বর্তমান কমিটিকে আমরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম।

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এমপি তার বক্তব্যে বলেন, সোমবারের ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমাদের ছেলেদের কোনো দোষ ছিল না। তবু নির্বিচারে পেটানো হয়েছে তাদের। মহররম আলীর নেতৃত্বে পুলিশ এমন জঘন্য কাণ্ড ঘটিয়েছে। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চাই। এ ঘটনায় যারা আহত হয়েছে, তাদের চিকিৎসার সব ভার বহন করবে জেলা আওয়ামী লীগ।

এমপি শম্ভু আর বলেন, আজ পর্যন্ত ছাত্রলীগের যত কমিটি হয়েছে, এতো নোংরা নিম্নমানের কমিটি আগে হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ কমিটি বাতিলের দাবি জানাই।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বিদ্যুৎ বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের এমন কোনো্ বক্তব্য আমাদের নজরে আসেনি। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ একটি পরিবার। আমরা বিষয়টি দেখছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনা জেলার ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মানিত নেতাদের এমন কোনো বক্তব্য আমাদের চোখে আসেনি।

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল ও মহররম আলীকে সন্ত্রাসী উল্লেখ করে তার কুশপুত্তলিকায় আগুন দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা।

প্রসঙ্গত, সোমবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি এলাকায় পাল্টাপাল্টি ইট ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে ছাত্রলীগের দুই ধারার মধ্যে। এসময় পুলিশের একটি গাড়ির সামনের গ্লাসে ইটের আঘাতে ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এক গ্রুপকে ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়। আর অপর গ্রুপকে শিল্পকলা একাডেমি কমপ্লেক্সের ভেতরে পিটুনি দিয়ে নিবৃত করে।  

এ ঘটনার পর থেকে শহরজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার আলোচিত এএসপি মহররম আলীকে বরগুনার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে বরিশাল রেঞ্জে ডিআইজি কার্যালয়ে নিযুক্ত করা হয়েছে। এরপর রাতে ওই ঘটনায় আরও ৫ পুলিশ সদস্যকে বদলি করা হয়।

এর আগে দীর্ঘ আট বছর পর গত ১৭ জুলাই বরগুনা শহরের সিরাজ উদ্দীন টাউন হল মিলানায়তনে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ জুলাই রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেন।

এতে জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩৩ সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকেই সদ্য ঘোষিত এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বরগুনা শহরে পদবঞ্চিতরা প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২২
আরএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।