ঢাকা, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

‘নির্বাচন কমিশন সরকারের দালাল হিসেবে কাজ করছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২২
‘নির্বাচন কমিশন সরকারের দালাল হিসেবে কাজ করছে’

ঢাকা: ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ভোট চুরির নতুন কৌশল ও নির্বাচন কমিশন সরকারের দালাল হিসেবে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ইভিএমে ভোট নেওয়ার ঘোষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে, সরকার গায়ের জোরে ভিন্ন পদ্ধতিতে ভোট চুরি করে আবার ক্ষমতায় আসতে চায়।

দেশের জনগণ এটা দেখতে চায় না। নির্বাচন কমিশন সরকারের দালাল হিসেবে কাজ করছে।

শুক্রবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মোশাররফ। পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মোশাররফ বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমরা তাদের কোনো কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করিনি। আমরা জানি এই নির্বাচন কমিশন বর্তমান সরকারের আজ্ঞাবহ। তারা সরকারের দালাল হিসেবে কাজ করবে।

অতীতেও (২০১৪ ও ২০১৮ সাল) করেছে, এবারও করবে। সেজন্য আমরা নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া ও তাদের সংলাপে অংশগ্রহণ করিনি। যারা সংলাপে অংশগ্রহণ করেছিল তাদের মধ্যে বেশিরভাগ দল ইভিএমের বিরুদ্ধে কথা বলেছিল। কেননা, ইভিএম এমন একটা পদ্ধতি যেটা মানুষ তৈরি করে; মানুষই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সেজন্য পৃথিবীর বহু উন্নত দেশ ইভিএম বাতিল করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একবার বিনা ভোটে, একবার দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে। এবার ইভিএমের মাধ্যমে চুরি করার জন্য আরেকটি নতুন কৌশল নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে। এটা এদেশের জনগণ গ্রহণ করবে না, কোনো রাজনৈতিক দল গ্রহণ করে না। আমরা বলেছি এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাবো না। এ দেশের মানুষ যাবে না। ইভিএম পদ্ধতি যদি চালু করা হয় তাহলেও আমরা এটাকে গ্রহণ করবো না।

বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশ লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে। এখানে যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে আছেন তারা ও শহীদের সাহসী ভূমিকা; ত্যাগের ফলে দেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই মুক্তিযোদ্ধাদের মূল আকাঙ্ক্ষা দেশের মানুষের ভোটের অধিকার, সেটা নাই। যারা সরকারে তারা একবার বিনা ভোটে আরেকবার রাতের ভোটে ক্ষমতা দখল করে আছে। তাই তারা স্বৈরাচারী। তারা জনগণের সরকার নয়। সেজন্য এদেশে গণতন্ত্র আজকে ভূলুণ্ঠিত। সকল প্রতিষ্ঠানে স্বৈরাচারী-অগণতান্ত্রিক কাজকর্ম চলছে। নির্যাতন নিপীড়ন চলছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ একটা করুণ অবস্থার মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে মন্তব্য করে মোশাররফ আরও বলেন, দেশে কেন অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে? কেন জ্বালানি তেলের দাম, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে। কারণ, এ সরকারের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও গোষ্ঠীতন্ত্র। দেশের জনগণের প্রতি এই সরকারের কোনো ভ্রূক্ষেপ নাই। আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছরে যদি এই অবস্থা দেখি যে আমাদের ডলার নাই, রিজার্ভ কমে গেছে! কোনো ক্ষেত্রে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নাই। জনগণের জীবন অতিষ্ঠ। সেজন্য আমরা দাবি করছি অনতিবিলম্বে এই সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের মাধ্যমে প্রকৃত সুষ্ঠু নির্বাচন। যার মাধ্যমে দেশের জনগণ জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।

জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল (অব.) জয়নাল আবেদীন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবুল হোসেন, প্রচার সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিলন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২২
এমএইচ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।