ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ মূল্যহীন: চুন্নু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২
নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ মূল্যহীন: চুন্নু

ঢাকা: জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ মূল্যহীন। যে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নেই তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে বলে মনে হয় না।

আইনে আছে, নির্বাচনের সময় দেশের নির্বাহী বিভাগ নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করবে। কিন্তু নির্বাহী বিভাগ যদি নির্বাচন কমিশনের কথা না শোনে তাহলে কী হবে তা বলা নেই। তাই নির্বাচন কমিশনের কথা নির্বাহী বিভাগ মানতে বাধ্য নয়।  

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় ভূমিহীন আন্দোলন সুরক্ষা পার্টি নামে জাতীয় পার্টির একটি সহযোগী সংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
 
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমরা চেয়েছিলাম নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দিয়ে আইন করা হোক। কেউ নির্দেশ অমান্য করলে যেন কমিশন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনই ক্ষমতা চায় না।  

তিনি বলেন, শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশন স্ববিরোধী কথা বলছে। তারা বলছে, কাউকে হাতে-পায়ে ধরে নির্বাচনে আনা নাকি তাদের কাজ নয়। তাহলে এতগুলো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এত আলোচনা করলেন কেন? আবার তারা বলেছেন, সবাই চাইলে নাকি ব্যালটে নির্বাচন হবে। শাসক দল তো ইভিএম চায়, তাহলে কী বেশিরভাগ দলের মতামত উপেক্ষা করে ইভিএম-এ নির্বাচন করবে কমিশন?  

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ১৫০ আসনে ইভিএম-এ নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন আরও দুই লাখ ইভিএম কিনতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া ইভিএম সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দেশের ১০টি অঞ্চলে ১০টি ওয়্যার হাউস নির্মাণ করবে তারা। এজন্য প্রায় নয় হাজার কোটি টাকার একটি বাজেটও তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন। দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত অগ্রহণযোগ্য।  

তিনি বলেন, ইভিএম হচ্ছে ভোটের রেজাল্ট কারচুপির সিস্টেম। ১৫০ আসনে ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত উচ্চাভিলাষী। দেশের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় ইভিএম এর বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। শুধু সরকার ও তাদের কয়েকটি মিত্র রাজনৈতিক দল ইভিএম-এ নির্বাচন চেয়েছে। এমন বাস্তবতায় নির্বাচন কমিশন বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করে ইভিএম-এ নির্বাচন করতে চাচ্ছে। এ মেশিনে ভোট কারচুপি করলে, তার কোনো প্রমাণ থাকে না। আবার প্রমাণের অভাবে সংক্ষুব্ধ হয়ে কেউ আইনের সহায়তা নিতে পারবে না। আমরা এখনো ইভিএম-এ নির্বাচন চাই না।  

তিনি আরও বলেন, দেশ মারাত্মক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ৫১ শতাংশের বেশি জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। মানুষ বাজারে যেতে ভয় পাচ্ছে। অভাব-অনটনে শিশুখাদ্য কিনতে পারছে না। অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা হচ্ছে না অর্থাভাবে। ডলারের দাম বাড়ার কারণে জ্বালানি তেল কিনতে পারছে না সরকার। এ কারণে লোডশেডিংয়ে অসহনীয় অবস্থা। মানুষ জীবন চালাতে হিমশিম অবস্থা।

লতিফ সরকারের সভাপতিত্বে ও কাজী মামুন-এর পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আবুল খায়ের, অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আজগর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এম এ রাজ্জাক খান, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, যুগ্ম সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আজহারুল ইসলাম সরকার, মাহমুদ আলম, সমরেশ মণ্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় সদস্য মখলেছুর রহমান বস্তু, ছাত্র সমাজ-এর সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, মহিউদ্দিন ফরাজী, অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম, ভূমিহীন সংগঠনের নেতা এস এম আমিনুল হক সেলিম, শফিকুল ইসলাম লিপন, মো. মুজিবুর রহমান, মো. তরিকুল ইসলাম তপু, মো. দেলোয়ার হোসেন, মি. উচান মং রাখাইন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২
এসএমএকে/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।