দর্শনার্থীদের জন্য সীমিত পরিসরে উন্মুক্ত হচ্ছে বঙ্গভবন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ১৮:১২, জানুয়ারি ২৪, ২০২৩

ঢাকা: বঙ্গভবন তোশাখানা ও এয়ার রেইড শেল্টার উদ্বোধন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এই তোশাখানা জাদুঘর পরিদর্শন করতে সীমিত পরিসরে বঙ্গভবনের ভেতরে প্রবেশের সুযোগ পাবেন সাধারণ দর্শনার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে বঙ্গভবন তোশাখানা ও এয়ার রেইড শেল্টার উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি। এ সময় রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী রাশিদা খানম, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ও বাসভবন ‘বঙ্গভবন’। জাতির মর্যাদা ও গৌরবের প্রতীক বঙ্গভবনের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালি জাতির ইতিহাস ও ঐতিহ্য। নিরাপত্তার কারণে এতদিন জনসাধারণের বঙ্গভবনে প্রবেশের সুযোগ ছিল না। তবে বিদায় বেলায় বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের উদ্যোগের ফলে সীমিত পরিসরে সাধারণ দর্শনার্থীরা বঙ্গভবনে প্রবেশের সুযোগ পাবেন।


বঙ্গভবনে সংস্কারকৃত এয়ার রেইড শেল্টার উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

উদ্বোধনের পর এটি পরিদর্শনে দর্শনার্থীদের বঙ্গভবনে প্রবেশের সুযোগ থাকার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গভবনের ভেতরে মানুষ সাধারণত আসতে পারে না। এটার ভেতরে কী আছে, না আছে কিছুই তো জানে না, অন্ধকারে আছে। সুতরাং কিছুটা আলো যাতে পায় মানুষ বঙ্গভবন সম্পর্কে।

তিনি বলেন, সীমিত আকারে দেখানোর ব্যবস্থা আছে। আর তাছাড়া আমাদের আইসিটি প্রতিমন্ত্রী আছেন, তিনি একটা ব্যবস্থা করবেন যাতে দেশে এবং বিদেশে বঙ্গভবনে না এসেও দেখতে পারে ইউটিউবের মাধ্যমে, ভার্চ্যুয়ালি আরকি সেটার ব্যবস্থাও করা হবে।

বঙ্গভবনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, শতাব্দীকালের বর্ণাঢ্য ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন বঙ্গভবন। তোশাখানা জাদুঘর বঙ্গভবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বঙ্গভবনের সমৃদ্ধ ইতিহাস সংরক্ষণ এবং তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে বঙ্গভবন তোশাখানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, তোশাখানায় প্রদর্শিত উপহার সামগ্রী ও বিভিন্ন সময়ের স্থিরচিত্র ভবনটির পরতে পরতে মিশে থাকা ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে থাকবে। দেশে-বিদেশের দর্শনার্থীরা ভবনটি পরিদর্শনকালে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

১৯০৫ থেকে ১৯১১ সালে তৎকালীন পূর্ববঙ্গ-আসাম প্রদেশের শাসনকর্তার (লেফটেন্যান্ট গভর্নমেন্ট) কার্যালয় ও বাসভবন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ঐতিহাসিক দিলখুশা গভর্নমেন্ট হাউস।

১৯৭১ সালের ২৩ ডিসেম্বর স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির অফিস ও বাসভবন হিসেবে যাত্রা শুরু করে এবং এ সময় নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘বঙ্গভবন’।

গত এক বছর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বহু বছরের জরাজীর্ণ তোশাখানা জাদুঘর এবং এয়ার রেইড শেল্টার বিশেষ আধুনিক নান্দনিকতায় গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন।

বিভিন্ন দেশ সফরকালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী যেসব উপহারসামগ্রী পান সেগুলো এই তোশাখানা জাদুঘরে সংরক্ষিত থাকে। ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় উপহারগুলো সংরক্ষণের জন্য তোশাখানা ভবন নির্মাণ করা হয়। এরপর দীর্ঘ সময় ভবনটির আধুনিকায়ন হয়নি। জরাজীর্ণ ভবনটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। এখানে দর্শনার্থীরা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পাওয়া দুর্লভ উপহারসামগ্রী দেখতে পারবেন।

বিমান হামলা থেকে রাষ্ট্রপতিকে রক্ষার জন্য ১৯৬৫ সালে নির্মাণ করা হয় এয়ার রেইড শেল্টার। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত এ শেল্টার ভবনটিকে নতুন করে সাজানো হয়েছে। এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটিও দর্শনার্থীরা ঘুরে দেখতে পারবেন।

বঙ্গভবনের ভেতরে দানা দিঘি, সিংহপুকুর ও পদ্মপুকুর নামে তিনটি পুকুর আছে। এ তিনটি পুকুরও সংস্কার করা হয়েছে। এসব পুকুরও দেখার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা। এছাড়া বঙ্গভবনের ভেতরে একটি পুরোনো ঐতিহাসিক মার্সেডিজ গাড়ির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নবনির্মিত স্থাপনাগুলো বঙ্গভবনের ভেতরে হলেও রাষ্ট্রপতির অফিস ও বাসভবন থেকে কিছুটা দূরে। মূলত এই অংশটিতে দর্শনার্থীরা প্রবেশের সুযোগ পাবেন। নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে রাষ্ট্রপতির অফিস ও বাসভবন দেখার সুযোগ থাকছে না দর্শনার্থীদের।

আগামী ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দ্বিতীয় মেয়াদের পাঁচ বছর পূর্ণ হচ্ছে। সংবিধান অনুযায়ী এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুবার রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন। এরই মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৩/আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা
এমইউএম/এমজেএফ


সম্পাদক : লুৎফর রহমান হিমেল

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান