
ঢাকা: জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। ১২ জুন জাতিসংঘের বাজেট ও প্রশাসন সংক্রান্ত পঞ্চম কমিটিতে শান্তিরক্ষীদের বেতন ৯ মাসের জন্য ৬ কোটি মার্কিন ডলার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
বাড়ানো ৬ কোটি ডলার জাতিসংঘ মিশনে কর্মরত শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশসমূহের মধ্যে জাতিসংঘে কর্মরত শান্তিরক্ষীদের সংখ্যার অনুপাতে ভাগ করে দেওয়া হবে।
এটা হবে তাদের জন্য বর্তমানে নির্ধারিত মাসিক ১০২৮ ইউএস ডলারের অতিরিক্ত। চলমান বিশ্বে বিরাজমান অর্থনৈতিক মন্দার কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মুখে শান্তিরক্ষা সংক্রান্ত মোট বাজেট ৭-৮ বিলিয়ন থেকে কমিয়ে ৭.৩১ বিলিয়ন ইউএস ডলার করা হলেও সৈন্য প্রেরণকারী দেশসমূহের চাপের মুখে সর্বসম্মতিক্রমে শান্তিরক্ষীদের বেতন বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমি পালন করে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতিসংঘে কর্মরত শান্তিরক্ষীদের লজিস্টিকসসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ হলো বাজেট ও প্রশাসন সংক্রান্ত পঞ্চম কমিটি। এ কমিটিতে অন্যান্য সৈন্য প্রেরণকারী দেশসমূহের সহযোগিতায় এটা হলো জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের তৃতীয় বারের মতো উল্লেখযোগ্য সাফল্য। এর আগে এ মিশনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১০ সালে শান্তিরক্ষীদের মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার থেকে ৭০ হাজার মার্কিন ডলার এ উন্নীত করা হয় এবং ২০১১ সালে শান্তিরক্ষীদের বেতন ২০১১/১২ অর্থবছরের জন্য এককালীন ৮ কোটি ৫ লাখ ইউএস ডলার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া শান্তিরক্ষা সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণী পর্যায় বাংলাদেশিসহ সকল শান্তিরক্ষীদের আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি বিবেচনার জন্য Department of Peacekeeping Operation (DPKO) I Department of Field Support (DFS) এ চাকরির ক্ষেত্রে সৈন্য প্রেরণকারীদেশসমূহের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ বিষয়ে আগামী বাজেট সেশনে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে এবং এর সংখ্যা প্রায় সাড়ে দশ হাজার। গত তিন বছরে বাংলাদেশ সর্বমোট ৪২,২৪৯ জন শান্তিরক্ষী পাঠায় এবং এদের মধ্যে ৩৪,৪৫৪ জন সেনাবাহিনীর এবং ৭,৪২৯ জন পুলিশ সদস্য। এ সংখ্যা সর্বকালের শ্রেষ্ঠ। কারণ ২০০১ থেকে ২০০৪ সালে এদের সর্বমোট সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১৮,২২৫ জন সেনাবাহিনী এবং ৪৯১ জন পুলিশ সদস্য। জাতিসংঘের প্রতি ১০ জন শান্তিরক্ষীর মধ্যে একজন বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশ মিশন এ সব অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিশ্ব মন্দার কারণে ধনীক দেশগুলো শান্তিরক্ষা বাজেট কমানোর জোর তাগিদ দিচ্ছে এবং তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী তিন বছরে পর্যায়ক্রমে প্রায় ১২ হাজার শান্তিরক্ষী কমানো হবে। বাংলাদেশের অবস্থান যাতে বিঘ্নিত না হয়, তার জন্যে মঙ্গলবার বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষার ইউ-এস-জি জনাব হার্ভে লাজারাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১২
সম্পাদনা: আহমেদ জুয়েল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর