
ঢাকা: উৎসব মুখর পরিবেশে চলছে জাতীয় যুব সংহতির কাউন্সিল আয়োজন। তবে শেষ মুহূর্তে এসে জাতীয় পার্টির মহাসচিবের পক্ষপাতমূলক আচরণে ক্ষোভে ফুসছে বর্তমান আহ্বায়কসহ বিশাল একটি অংশ।
যে কারণে উৎসব ছাপিয়ে সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে শনিবারের কাউন্সিল। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে শনিবার সকাল ১০টায় দ্বি-বার্ষিক এ কাউন্সিলের উদ্বোধন করবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
সকাল ১০টায় শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে এরপর জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কাউন্সিলের উদ্বোধন করা হবে।
শুক্রবার রাত ১০টায় গিয়ে দেখা গেছে নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর হয়ে আছে কেন্দ্রীয় কার্যালয়। দলে দলে বিভক্ত হয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
কিন্তু, কাউন্সিলকে ঘিরে দু’টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন যুব সংহতির নেতাকর্মীরা। বর্তমান আহ্বায়ক আলমগীর সিকদার লোটন ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া দু’জনেই সভাপতি পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার করার ঘোষণা দিয়েছেন।
আলমগীর সিকদার লোটন প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে লড়ছেন সদ্য বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি আহাদ চৌধুরী শাহিন। অন্যদিকে রেজাউল ইসলাম ভূইয়ার প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন বেলাল হোসেন।
সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিলো। হঠাৎই সেই সময়ে উৎসবে ছেদ ঘটান জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার— এমন অভিযোগ করেছেন আলমগীর সিকদার লোটন।
লোটন বাংলানিউজকে জানান, পার্টির মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূইয়ার প্যানেলের জন্য বিভিন্ন জেলা কমিটিতে ফোন দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এমনকি রেজাউল ইসলামকে এরশাদের প্রার্থী বলেও ঘোষণা দিয়েছেন।
লোটন দাবি করেন, জাপা মহাসচিব নোয়াখালী, নড়াইল, খুলনা ও নরসিংদী জেলায় ফোন করে রেজাউল ইসলামকে ভোট দিতে বলেছেন।
আর এ কারণেই তারা কাউন্সিল বর্জন করতে চাইছিলেন। এমনকি পার্টি থেকে পদত্যাগও করতে চেয়েছিলেন। পরে এরশাদের আশ্বাস পেয়ে তিনি শান্ত হন।
লোটন প্রশ্ন তোলেন, রেজাউল যদি এরশাদের প্রার্থী হন তাহলে আমরা কী? আর আমরা কেনই ভোট করবো এরশাদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে! যদি এটাই হয় শেষ পর্যন্ত, তাহলে তারাই জাতীয় পার্টি করুক। আমরা থাকবো না।
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ৩১ বছর দল করেছি এটাই কি আমার অপরাধ!
জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন ও এরশাদের ভ্যনগার্ড খ্যাত জাতীয় যুবসংহতি জাতীয় পার্টির আগেই গঠন করা হয়। ১৯৮৩ সালে গঠিত জাতীয় যুব সংহতির প্রথম আহ্বায়ক ছিলেন এটিএম রফিক। প্রথম সভাপতি ছিলেন মিয়া মোহাম্মদ শহীদ।
সর্বশেষ ২০১০ সালের ২৫ নভেম্বর লিয়াকত হোসেন খোকাকে সভাপতি ও আমিনুল ইসলাম ঝন্টুকে সাধারণ সম্পাদক করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। চলতি বছরের ১৫ আগস্ট ওই কমিটি ভেঙে দিয়ে আলমগীর সিকদার লোটনকে আহ্বায়ক ও রেজাউল ইসলাম ভূইয়াকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেন এরশাদ।
কাউন্সিলে জাতীয় পার্টির ৭১ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি, সম্পাদক এবং ৬৩ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।
তবে শেষ পর্যন্ত পার্টির চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে সবকিছু সমঝোতা হবে বলেও আশা করছেন যুব সংহতির নেতারা। অনেকে বলেছেন জাতীয় যুব সংহতির জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যদি কোনো ভুল হয় তার মাসুল এরশাদকেই দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩০, ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৩
ইএস/টিকে/আরকে