
ঢাকা: মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানার মাওয়া ঘাট থেকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাচ্চর ইউনিয়নের কাওড়াকান্দি পর্যন্ত পদ্মাসেতু নির্মাণের জন্য মাওয়া ফেরিঘাট শিমুলিয়ায় অস্থায়ীভাবে স্থানান্তরের কাজ এ মাসে শুরু হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) প্রকৌশল বিভাগ জানায়, মাওয়ায় অবস্থিত বর্তমান ফেরিঘাট এলাকা থেকে মূল পদ্মাসেতুর কাজ শুরু করা হবে। এ নৌপথে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ফেরিঘাটটি অস্থায়ীভাবে শিমুলিয়ায় সরিয়ে নেওয়া হবে।
মাওয়া থেকে সড়ক পথে আড়াই কিলোমিটার দূরে শিমুলিয়া। সেখানে যাতায়াতের জন্য মাওয়ার চন্দ্রবাড়ি একটি সড়ক এবং ঈদগা মাঠ থেকে শিমুলিয়া পর্যন্ত আট ফুট প্রশস্ত একটি সড়ক রয়েছে। ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য এ সড়ক দুটি সম্প্রসারণ করে ১৭ ফুট করার কাজ করবে সেনাবাহিনী।
এ ছাড়াও সড়কের বাকি অংশ থেকে শুরু করে পন্টুন পর্যন্ত কাজ করবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। পন্টুন থেকে ফেরিতে গাড়ি ওঠানামার অ্যাপ্রোচ সড়ক ৩ থেকে ৫টি ফেরিঘাট ও নিজেদের দাপ্তরিক কার্যালয় নির্মাণের কাজ করবে বিআইডব্লিউটিএ’র প্রকৌশল বিভাগ।
এসব কাজের জন্য বিআইডব্লিউটি’র দরকার হবে ৩০ একর জায়গা।
সড়ক সম্প্রসারণে ব্যবহার ও ফেরিঘাট এলাকার সব কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ নেওযা হবে। এজন্য (ভূমি মালিকরা যেভাগে দিতে চায়) ক্রয়, ভাড়া বা ইজারার ব্যবস্থা করবে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। এসব কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যয় হবে প্রায় একশ’ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ)নির্বাহী প্রকৌশলী হারুনর রশিদ বলেন, পদ্মাসেতুর কাজ শুরু করতে মাওয়া ঘাটটি বর্তমান অবস্থান থেকে সরিয়ে শিমুলিয়ায় নেওয়া হবে। এ মাসের শেষের দিকে শুরু হওয়া কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে একশ’ কোটি টাকা। ব্যয় বাড়লে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে।
আওয়ামী লীগ এর নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২০০৯ সালে র্নিবাচনের আগেই মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌপথে পদ্মাসেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিল। বিশ্ব ব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন কারণে চুক্তি বাতিল হওয়ায় তা পিছিয়ে যায়। ২০১৪ সালে আবার সরকার গঠন করে, আগামী জুন মাস নাগাদ মূল সেতুর কাজ শুরু করা হবে।
তবে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করে দুই বছরের জন্য অস্থায়ী ফেরিঘাট নির্মাণের পরিকল্পনায় নানা রকম কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। কারণ ৫ বছরের বেশি সময় ধরে সেতু নির্মাণের কথা ভাবা হলেও অন্য কোন জায়গায় স্থায়ী ফেরিঘাট নির্মাণের কথা ভাবা হয়নি কেন?
নাম প্রকাশে অনীচ্ছুক বিআইডব্লিউটিএ’র এক কর্মকর্তা বলেন, পদ্মাসেতু নির্মাণের কাজ ৫ বছর আগে থেকে যে কোন সময় শুরুর কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু সেতুর কাজ শুরুর আগে মাওয়া ফেরিঘাট সরিয়ে নিতে হবে। এটি জেনেও কেন এতদিন পরে শিমুলিয়ায় অস্থায়ীভাবে ফেরিঘাট স্থানান্তর করা হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (বন্দর) গোলাম মোস্তফা বলেন, শিমুলিয়া অস্থায়ী বা অন্য কোথাও স্থায়ী ঘাট নির্মাণের ব্যাপারে আমাদের কোন মতামত বা পরামর্শ নেয়া হয়নি। সবকিছু দেখভাল করা হচ্ছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা মার্চ ২০, ২০১৪