
তৈরির পর ওয়ানটাইম গ্লাসে পরিবেশন করা হয় মজাদার মুসাম্বি শরবত- ছবি- ডালিম হাজারী
ত্রিপুরা, আগরতলা থেকে ফিরে: ফুটপাতের টং দোকানের কাচের তাকে সাজানো কাঁচা-পাকা মুসাম্বি। চাইলে পছন্দ করেও দিতে পারেন। দোকানদার সেগুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে চোখের সামনেই কাঁচি দিয়ে বাকল ছাড়িয়ে নেবেন। এরপর হাতে ঘোরানো একটি মেশিনে বাকল ছাড়ানো মুসাম্বিগুলো দিয়ে চাপ দিতেই বেরিয়ে আসবে রস। আর তার সঙ্গে বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে তৈরি করা হয় ‘প্রাণ জুড়ানো’ সুস্বাদু মুসাম্বি শরবত। ঠাণ্ডা শরবত খেতে চাইলে রয়েছে সে ব্যবস্থাও।
মুসাম্বি শরবত বেশ মজাদার ও সুস্বাদু, না পেয়ে দলের একজনের আগের দিন খুব আক্ষেপ ঝরছিলো। তবে তো গলা ভেজাতেই হবে! রোববার হওয়ায় সব দোকানপাট বন্ধ থাকায় ফুটপাতও ছিলো ফাঁকা, তাতে আপেক্ষা বাড়লো। তবে পরেরদিনই সে সুযোগ হলো।
আগরতলার মধ্য চৌমুহনী সড়ক ধরে ভারতের ব্রান্ডেড শপ ‘বিগ বাজার’র দিকে যেতে সড়কের পাশেই চোখে পড়লো একটি শরবতের দোকান। এ দোকানে সাজানো মুসাম্বি দেখেই আকাঙ্ক্ষা পূরণের সুযোগ হলো।
দোকানদার টিটন সাহা (২৫) জানালেন, তার দোকানে মুসাম্বি ছাড়াও আনারস, বেদানা, কামরাঙা, জাম্বুরা, লেবুর শরবত তৈরি করা হয়। মূলত মৌসুমি ফলের শরবতের ব্যবসা তার।
তৈরির বিষয়ে টিটন জানান, একগ্লাস শরবত তৈরিতে অন্তত ৪টি মুসাম্বি লাগে। প্রতিটি মুসাম্বি ধুয়ে পরিষ্কার করে কাঁচি দিয়ে বাকল ছাড়িয়ে ‘কালসি’ নামে হাতে ঘোরানো একটি মেশিনে দেওয়া হয়। এরপর বেরিয়ে আসে রস। এরসঙ্গে পরিমাণমতো লবণ, চিনি, বিট লবণ, জল জিরা, টেস্ট মেকার মিশিয়ে তৈরি করা হয় মজাদার মুসাম্বি শরবত। কেউ যদি ঠাণ্ডা শরবত থেকে চান তাহলে বরফের সঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়।
সাত বছর ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত টিটন জানান, দিনে গড়ে ৭-৮শ’ টাকার বেচাবিক্রি হয়। এক গ্লাস শরবতের দাম ৬০ টাকা। মুসাম্বির মৌসুম শুরু মাত্র। কয়েকদিন পর দাম কমলে শরবতের দামও কমে যাবে।
এর ফাঁকে এক গ্লাস লেবুর শরবতে অন্য এক ক্রেতাকে গলা ভেজাতে দেখে মনে হলো, ‘মা কালি ফ্রুট জুসের’ সবগুলো শরবতই মজার। তবে ফেরার তাড়ায় তা যেচে দেখার সুযোগ হলো না। আর টিটনের শরবতের দোকান দেখে দলের একজন বাংলাদেশে এমন একটি দোকান চালুর ইচ্ছেও পোষণ করলেন!
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৭
জেডএস