মসজিদ প্রতিষ্ঠা ও পরিষ্কার রাখার নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ১৫:০৭, আগস্ট ৭, ২০১৭
মসজিদ প্রতিষ্ঠা ও পরিষ্কার রাখার নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম

মসজিদ প্রতিষ্ঠা ও পরিষ্কার রাখার নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম

মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা একটি পবিত্র কাজ। পৃথিবীতে সর্বপ্রথম মসজিদ নির্মাণ করেন হজরত আদম আলাইহিস সালাম। মসজিদ প্রতিষ্ঠার জন্য ওয়াকফ শর্ত। ওয়াকফ ছাড়া মসজিদ হয় না।

মসজিদ নির্মাণ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহর মসজিদগুলোকে আবাদ করে সেই, যে আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী এবং নামাজ কায়েম করে ও জাকাত আদায় করে।’ -সূরা তওবা: ১৮

হাদিসে বলা হয়েছে, হজরত ওসমান (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একটি মসজিদ নির্মাণ করবে, আল্লাহ তার জন্য বেহেশতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন।’ -মেশকাত: ৬৪৫

অন্য হাদিসে আছে, হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ প্রতিষ্ঠা করতে এবং মসজিদকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ও তাতে সুগন্ধি লাগাতে নির্দেশ দিয়েছেন।’ -মেশকাত: ৬৬৪

উল্লেখিত হাদিসে ‘মহল্লায় মহল্লায়’ শব্দের ব্যাখ্যা হচ্ছে, যেখানে লোকের বসতি রয়েছে সেখানেই মসজিদ নির্মাণ করবে। তবে অপর কোনো মসজিদের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে যেন না হয়।’ -মেশকাত: ৬৬৪

মসজিদের আদব
মসজিদ একটি পবিত্র স্থান। এর মধ্যে শুধু মহান আল্লাহর ইবাদত করা হয়। মসজিদে সাধারণভাবে চলাফেরা করা যায় না। আল্লাহর ঘর মসজিদে প্রবেশ এবং তা থেকে বের হওয়ার জন্য অনেক আদব রয়েছে। একইভাবে ভেতরে অবস্থান করলেও বিশেষ বিশেষ আদবের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হয়। মসজিদে প্রবেশের সুন্নত পাঁচটি-
১. বিসমিল্লাহ পড়া, ২. দরুদ শরিফ পড়া, ৩. অতঃপর এ দোয়া পড়া- আল্লাহুম্মাফতাহলি আবওয়াবা রাহমাতিক, ৪. মসজিদে ডান পা আগে রাখা ও ৫. মসজিদে প্রবেশ করে ইতিকাফের নিয়ত করা। -ইবনে মাজাহ ও শামী 

মসজিদ থেকে বের হওয়ার সুন্নতগুলো-
১. বিসমিল্লাহ পড়া, ২. দরুদ শরিফ পড়া, ৩. অতঃপর এ দোয়া পড়া- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিনফাদলিক, ৪. মসজিদের বাইরে বাম পা আগে রাখা ও ৫. অতঃপর প্রথমে ডান পায়ে জুতা পরা। তারপর বাম পায়ে পরা। -ইবনে মাজাহ ও তিরমিজি

মসজিদে নামাজ পড়ার ফজিলত
মসজিদে নামাজ পড়ার ফজিলত নিয়ে অনেক হাদিস রয়েছে। তবে প্রত্যেক মসজিদের সওয়াব একই রকম নয়। কারণ, মুসলিম সমাজে দুই ধরনের মসজিদ রয়েছে। জামে মসজিদ ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ইবাদতখানা (পাঞ্জেগানা মসজিদ)। এ ছাড়াও মসজিদে হারাম, মসজিদে নববি ও মসজিদে আকসার সওয়াবও পৃথক পৃথক দেওয়া হয়। আবার মসজিদের বাইরে কোথাও নামাজ আদায় করলে তার সওয়াবের পরিমাণও আলাদা।

মসজিদে হারাম
মসজিদে হারাম বলে কাবাগৃহসহ চারিদিক পরিবেষ্টিত মসজিদকে। এখানে ‘হারাম’ শব্দের অর্থ সম্মানিত। এ মসজিদের মধ্যখানে কাবাঘর অবস্থিত। মসজিদে হারামে এক নামাজ ১ লাখ নামাজের সমান।

মসজিদে আকসা
মসজিদে আকসার বিবরণ কোরআনে কারিমে একাধিকবার এসেছে। হজরত নবী করিম (সা.) মিরাজ রজনীতে সেখানে গমন করেন। রাসূল (সা.) বলেন, মসজিদে আকসার এক নামাজ ৫০ হাজার নামাজের সমান।

মসজিদে নববী
মসজিদে নববী হলো ইসলামের সোনালি যুগের সব কর্মকাণ্ডের প্রথম কেন্দ্র। এ মসজিদের এক নামাজ ৫০ হাজার নামাজের সমান। তবে অন্য একটি হাদিসে আছে যে, মসজিদে নববির এক নামাজ ১ হাজার নামাজের সমান। এ হাদিসটি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। -মেশকাত: ৬৪০

জামে মসজিদ
মসজিদে হারাম, মসজিদে আকসা ও মসজিদে নববী ব্যতীত অন্যকোনো মসজিদে মুসলমানরা সমবেত হয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ জুমার নামাজ জামাতে আদায় করা হলে তাকে জামে মসজিদ বলে। এ মসজিদের এক নামাজ ৫০০ নামাজের সমান।

পাঞ্জেগানা মসজিদ
যে মসজিদে জুমার নামাজ ব্যতীত শুধু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে পড়া হয়, তাকে পাঞ্জেগানা মসজিদ বলে। এ মসজিদের এক নামাজ ২৫ নামাজের সমান।

ঘর বা দোকানে নামাজ পড়া
মসজিদের বাইরে ঘরে বা দোকান ইত্যাদি জায়গায় নামাজ আদায় করলে এক নামাজের পরিবর্তে এক নামাজের সমান সওয়াব দেওয়া হবে। -মেশকাত: ৬৯৬ 

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৭
এমএইউ/


সম্পাদক : লুৎফর রহমান হিমেল

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান