মণ্ডপে অধিষ্ঠিত দেবী দুর্গা 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ১৩:৫২, অক্টোবর ২২, ২০২০
মণ্ডপে অধিষ্ঠিত দেবী দুর্গা। ছবি: জিএম মুজিবুর

মণ্ডপে অধিষ্ঠিত দেবী দুর্গা। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: করোনার প্রার্দুভাবের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। তবে তিথির হেরফেরের কারণে এবার শরতের পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে হেমন্তে।

বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গাপূজার মহাষষ্ঠী। সকাল থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্দির ও পূজামণ্ডপে আসতে শুরু করেছেন দেবী দুর্গার ভক্তরা। মহাষষ্ঠীর আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে রয়েছে দশভূজা দেবীর অধিষ্ঠান, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। 

বৃহস্পতিবার ষষ্ঠী তিথিতে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবীর অধিষ্ঠান হয়। সকাল ৮টা ৫৪মিনিটের মধ্যে ছিল ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা। এ সময় বেলতলা কিংবা বেলগাছের নিচে দেওয়া হয় ষষ্ঠীপূজা। সন্ধ্যায় দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস ছাড়াও সব মণ্ডপে থাকবে পুষ্পাঞ্জলি। 

শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) শারদীয় দুর্গাপূজার দ্বিতীয় দিনে মহাসপ্তমী। সকালে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হবে। এরপর সকাল ৯টা ৫০মিনিটের মধ্যে দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন, সপ্তম্যাদি কল্পারম্ভ ও সপ্তমীবিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এভাবে উৎসব চলবে আগামী সোমবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত।

এর আগে বুধবার (২১ অক্টোবর) বোধনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার ঢাকে পড়ে কাঠি। দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনাপূজার মধ্য দিয়ে দেবীর বোধন হয়। বুধবার পঞ্চমী তিথিতে সায়ংকালে অর্থাৎ সন্ধ্যায় এই বন্দনাপূজা অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে সূচনা হয়েছিল দেবীপক্ষের। প্রতি বছর দেবীপক্ষের শুরুর সপ্তাহবাদে দুর্গাপূজা শুরু হলেও ‘মল মাস’ বা ‘অশুভ মাসের’ কারণে এবার দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে মহালয়ার ৩৫ দিন পার করে।

সনাতন পঞ্জিকা মতে, এবার দেবীদুর্গা এবার দোলায় (পালকি) চেপে স্বর্গালোক থেকে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসবেন। এর ফল হচ্ছে মড়ক। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ ও মহামারির বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ। দেবী বিদায় নেবেন গজে (হাতি) চড়ে। এর ফল হিসেবে শস্যপূর্ণা হয়ে উঠবে বসুন্ধরা।

কে কে কতগুলো ঠাকুর দেখেছে, এ প্রতিযোগিতা এগিয়ে থাকতে রাজধানীর পুরান ঢাকায় যাওয়ার বিকল্প নেই। তাঁতিবাজার, শাঁখারীবাজার, সূত্রাপুর, কোতোয়ালি রোড, বাংলাবাজারসহ হিন্দু অধ্যুষিত পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপ-মন্দিরগুলোতে প্রতিবছর পূজার মাসখানেক আগে থেকেই লেগে যায় উৎসবের রঙ। কিন্তু এবার সেই পুরান ঢাকা অনেকটাই নীরব।

ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা মেনে পূজার প্রস্তুতি চললেও, সেখানে নেই উৎসবের ছোঁয়া। আলোকসজ্জা আর সাজসজ্জার কোনো চাকচিক্যের দেখা মেলেনি কোথাও। মহাষ্টমীর দিন সকাল মানেই রামকৃষ্ণ মিশন আর সেখানকার কুমারীপূজা। কিন্তু ভিড়ের কারণে করোনার প্রার্দুভাব বাড়তে পারে, সেই আশঙ্কায় বাতিল করা হয়েছে কুমারীপূজাও।

রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী হরিপ্রেমানন্দ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিবছরই মহাষ্টমীর সকালে কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত। যাতে ভক্তদের উপস্থিতি থাকে সবচেয়ে বেশি। এ ভিড় এড়াতেই এবার আগেভাগেই কুমারীপূজা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কুমারীপূজা বাতিল হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুর্গাপূজা হবে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, এ বছর সারাদেশে ৩০ হাজার ২৩১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হবে। গত বছর এ সংখ্যা ছিলো ৩১ হাজার ৩৯১টি। করোনার কারণে এবার এক হাজার ১৮৫টি পূজা কম হচ্ছে। ঢাকা মহানগরীতে গতবারের ২৩৭টি থেকে ৬টি কমে এবার ২৩১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন থাকছে।

পূজার সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত বাংলানিউজকে বলেন, এবারে পূজামণ্ডপে ভক্তদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেসঙ্গে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে তবেই পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করতে হবে। সেসঙ্গে বরাবরের মতো এবার বিজয়া দশমীতে শোভাযাত্রা করে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া যাবে না৷ সেসঙ্গে ভক্তদের মধ্যে প্রতিদিনের পূজা শেষে প্রসাদ বিতরণ করা যাবে না।

তিনি জানান, সপ্তমী তিথিতে দুপুর ১২টা ১মিনিটে সব মন্দিরে করোনামুক্তি ও সবার আরোগ্য কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
ডিএন/এএটি


সম্পাদক : তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান