ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রবাসে বাংলাদেশ

বাংলানিউজে সংবাদ প্রকাশের পর দেশে ফেরার ব্যবস্থা হলো তৌফিকের

মোহাম্মদ আল-আমীন, সৌদি আরব থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৯ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১২
বাংলানিউজে সংবাদ প্রকাশের পর দেশে ফেরার ব্যবস্থা হলো তৌফিকের

বাংলানিউজে সংবাদ প্রকাশের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফেরার ব্যবস্থা হয়েছে সৌদি আরবের আইনি বেড়াজাল এবং অর্থের অভাবে চিকিৎসা না পেয়ে মরতে বসা প্রবাসী বাংলাদেশি তৌফিক দেওয়ানের।

সেদেশের বাংলাদেশ দূতাবাস তৌফিককে দ্রুত দেশে ফেরার জন্য বিশেষ আউট পাসের ব্যবস্থা করেছে।

ফিঙ্গারপ্রিন্ট হয়ে গেলে ২/১ দিনের মধ্যেই তৌফিক দেশে ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তৌফিকের আত্মীয় শফিকুর রহমান।

দেশে ফিরে চিকিৎসা নিয়ে বেঁচে যাবেন বলেও আশা করছেন কাজ করতে গিয়ে ৪ তলার ছাদ থেকে পড়ে মারাত্নকভাবে আহত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর মুখে থাকা তৌফিকের প্রবাসী স্বজন ও অন্য বাংলাদেশিরা।    

উল্লেখ্য, ‘বিনা চিকিৎসায় মরতে বসেছেন সৌদি আরব প্রবাসী তৌফিকরা’ শিরোনামে শনিবার দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ৫২ মিনিটে সংবাদটি প্রকাশের পর পরই সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং রিয়াদে বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নজরে আসে।

এর পর আহত তৌফিকের পক্ষ থেকে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দূতাবাস কর্মকর্তারা তাকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এজন্য তৌফিকের আপনজন কাউকে দূতাবাসে একটি লিখিত আবেদন জানাতে বলেন দূতাবাস কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ।

তৌফিকের আত্মীয় শফিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, তারা আবেদন করায় দূতাবাস থেকে তৌফিককে দ্রুত দেশে ফেরার জন্য বিশেষ আউট পাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট হয়ে গেলে ২/১ দিনের মধ্যেই তৌফিক দেশে যেতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

বাংলানিউজের সংবাদটি তৌফিকের জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে উল্লেখ করে বাংলানিউজকে ধন্যবাদ জানান শফিকুর রহমান।

উল্লেখ্য, সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী সেদেশে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে রোগী বা আহতের অবস্থা যতই গুরুতর হোক, ঘটনাস্থলে পুলিশ না আসা পর্যন্ত কেউ সেখানে আহত ব্যক্তিকে সহযোগিতা করতে পারবেন না এবং আকামা ও মেডিক্যাল(ইন্স্যুরেন্স) কার্ড না থাকলে তার চিকিৎসাও করা হয় না।

ফলে সে দেশে অবৈধ বলে বিবেচিত তৌফিক কনস্ট্রাকশনের কাজ করতে গিয়ে ৪ তলার ছাদ থেকে পড়ে মারাত্মকভাবে আহত হলেও আকামা এবং ইন্স্যুরেন্স কার্ড না থাকায় চিকিৎসা পাচ্ছেন না। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া হলেও আকামা এবং ইন্স্যুরেন্স কার্ড না থাকার অজুহাতে তাকে সেখান থেকে ফেরত দেওয়া হয়।

বাংলানিউজে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, তৌফিক এখন মৃত্যুর লড়ছেন। এই মুহূর্তে তাকে সে দেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা অথবা তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা না করতে পারলে হয়তো খুব দ্রুতই লাশ হয়ে দেশে ফিরতে হবে তৌফিককে।

এ সংবাদ প্রকাশের ৫/৬ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় তৌফিকের দেশে ফেরা ও চিকিৎসা নিয়ে বাঁচার আশা উজ্জ্বল হওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

``সৌদি আরবে বসবাসরত প্রায় ২৩ লাখ বাংলাদেশির মধ্যে এমন শত শত তৌফিক আছেন, যারা সামান্য কিছু টাকা এবং সঠিক চিকিৎসার অভাবে আজ মৃত্যুপথযাত্রী`` বলে উল্লেখ করে তৌফিকের মতো অন্য সবার ব্যাপারেও অনুরূপ মানবিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দূতাবাসকে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রবাসীরা।  

বাংলাদেশ সময় : ২১২০ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১২
এমএম/ সম্পাদনা : অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর;

জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর 
[email protected]
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।