ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

প্রতিদিনের ধারাবাহিক

১৯৮৪ | জর্জ অরওয়েল (খণ্ড ২ কিস্তি ৪৪) || অনুবাদ: মাহমুদ মেনন

অনুবাদ উপন্যাস / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৭ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৫
১৯৮৪ | জর্জ অরওয়েল (খণ্ড ২ কিস্তি ৪৪) || অনুবাদ: মাহমুদ মেনন

George_Orwell_inner১৯৮৪ (নাইনটিন এইটি ফোর)—বিখ্যাত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক, সাহিত্য সমালোচক ও সাংবাদিক জর্জ অরওয়েলের অমর গ্রন্থ। ১৯৪৯ সালে তার মৃত্যুর এক বছর আগে উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়।

২০০৪ সালে ‘দি গার্ডিয়ান’র জরিপে উপন্যাসটি বিশ্বের চিরায়ত গ্রন্থের তালিকায় উঠে আসে সবার উপরে। ইংরেজি ভাষার এই উপন্যাসটি কালজয়ী হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। যাতে ফুটে উঠেছে সমসাময়িক বিশ্ব রাজনীতি, যুদ্ধ, শান্তির প্রেক্ষাপট। বাংলানিউজের জন্য বইটি বাংলায় অনুবাদ করছেন মাহমুদ মেনন। উল্লেখ্য, জর্জ অরওয়েলের মূল নাম এরিক আর্থার ব্লেয়ার। ১৯০৩ সালের ১৫ জুন ব্রিটিশ ভারতের বিহার রাজ্যের মথিহারিতে জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুবরণ করেন লন্ডনে ১৯৫০ এর ২১ জানুয়ারি। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ‘দি রোড টু উইগ্যান পাইয়ার’, ‘হোমেজ টু ক্যাটালোনিয়া’, ‘এনিম্যাল ফার্ম’।

___________________________________

শুরু থেকে পড়তে ক্লিক করুন

দ্বিতীয় খণ্ডের ৪৩তম কিস্তি

___________________________________

‘কালো, দুই চর্মবন্ধনির, ভাঙাচোরা—বেশ তো। খুব শিগগিরই, আমি তারিখ জানাতে পারছি না—তোমার সকালের কাজে একটি বার্তা থাকবে যাতে শব্দগুলো হবে আবছা এলোমেলো। তুমি তখন পুনরায় বার্তাটি পাঠানোর জন্য বলবে। পরের দিন, তুমি তোমার ব্রিফকেস ছাড়া কাজে যাবে, পথে কেউ একজন তোমার কাঁধ স্পর্শ করে বলবে, “আমার ধারণা আপনি আপনার ব্রিফকেস ফেলে এসেছেন। ” ওই ব্যক্তি তোমাকে যে ব্রিফকেস দেবেন তাতেই গোল্ডস্টেইনের বইটি থাকবে। তুমি পরবর্তী চৌদ্দ দিনের মধ্যে সেটি ফেরত দেবে। ’



কিছুক্ষণের জন্য দু’জনই চুপ করে থাকল।

‘কয়েক মিনিটের মধ্যেই তোমাকে চলে যেতে হবে’—বললেন ও’ব্রায়েন। ‘আমাদের আবার দেখা হবে—আমরা যদি আবার দেখা করি—’

উইনস্টন তার দিকে তাকাল। ‘এমন এক স্থানে, যেখানে কোনও অন্ধকার থাকবে না?’ ইতস্তত করে বলল সে।

বিস্ময়ের অভিব্যক্তি ছাড়াই সে কথায় সায় দিলেন উইনস্টন। ‘এমন এক স্থানে, যেখানে কোনও আঁধার থাকবে না’—বললেন তিনি, যেন তিনিও বুঝে ফেলেছেন এই কথার মানে। ‘এর মধ্যে, চলে যাওয়ার আগে কি তোমার আর কিছু বলার আছে? কোনও বার্তা? কোন প্রশ্ন?। ’

উইনস্টন ভাবল। তার মনে হলো না, জিজ্ঞাসা করার মতো আর কোনও প্রশ্ন তার আছে। অস্পষ্ট অনির্দিষ্ট কোনও শব্দ উচ্চারণের প্রয়োজন আছে বলেও মনে হলো না। বরং ও’ব্রায়েন বা ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও কিছুর পরিবর্তে তার মনে এলো এক অন্ধকার শয়নকক্ষ যেখানে তার মা জীবনের শেষ দিনগুলো কাটিয়েছেন। আর তার সঙ্গে মনে এলো মি. চ্যারিংটনের দোকানের দোতলার কামরা, এলো গ্লাসের পেপারওয়েট আর গোলাপকাঠের কাঠামোবদ্ধ ইস্পাতের খোদাই করা ছবিটি। অনেকটা দৈবচয়নের মতো বললো সে:



‘আপনি কি কখনও পুরনো একটি ছড়া শুনেছেন তার শুরুটা ছিলো “অরেঞ্জেস অ্যান্ড লেমন্স, সে দ্য বেলস অব সেইন্ট ক্লেমেন্টস”?’

আবারও মাথা নাড়লেন ও’ব্রায়েন। দারুণ সৌজন্যতার অভিব্যক্তিতে তিনি স্তবকের পরের লাইনগুলো উচ্চারণ করলেন:

অরেঞ্জেস অ্যান্ড লেমন্স, সে দ্য বেলস অব সেইন্ট ক্লেমেন্ট’স,
ইউ ও মি থ্রি ফার্দিংস, সে দ্য বেলস অব সেইন্ট মার্টিন’স,
হোয়েন উইল ইউ পে মি? সে দ্য বেলস অব ওল্ড বেইলি,
হোয়েন আই গ্রো রিচ, সে দ্য বেলস অব শোরডিচ। ’

‘শেষের লাইনটিও আপনি জানেন!’—বলল উইনস্টন।

‘হ্যাঁ, আমি শেষের লাইনটিও জানি। তবে এখন আমার মনে হয় তোমার যাওয়ার সময় হয়েছে। কিন্তু একটু অপেক্ষা করো। তোমাকেও ওর একটি ট্যাবলেট দিতে হবে। ’

উইনস্টন উঠে দাঁড়াতেই ও’ব্রায়েন তার একটি হাত চেপে ধরলেন। তার শক্তিশালী পাঞ্জার চাপে উইনস্টনের তালুর হাড়গুলো যেন মুচড়ে গেল। দরজার কাছে গিয়ে উইনস্টন পিছনে ফিরে তাকাল। কিন্তু ও’ব্রায়েন ততক্ষণে তার অস্তিত্ব মন থেকে মুছে ফেলার প্রস্তুতিতে। টেলিস্ক্রিনে সুইচে হাত দিলে তিনি উইনস্টনের প্রস্থানের অপেক্ষায়। উইনস্টনের মন জুড়ে পেছনে ফেলে আসা সবুজ আলোর লেখার টেবিল, স্পিক রাইট আর কাগজ পত্রে ঠাসা কতগুলো বাক্স। এই ঘটনার এখানেই পরিসমাপ্তি। ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যেই তার মনে হতে লাগল, ও’ব্রায়েন এতক্ষণে পার্টির ব্যঘাতঘটে যাওয়া জরুরি কাজে মন দিয়েছেন।

দ্বিতীয় খণ্ডের ৪৫তম কিস্তির লিংক



বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।