মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সাহাদারা মান্নান ও আহসানুল তৈয়ব জাকির বাংলানিউজকে তাদের মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তারা জনগণের ভোটের মাধ্যমে নিজ দলকে আসনটি উপহার দেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চলতি বছরের ২৯ মার্চে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বাংলাদেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নতুন মুখের প্রার্থী ঘোষণা করেছেন।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় আহসানুল তৈয়ব জাকিরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি গণভবনে দলের সংসদীয় বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
গত ১৮ জানুয়ারি সকাল সোয়া আটটায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বগুড়া-১ আসনের টানা তিনবার নির্বাচিত এমপি আব্দুল মান্নান মারা যান। পরে নিয়মানুযায়ী আসনটি শূন্য হলে ওই আসনে দল থেকে মনোনয়ন পেতে অনেক নেতাকর্মী দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ফরম বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে। দলের মোট ১৯ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেন। পরে দল থেকে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে বগুড়া-১ আসনের জন্য সাহাদারা মান্নানের নাম ঘোষণা করা হয় এবং সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিএনপির থেকে আহসানুল তৈয়ব জাকিরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
জানা গেছে, ১৯৭০ ও ১৯৭২ সালের নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে নির্বাচিত হন বিএনপি প্রার্থী। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচিত হন। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আবারও বিএনপি প্রার্থী নির্বাচিত হন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে দীর্ঘদিন পর আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল মান্নান এই আসনে নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের ভোটেও তিনি নির্বাচিত হন।
আব্দুল মান্নান ২০০৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করে গেছেন।
তিনি তার স্ত্রী সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাদারা মান্নানকে সঙ্গে নিয়ে যমুনা নদীর ভাঙন প্রতিরোধ, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সব ধরনের উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। প্রয়াত মান্নানের এলাকায় উন্নয়ন এবং ২০০৮ সাল থেকে স্বামীর সঙ্গে ভোটের মাঠে থাকায় উপ-নির্বাচনে জনগণ সাহাদারা মান্নানকে ভোট দেবেন বলে তৃণমূল নেতাকর্মীরা মন্তব্য করেছেন।
এ আসনে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল গাফফার বাংলানিউজকে জানান, দলীয় কোন্দল রয়েছে কিছুটা। নির্বাচনে দলের কিছু নেতা গোপনে বিরোধিতা করতে পারেন বলে ধারণা করছেন তিনি। তারপরেও নৌকার জয় হবে বলে তিনি আশাবাদী। নৌকার পক্ষে বিরোধিতা করার সাহস কেউ পাবে না। এছাড়াও যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে, তাতে জনগণ সাহাদারা মান্নানকেই ভোট দেবেন।
এদিকে বগুড়া-১ আসনে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা শোচনীয়। দীর্ঘদিন ধরে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে দুই উপজেলা। এছাড়াও রয়েছে দলের মধ্যে একাধিক গ্রুপ। এবারের উপ-নির্বাচনে আগের প্রার্থীরাও পিছুটান দিয়েছেন। ২০০৮ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচন করেন শোকরানা। তিনি পাঁচ হাজার ভোটে পরাজিত হওয়ার পর দুই উপজেলায় দলের হাল ধরেন। দলের পেছনে খরচও করেন বিপুল পরিমাণ টাকা। কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন না দিয়ে দেওয়া হয় সাবেক এমপি কাজী রফিককে। নির্বাচনের পর তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেন এবং নিজেকে গুটিয়ে নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
কেইউএ/এএটি