ঢাকা: রাজধানীতে গাড়ি পার্কিংয়ের কোনো নীতিমালা নেই। একটি মহাপরিকল্পনা আছে।
নগরীর যানজট নিরসনে পাঁচ বছর আগে ডিসিসি এই পার্কিং মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়।
ডিসিসি জানায়, নগরীর বেশির ভাগ ভবনেই পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। তাই নগরবাসী ব্যস্ত সময়েও রাস্তা দখল করে গাড়ি পার্কিং করে। এতে নগরীর অসহনীয় যানজট আরও তীব্র হচ্ছে।
রাজধানীর যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পার্কিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি বলেই মনে করছে ডিসিসি। সে লক্ষ্যেই নেওয়া হয় মহাপরিকল্পনা। যা বাস্তবায়ন হলে নগরীতে যানজট অনেকটা কমে আসবে তাই নয়, একইসঙ্গে আয়ও বাড়বে এমনটাই প্রত্যাশা ডিসিসি’র।
গাড়ি পার্কিং মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বাংলানিউজকে বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ার কারণেই পার্কিং মহাপরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। ’
তিনি বলেন, নগরীতে ভালো পার্কিং ব্যবস্থার বিকল্প নেই। কিন্তু ডিসিসির আয় খুব সামান্য। সরকারি অর্থ ছাড়া এই আয় দিয়ে উন্নয়ন কাজ করা যানা।
নগরীর ব্যস্ত এলাকার ফুটপাতে এলোপাতাড়ি গাড়ি পার্কিং করা হচ্ছে। ওই সব এলাকায় দিনের বেশির ভাগ সময় অসহনীয় যানজট লেগে থাকে, এতে নগরবাসীর কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে ও মানুষকে পোহাতে হচ্ছে অসহনীয় ভোগান্তি এসব কিছুই স্বীকার করে নিয়ে ডিসিসি মেয়র বলেন, ‘নগরবাসীর ভোগান্তির কথা মাথায় রেখেই গাড়ি পার্কিং-এর জন্য মহাপরিকল্পনাটি হাতে নেওয়া হয়। ’
ডিসিসি সূত্র জানায়, পার্কিং মহাপরিকল্পনাটি হাতে নেওয়ার পর এটি বাস্তবায়নের লে একটি খসড়াও তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটির আরবান প্ল্যানিং বিভাগ। জরিপ চালিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পার্কিং স্পট গুলোতে কি পরিমাণ গাড়ি পার্কিং করা যায় তাও নির্ধারণ করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গাড়ি পার্কিং নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিসিসিতে একটি আলাদা বিভাগ খোলারও কথা ছিলো।
বিভাগটি পার্কিং স্পট ছাড়াও তৈরি করবে আলাদা পার্কিং স্পেস। সার্বণিক মনিটরিং ও পার্কিং টোলও আদায় করবে এ বিভাগটি। যারা টোল আদায় করবে তাদের ট্রেনিং ছাড়াও আলাদা ড্রেস ও আইডি কার্ডও দেয়া হবে। সিদ্ধান্ত ছিলো টোল আদায় কর্মীদের অনুমতি ছাড়া রাস্তার দু’পাশে কেউ গাড়ি পার্কিং করতে পারবে না। এতে গাড়ি পার্কিং-এর ক্ষেত্রে শুধু শৃংখলাই ফিরে আসবে না। কমে যাবে যানজটও।
বর্তমানে রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, বায়তুল মোকাররম, শান্তিনগর ও পুরানা পল্টন এলাকার গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে আরবান প্ল্যানিং বিভাগ। নিউমার্কেট ডিসিসির জোন-৪ ও মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজারের গাড়ি পার্কি নিয়ন্ত্রণ করে ডিসিসির এস্টেট বিভাগ। এসব এলাকার ফুটপাতে প্রতিদিন সাড়ে চার হাজার গাড়ি পার্কিং করা হলেও এক এলাকার সাথে আরেক এলাকার কোনো সমন্বয় নেই।
কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ইজারার ভিত্তিতে ওই সব জায়গা থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিটি সিএনজি থেকে ৫ টাকা ও প্রাইভেট কার থেকে ১০ টাকা হারে টোল আদায় করে থাকে। এসব এলাকায় গাড়ি পার্কিং থেকে ডিসিসি বছরে প্রায় ২০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করে।
পার্কিং মহাপরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হলে রাজস্ব আয় আরো অন্তত ১ কোটি টাকা বাড়তো বলেই দাবি ডিসিসি’র সংশ্লিষ্ট বিভাগের।
এদিকে মতিঝিল, দিলকুশা, বায়তুল মোকাররম এলাকার গাড়ি পার্কিং-এর জন্য দুটি বহুতল পার্কিং কমপ্লেক্স তৈরি করছে ডিসিসি। ভবন দুটির নির্মাণ শেষ হলে এসব এলাকার ফুটপাতে গাড়ি পার্কিং নিষিদ্ধ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪১ ঘন্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১০