ঢাকা: সরকার পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গুদাম সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিলেও পরিবেশ আইনের আওতায় না পড়ায় ২ শতাধিক গুদাম সরানোর উদ্যোগ নিতে পারছে না পরিবেশ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘কেমিক্যাল গুদামগুলো পরিবেশ আইনের আওতায় পড়ে না।
তিনি আরো বলেন, ‘কেমিকেল গুদাম শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তারা গুদাম সরানোর উদ্যোগ নিতে পারে। ’
এ ব্যাপারে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–য়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘নিমতলীর ঘটনার পর ২০টি পদার্থ চিহ্নিত করে সেগুলোকে আবাসিক এলাকায় না রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি। এরই মধ্যে চিহ্নিত ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিষ্ঠান অন্যত্র সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। ’
তবে র্যাব, ঢাকা জেলা প্রশাসক, বিএসটিআই ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঝেমধ্যে এসব গুদামে অভিযান পরিচালনা করলেও সামান্য জরিমানা আদায়ের মধ্যেই তাদের রায় সীমাবদ্ধ থাকে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, যেসব আইনে কেমিক্যাল গুদামগুলোকে জরিমানা করা যায় সেগুলোরও সীমাবদ্ধতা আছে। এক সঙ্গে খুব বেশি জরিমানা করা যায় না। আবার সহজে কারাদণ্ডও দেওয়া যায় না।
এ পরিস্থিতির সুযোগে কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা পুরনো ঢাকার আবাসিক এলাকায় গড়ে তোলা অবৈধ গুদামে ঝুঁকিপূর্ণ ও দাহ্য কেমিকেল রেখে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।
অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা এসব গুদামের কারণে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। বিঘ্নিত হচ্ছে জননিরাপত্তা। নিমতলীর এক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার অন্যতম উদাহরণ।
ওই অগ্নিকাণ্ডে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ছাড়াও কয়েক কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হয়।
ওই দুর্ঘটনার পর পুরনো ঢাকার ব্যবসায়ীদের আবাসিক এলাকা থেকে কেমিকেল গুদাম সরিয়ে নেওয়ার দিনক্ষণ বেঁধে দেন শিল্পমন্ত্রী।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর ছিলো কেমিক্যাল গুদাম সরিয়ে নেওয়ার সর্বশেষ সময়।
কিন্তু কাজ হয়নি শিল্পমন্ত্রীর আল্টিমেটামে। নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার পর প্রায় এক মাস অতিবাহিত হলেও এখনো পুরনো ঢাকায় গুদাম রেখে দেদারছে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা।
এদিকে আইনের আওতায় না পড়লেও ২শ’ কেমিক্যাল ব্যবসায়ী আবাসিক এলাকায় গড়ে তোলা গুদামের পরিবেশগত ছাড়পত্র নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেছে বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর সূত্র।
সূত্র আরো জানিয়েছে, ওইসব আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সরেজমিন তদন্তও শুরু করেছেন।
এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ‘কেমিকেল গুদাম পরিবেশতগত ছাড়পত্রের আওতাভুক্ত নয়। তবে পুরনো ঢাকায় ছোট ছোট কিছু কারখানা রয়েছে যেগুলো পরিবেশ আইনে পড়ে। সেগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের কাজ চলছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০, অক্টোবর ২৯, ২০১০