ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

বাংলানিউজের খবরে সামসু’র যাত্রাভঙ্গ, তৎপর পুলিশ

রহমান মাসুদ ও ইলিয়াস সরকার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১২
বাংলানিউজের খবরে সামসু’র যাত্রাভঙ্গ, তৎপর পুলিশ

সেন্টমার্টিন (টেকনাফ, কক্সবাজার): বাংলানিউজে সংবাদ প্রকাশের পর মঙ্গলবার রাতের শেষ ভাগে সেন্টমার্টিন থেকে সোহেল-মুন্না নামের ট্রলারটি থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতে সক্ষম হলেও যাত্রা ভেস্তে গেছে সামসু মাঝির ট্রলারের।

গত কয়েক দিন ধরে বাংলানিউজে মালয়েশিয়ায় আদম পাচারের ধারাবাহিক খবর প্রকাশের প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন তৎপর হয়ে ওঠায় ট্রলারটির যাত্রা ভেস্তে যায় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।



সরেজমিন অনুসন্ধানে বাংলানিউজ ইনভেস্টিগেটিভ টিমের পাওয়া তথ্য দিয়ে সর্বশেষ মঙ্গলবার প্রকাশ হয় ‘২৬৫ ভাগ্যান্বেষী নিয়ে রাতে ভাসবে সোহেল মুন্না, সামসুর বোট’।

এ খবর প্রকাশের পর প্রশাসন আরো তৎপর হয়ে ওঠে।   বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করে সাদা পোশাকের পুলিশ।

এমন অভিযানের মুখে ‘সোহেল-মুন্না’ বিলম্বিত সময়ে সেন্টমার্টিন ছাড়তে সক্ষম হলেও শাহপরীর দ্বীপের বদর মোকাম ঘাটে ভেস্তে যায় সামসু মাঝির ট্রলারটির নোঙর তোলার পরিকল্পনা।

এদিকে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর হোতা সেন্টমার্টিন বোট মালিক সমিতি সভাপতি আবু তালেবকে যে কোন সময় গ্রেফতার করা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ সূত্র। যদিও প্রশাসনের অনেকের সঙ্গে দহরম মহরম থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সহজ হবে না বলেও মনে করা হচ্ছে।

বাংলানিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, সেন্টমার্টিন ও শাহ পরীর দ্বীপ থেকে ট্রলারে করে ভাগ্যান্বেষীদের থাইল্যান্ড পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর মালয়েশিয়া সীমান্তে পৌছে দেওয়ার জন্য তাদের তুলে দেওয়া হয় দালালের হাতে।

এভাবে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোয় অভিজ্ঞ সেন্টমার্টিনস বোট মালিক সমিতি সভাপতি আবু তালেব। সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) বিএনপি সভাপতি সৈয়দ কাসিমের ছেলে ফয়েজের সঙ্গে তিনি গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী মানবপাচার সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেট গত বছর কালাম মাঝির ‘নোমান’ ও মুস্তাক মাঝির ‘বাবলু’ নামে দু’টি বোট পাঠিয়ে তাদের ব্যবসা পাকাপোক্ত করেন।

চলতি বছর তাদের বোট গেছে আরও চারটি। এর মধ্যে তাহের মাঝির ‘মুদিন’, ইউনুছ মাঝির ‘সাদেক’, আবু তালেবের নিজের বোট ‘কেফায়েত’ ও রশিদ মাঝির ‘রাসেল’ মালয়েশিয়া গেছে।

বাংলানিউজকে আবু তালেব বলেন, “গত সাত ডিসেম্বর সেন্টমার্টিনস থেকে সাদেক, রাসেল ও কেফায়েত নামের তিনটি ট্রলার মালয়েশিয়ায় পাঠিয়েছি। ”

এগুলোর মধ্যে সাদেকের ১১০ যাত্রী মালয়েশিয়া পৌছুলেও রাসেলের ৯৫ ও কেফায়েতের ১৬৫ যাত্রীর ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জানেন না বলে স্বীকার করেন আবু তালেব।

মালয়েশিয়ায় লোকের চালান নেওয়া সামসু মাঝি যাত্রা শুরুর আগে বাংলানিউজকে জানিয়েছিলেন, “আমাদের দায়িত্ব থাইল্যান্ড পর্যন্ত পৌছে দেওয়া। এ জন্য জনপ্রতি ৩৫ হাজার টাকা করে দিতে হবে। কারণ, থাইল্যান্ডে আমরা যাত্রীদের ওইদেশের দালালদের হাতে তুলে দিই। ওরা থাইল্যান্ড থেকে চুক্তিতে মালয়েশিয়া সীমান্তে পৌছে দেয়। এ জন্য খরচ নেয় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। অবশ্য এ টাকা এখন আমাদের দিতে হবে না। থাইল্যান্ড পৌঁছে টেলিফোনে যাত্রীদের মা-বাবার কাছ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা নেওয়া হবে। ”

তবে যাত্রা ভেস্তে যাওয়ার পর সামসু মাঝিকে পাওয়া যায় নি।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১২
সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।