ঢাকা: বাংলানিউজে প্রকাশিত ‘সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে এখন কেবলই সাধারণ’ শিরোনামে লেখাটিতে কিছু প্রশ্ন নিহিত। এর কিছু উত্তর আমার জানা।
আমি সাধারণ বিনিয়োগকারী নই। এ বিশ্বাসটুকু হয়েছে। আর আমি একেবারে একাও নই। বড় মানুষদের সঙ্গে নিয়ে বিনিয়োগ করি। পুরো বিষয়টিকে অর্থপূর্ণ করতে এখানে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন, সবাই জানি। শেয়ারবাজার বিনিয়োগকে একটি খেলার সাথে তুলনা করি (অনেকে বিষয়টিকে খেলাই বলেন), তবে কেউ যদি রুলস মেনে খেলে জয়ী হয়, তাকে তো দোষ দেওয়া যায় না।
সাধারণ, অসাধারণ ও ক্ষুদ্র --সব বিনিয়োগকারী এ খেলায় নামেন লাভের আশায়, সূর্য পূর্বদিকে ওঠার মতো সত্য একথা। আরেকটি সত্য হচ্ছে,লাভ হতে হলে- লস কারো না কারো তো হবেই। একথাও জানেন সবাই। আর খেলায় তো হারজিত আছেই।
সরাসরি যদি বলেন, বড়রা গ্যাম্বলিং করে, তাহলে আমি বলবো, আপনি যদি জেনেশুনে মার্কেটে প্রবেশ করেন, তাহলে আপনিও গ্যাম্বলিংয়ে সামিল হলেন। উদ্যেশ্য কি? লাভ করবেন, এইতো? আর যদি না জেনেশুনে বিনিয়োগ করেন এবং তা যদি হয় অতিমূল্যায়িত বাজারে, বিষয়টি কি আরো রিস্কি- আরো বড় গ্যাম্বলিং হলো না?
বাজারে অসাধারণরা অনেক অংক কষে চলেন, সাধারণরা তো আরো বুঝেশুনে চলবেন। সহজ নিয়ম সবাই জানে, পড়তি বাজারে বিনিয়োগ করুন, লাভ না হলেও লস সহ্যসীমায় থাকবে। আর লসে ঐ শেয়ার বিক্রি না করলে লাভ একদিন হবেই। মনে রাখবেন, সাধারণদের সাথে ‘লোন’ শব্দটা কোনোভাবেই যায় না।
সময়টা এখন বিনিয়োগের । সাধারণরা সব কোথায় ? এখন দেখেশুনে বিনিয়োগ করুন। আপনার লাভের গ্যারান্টি আমি দেবো। কি? সবই আছে, শুধু পুঁজি নেই? বড়ই আফসোস। সাধারণরা এখানেই নীরব। অথচ আমাদের মতো যারা, তারাই আবার বিনিয়োগ করবো এখন, একটা সহজ চক্রে আবর্তিত হবো আবার।
অসধারণরা চাই নিয়মের মধ্যে বিনিয়োগ করে সর্বোচ্চ লাভ। প্রয়োগ করি সর্বোচ্চ টেকনিক। নিজেদের সারভাইভালের স্বার্থে।
বাজারে মূল্য বাড়ানো বা কমানোয় নিজের নিয়ন্ত্রণ না থাকলে বাজার আমাকেই নিয়ন্ত্রণ করবে। আমরা তা হতে দিতে চাই না । আর সময়কে ঠিক মতো কাজে যদি না লাগাই, সাধারণ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে কয়েক পার্সেন্ট। বড় বড় বিনিয়োগ, বড় বড় লস, বড় বড় লাভ। সব কিছুই বড় বড়।
আমরাও চাই...সরকার বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্র্তৃক বাজার ব্যবস্থা স্বচ্ছ থাকবে। নিয়মকানুনগুলো থাকবে বাজারবান্ধব, যা হবে সব বিনিয়োগকারীর জন্য সমান। বিনিয়োগ হবে সুস্থ মার্কেটে। গ্যাম্বলিংয়ের স্কোপ যেন না থাকে। হাসছেন? ধর্মের কথা বলছি? যদি বিনিয়োগের হার অনুযায়ীও লাভ হয়, হোক না। তাওতো কম হবে না। নিয়মে টেনশন কম। ঘুম ভালো হয়।
মোজাম্মেল সাহেবের বর্তমান সময়ের জন্য আমি দু:খিত। তবে তিনি নিজেই বুঝতে পেরেছেন নিজের ভুল। আমার বিশ্বাস, তার মতো সবার যখন একই উপলব্ধি ও অভিজ্ঞতা, সেসব কাজে লাগালে, মার্কেট অস্বাভাবিক উত্থানপতন থেকে মুক্তি পাবে।
বানী একটাই....উঠতি মার্কেটে অতি উৎসাহিত হয়ে বিনিয়োগ, আর পড়তি মার্কেটে আতঙ্কিত হয়ে বিক্রি...দুটোই বর্জনীয়।
মোজাম্মেল হোসেনকে আবারো ধন্যবাদ, তার লেখায় অনুপ্রাণিত হয়েছি লিখতে, শেয়ারের কথা শেয়ার করতে।
একজন,
অসধারণ বিনিয়োগকারীর পক্ষে
বাংলাদেশ স্থানীয় সময ১৮২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১১