ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

এই মুহূর্তের বাজার...কিছু অভিজ্ঞতার বিচারে....

এস এম সালাউদ্দীন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১১
এই মুহূর্তের বাজার...কিছু অভিজ্ঞতার বিচারে....

ঢাকা: শেয়ারবাজার এই মুহূর্তে কেমন? স্থিতিশীলতার দিকে এগুচ্ছে? বাজার শুদ্ধিকরণে নেওয়া ফিল্টারগুলো কাজ করছে কিনা এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর করণীয়--প্রসঙ্গগুলোতে  পাওয়া অভিজ্ঞতার শেয়ার হবে এখন, যা বিনিয়োগকারীর উপলব্ধি আর বাজার বিশ্লেষকের অভিজ্ঞতার সমন্বয় মাত্র।  

মঙ্গলবার সকালে মিরপুরে একটি ব্রোকার হাউসে দেখা গেলো অস্থির বিনিয়োগকারীদের টাকা জমা দেওয়ার দীর্ঘ লাইন।

নতুন বিনিয়োগে ঝাঁপ দেওয়ার ধুন্ধুমার প্রস্তুতি। তবে লেনদেন শুরুর পর একটি শেয়ার কিনতে পেরেছেন (হয়তো পেরেছেন) এমন কারো দেখা মিললো না। কারণ, শুরুতেই প্রায় সব শেয়ারের বেচাকেনা সার্কিট ব্রেকারে গেলো আটকে।

ব্যস্ততা একটু কমে গেলে ঐ ব্রোকার হাউসের কয়েকজন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা হলো।   মাহমুদ কবির বললেন : ‘বাজার দেখতে এলাম। তবে আগের মতো হুটহাট বিনিয়োগ আর না। লস কাটিয়ে উঠলে বের হয়ে যাবো।   আর যদি কমে কেনার সুযোগ থাকে তো ব্যালান্স করবো। ’

বয়স্ক একজন বিনিয়োগকারী সিদ্দিকুর রহমান জানালেন, ‘বাজার এখন রোগা। ধরে দাঁড় করানো যাবে, তবে বেশীক্ষণ টিকবে না। আমি একজন ুদ্র বিনিয়োগকারী এবং  বড়ই হতাশ। ’  

আরেক বিনিয়োগকারী মাহবুব সোহেলের ভাষ্য ভিন্ন : ‘বিও অ্যাকাউন্ট করে রেখেছিলাম । আগে কোনো বিনিয়োগ করিনি।   এখন করবো, টাকা জমা দিলাম। মনে হয়, এই বাজারে বিনিয়োগ করলে লস যদিও হয় কম হবে। ’

এই মুহুর্তের বাজার নিয়ে কথা হলো দুজন বাজার-বিশ্লেষকের সঙ্গে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ : ‘বাজার মেরামতে সম্প্রতি নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো কাজ করছে কিনা বুঝতে হলে আরো দু’তিন দিন অপেক্ষা করতে হবে। বিনিয়োগ করা না করা যদিও একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার, অন্যের পরামর্শের ওপর অন্ধ নির্ভরতার স্থান এখানে নেই।    

মঙ্গলবার মাত্র ২০০ কোটি টাকার লেনদেনের ওপর মার্কেটের ভবিষ্যৎ বলা যায় না। যদিও এখানে সার্কিট ব্রেকার একটি বিষয় ...আগামী ২/৩ দিন পর লেনদেন আর ব্রেকারে ঠেকবে না যদি বাজার স্টেবল হয়।

তিনি আরও বললেন, ‘বাজার আগের পর্যায়ে রাতারাতি যাবে না। বিগত বছরগুলোর মতো ক্যাপিটাল গেইন ২০১১তে হবে না। তবে ভালো কোম্পানির শেয়ার যদি এখন বিনিয়োগকারীরা পোর্টফলিওতে রাখেন এই সহনীয় মার্কেট থেকে, লসের আশঙ্কাও থাকবে কম। ’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ওসমান ইমাম: ‘টুডেজ ট্রেড ইজ নট এনাফ টু  গেইন কনফিডেন্স লেভেল; ইট নিডস টু অর থ্রি মোর ডেইজ। কনফিডেন্স বিল্ড-আপের জন্য বেশি ভলিউমে ট্রেড প্রয়োজন। তখন বাজারকে কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখতে হবে না। ’

লসে শেয়ার সেল করবেন না, যদি না খুব প্রয়োজন পড়ে, বিনিয়োগকারীর প্রতি ব্রোকার হাউজগুলোর এ আহবানও আজ লক্ষ্য করেছি।

এছাড়া লেনদেন শুরুর প্রথম ৪ মিনিটে ১৩৭টি কোম্পানি আপার সার্কিট লেভেল টাচ করলো, এটাকে নরমাল ট্রেড বলা যায় না।

ুদ্র বিনিয়োগকারীরা প্রয়োজন মতো ফান্ডামেন্টাল দেখে পোর্টফলিও ব্যালান্স করতে পারেন, অথবা ওয়েট করতে পারেন। নরমাল কারেকশনের মধ্য দিয়ে মার্কের্টে স্থিতি আসতে পারে।

অস্থিরতা কাটিয়ে মার্কেট দ্রুত শান্ত-স্থির হবে-- বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীর সঙ্গে সবার প্রত্যাশার এমন প্রতিফলন ঘটবে--- যদি না অদূর অতীতের মতো কোনো অশুভ শক্তির পদভারে মার্কেট মুখরিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২৪০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।