ঢাকা: রাজধানীতে সংসদীয় আসন সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সংসদ সদস্যরা। বিশেষ করে ঢাকার বর্তমান সাংসদরা এ বিষয়ে বাংলানিউজের কাছে তাদের দু’রকম প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
আবার কেউ কেউ এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক চোখেই দেখছেন্।
এদিকে আসন কমানোর খসড়াও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। মে মাসেই কমিশন এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসবে। এরপরই চ’ড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
উল্লেখ্য, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহানগরীতে ১৫টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়েছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তা কমিয়ে ১০টিতে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের খসড়াও তৈরি হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন আসন কমানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী সংসদীয় সীমানা পুনর্নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মাস থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’
ঢাকা-৭ আসনের এমপি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, ‘সীমানা কীভাবে পুনর্নির্ধারিত হবে তা জানি না। তবে লালবাগে আর কোনো কাটাছেঁড়া এলাকাবাসী দেখতে চায় না। লালবাগবাসী একসঙ্গে মিলেমিশে তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়। ’
ঢাকার আরেক সংসদ সদস্য আসলামুল হক (ঢাকা-১৪) বলেন, ‘এমপি না হতেই আসন কেড়ে নিতে চায়। আইন হলে মানতে হবে। তবে ঢাকাতে দেশের শতকরা ৩০ ভাগ লোক বাস করে। এখানে ১৫টি আসন থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে জনগণ এগুলো কীভাবে নেয় তাও বিবেচনায় রাখা যেতে পারে। ’
সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা (ঢাকা-১৬) বলেন, ‘আসন কমলে কী লাভ হবে? এত বড় শহরে উন্নয়ন কাজ করতে গেলে এমপির সংখ্যা বেশি থাকা জরুরি। ’
তবে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন নন বলে তিনি বাংলানিউজকে জানান। তিনি বলেন, ‘উৎকণ্ঠার কী আছে। কে মনোনয়ন পাবেন তা ঠিক করবেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। ’
মিজানুর রহমান খান দীপু (ঢাকা-৬) বলেন, ‘এতদিন ঢাকায় মাত্র ৮ জন সংসদ সদস্য থাকায় কতটা উন্নয়ন হয়েছে আর এবার ১৫ জন মিলে কতটা উন্নয়ন করেছেন তা ঢাকার দিকে তাকালে বোঝা যায়। উন্নয়ন ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণে জনপ্রতিনিধি ১৫ জনই ঠিক আছে। বাকি সিদ্ধান্ত নির্বাচন কশিনের। ’
ঢাকা-৪ (শ্যামপুর) আসনের এমপি সানজিদা খানম মনে করেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতি সবার আস্থা রয়েছে। কারণ তারা বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে নিরপেক্ষতার প্রমাণ রেখেছে।
ঢাকা মহানগরীতে আওয়ামী লীগের বাইরে ২ জন এমপি রয়েছেন। ঢাকা-১৭ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ ও ঢাকা-৮ আসনে ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তবে তাদের দল দুটিও মহাজোটের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের অংশ।
এ ব্যাপারে রাশেদ খান মেনন বলেন, সর্বশেষ আদমশুমারি অনুসারে নির্বাচন কমিশন ঢাকা মহানগরীতে সংসদীয় আসন সংখ্যা পুনর্নির্ধারণ করতেই পারে। মতামত চাইলে আমরা কমিশনের কাছে আমাদের অভিমত তুলে ধরবো ।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, এলডিপি, জামায়াতে ইসলামী ও বিজেপিকে এ বিষয়ে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১১