ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

রাজশাহীর মহিলা মাদ্রাসায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ: পুলিশ জানতো না!

শরীফ সুমন, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১১
রাজশাহীর মহিলা মাদ্রাসায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ: পুলিশ জানতো না!

রাজশাহী: রাজশাহীতে নিষিদ্ধঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা আইনুল হকের জঙ্গি প্রশিক্ষণ চলতো দারুল হাদিয়া মহিলা আবাসিক মাদ্রাসায়। অথচ পুলিশ তা জানতোও না!

জানা যায়, রাজশাহী নগরীর উপশহর এলাকায় মহানগর পুলিশ কমিশনারের বাস ভবনের কাছেই ২০০৯ সালে মাসিক ১২ হাজার টাকায় ৩ নম্বর সেক্টরের ১৯৯/১ নম্বরের দোতলা তলা বাসায় এ মাদ্রাসা গড়ে তোলেন আইনুল হক।



সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারি কোনো অনুমোদন ছিল না মাদ্রাসাটির। তবে পুলিশ কমিশনারের বাসভবনের পাশের এ বাড়িতেই জঙ্গি প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য তৎপরতা চালাতেন আমিনুল। নগরীর চারদিকে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকলেও পুলিশ বিষয়টি টের পায়নি।

গত রোববার রাতে ঢাকার কেরানিগঞ্জের আটিবাজার এলাকা থেকে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার এই জঙ্গি আস্তানার বিষয়টি সবার নজরে আসে। হুজির অন্যতম শীর্ষ নেতা মাওলানা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া সহযোগী আইনুল হক ওই বাসায় মেয়েদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিতেন।

বুধবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, এখনো ওই বাড়ির গেটে ঝুলছে মাদ্রাসার বিশাল সাইনবোর্ড। তবে, সেখানে মাদ্রাসায় কাউকে পাওয়া যায়নি। বাড়িটির উপর তলায় বসবাসরত বাসিন্দারা জানান, কয়েকদিন ধরে এখানে আর কেউ আসেন না। মাদ্রাসায় ছুটি চলছে বলে তারা তালা লাগিয়ে চলে গেছেন।

স্থানীয় সূত্রগুলি জানায়, দারুল হাদিয়া মহিলা আবাসিক মাদ্রাসার সাইনবোর্ড ঝোলানো বাড়িটিকে ঘিরে সবার মধ্যেই দীর্ঘদিন ধরে নানা কৌতুহল ছিল। মাদ্রাসার নামে ওই বাড়িতে বোরখাপরা নারী ও কিছু জামায়াতনেতার আনাগোনা খেয়াল করেছেন অনেকেই। বাড়ির ভেতরে কিছু একটা অস্বাভাবিক কর্মকা-  ঘটছে, এমন সন্দেহ ছিল সবার মনেই। তবে সন্দেহ দানা বাঁধলেও তা যে জঙ্গি প্রশিক্ষণের মত বিষয়, তা আঁচ করতে পারেনি কেউ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, ওই বাড়িতে ভোর ৪টার পর থেকে চলতো ইসলামী তালিম। এছাড়া গভীর রাতে মেয়েদের আর্ত চিৎকারের শব্দও পাওয়া যেত।

এর আগে স্থানীয় পত্রিকায় এ মাদ্রাসার বিষয়ে খবর প্রকাশিত হলেও তদন্ত করে রাজশাহী মহানগর  গোয়েন্দা বিভাগ থেকে বলা হয়েছিল, বাড়িটি একটি মাদ্রাসা মাত্র। সেখানে জঙ্গি প্রশিক্ষণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে, ওই মাদ্রাসার সুপার হুজি নেতা আইনুল হক কেরানীগঞ্জে গ্রেপ্তার হওয়ার পর এখন পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন নতুন করে বাড়িটির খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছেন। বর্তমানে বাড়িটি কড়া নজরদারিতে রেখেছেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।

এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর) কামরুল আমিন বাংলানিউজকে জানান,  বিষয়টি তিনি পত্রিকায় দেখেছেন।

তিনি বলেন, ‘আইনুল রাজশাহীতে থাকতেন, এমন তথ্য পুলিশ আগে জানতো না। জানলে সে আগেই  গ্রেপ্তার হতো। তবে বর্তমানে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে দেখছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।