ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

সুরমার মৃত্যুঘণ্টা পলিথিনে!

নাসির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৯ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৫
সুরমার মৃত্যুঘণ্টা পলিথিনে! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: সিলেটের সুরমা নদীর মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেছে অপচনশীল পলিথিন দূষণে! দূষণ এত ব্যাপক ভয়াবহ যে, এটির পানি এখন ব্যবহারের অযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।

শুধু তাই নয়, ‘নগরীর ডাস্টবিন’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সিলেটের সুরমা নদীকে।

পলিথিনে সয়লাব নদীগর্ভ। দেখলে মনে হবে, এ যেন পলিথিনের ‘অ্যাকোরিয়াম’!

দেখা গেছে, সুরমা নদীর তীরে ফেলা হচ্ছে, নগরীর ব্যবহৃত পলিথিন। বাতাসের কারণে এ সব নিষিদ্ধ পলিথিন স্তূপ থেকে উড়ে উড়ে নদীগর্ভে স্থান করে নিচ্ছে।

ঘটনাটি সবার চোখের সামনে ঘটলেও আমলে নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আর পরিবেশবাদীরা ‘নদী বাঁচাও আন্দোলন’-এ সোচ্চার হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (Bangladesh Environmental Lawyers Association) (BELA/বেলা) সিলেটের বিভাগীয় সমন্বয়কারী সাহিদা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, নদী দূষণ আইনত দণ্ডনীয়। আর পলিথিন ফেলে দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, পলিথিন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আবর্জনা নদীতে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত জঘন্য। তাই, নদী বাঁচাতে আগে থেকেই উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

তিনি বলেন, সুরমার দুষণ রোধে জনগণকে সচেতন হতে হবে। প্রত্যেক মানুষকে পরিবেশবাদী হয়ে কাজ করতে হবে। তা না হলে শুধুমাত্র কোনো সংগঠন দিয়ে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নারায়ণ সাহা বাংলানিউজকে বলেন, পলিথিন দূষণ তো ভয়াবহ অবশ্যই। এটাকে ম্যানেজমেন্টের (ব্যবস্থাপনা) আওতায় এনে নির্দিষ্ট একটি জায়গায় পলিথিন ফেলা এবং এগুলোকে রিসাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

পাশাপাশি পলিথিন ব্যবহারের বিকল্প কোনো উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

তিনি বলেন, পলিথিন নদীগর্ভে যাওয়ার ফলে জলজ উদ্ভিদ ও মাছের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে। সেই সঙ্গে এক সময় এটি জলাবদ্ধতার মতো অবস্থা তৈরি করতে পারে।

নারায়ণ সাহা জানান, অবাধে নদীতে পলিথিন পতিত হওয়ার ফলে পরবর্তীতে নদীভরাটসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। সে কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এখনই নদীরক্ষায়, পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষায় নদীকে পলিথিন মুক্ত করা জরুরি।

এর সঙ্গে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টিও জড়িত রয়েছে। সে জন্য একে আর উপেক্ষা করা যাবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।