শ্রীমঙ্গল: এ পাখির সঙ্গে এক রকম ভালোবাসা রয়েছে আমার। আমি প্রায়ই এই পাখিগুলোকে দেখার জন্য চা বাগানের একটি নির্দিষ্ট স্থানে যাই।
কানাকোকা পাখির ডাক, কুপ-কুপ-কুপ। আবার কখনও কুরুক-কুরুক-কুরুক। এ যেন অপূর্ব আহ্বান। চা বাগানের নির্জন স্থানে কানাকোকার ডাকে পূর্ণতা ফিরে পায়। লাফিয়ে লাফিয়ে উড়ে মানুষকে চমকে দেয়।
স্থানভেদে অনেকগুলো নাম রয়েছে কানাকোকার। বাংলা কুবো, কানকুয়া, কুক্কা, ছোট কোকা, কুক্কাল, কানাকুক্কা ইত্যাদি। ইংরেজি নাম Lesser Coucal। এদের দৈর্ঘ্য ৩৩ সেন্টিমিটার এবং ওজন ১২০ গ্রাম। প্রজনন মৌসুমে পিঠ তামাটে এবং দেহতল কালো হয়। মার্চ-অক্টোবর এদের প্রজনন সময়।
কাক গোত্রের দারুণ শিকারি পাখি কানাকোকা। এরা আড়ালে থাকতে পছন্দ করে। অন্য পাখিরাও এদের কাছ থেকে নিজেদের বাচ্চা ও ডিম লুকিয়ে রাখে। কাঁঠবিড়ালির ছানা এদের প্রিয় খাবার। তবে ছোট সাপ, ব্যাঙ, গিরিগিটি, অন্য ছোট পাখির ডিম এবং বাচ্চাও খায় এরা। মাটি খুঁড়ে কেঁচো ধরে এনে নিজের বাচ্চাকে খেতে দিতে কানাকোকা বেশ পটু।
কানাকোকার শরীর কুচকুচে কালো। ডানা দু’টি লালচে-বাদামি। কিন্তু ডানার নিচের ঢাকনি ও পালক কালো। যা অন্য প্রজাতির পাখি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। চোখ গাঢ় লাল ও ঠোঁট কালো। পা, পায়ের পাতা এবং নখ হালকা কালো। এরা ওড়ার চেয়ে বেশি পছন্দ করে দৌড়াতে। নির্জন বন, জঙ্গল, ঝোপঝাড়, চা বাগান, উঁচু ঘাসের জমিতে এরা বিচরণ করে থাকে।
পৃথিবীর ২৬ প্রজাতির মধ্যে বাংলাদেশে দুই প্রজাতির কানাকোকা পাওয়া যায়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় এদের দেখা যায়। ছেলে এবং মেয়ে পাখির মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় না।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৫