দারুণ ওষুধিগুণের অধিকারী ‘কাঁটালেবু’। যুগ যুগ ধরে অসমৃণ দেহে গোল বৃত্তের অবয়ব হয়েছে কালচে সবুজ, নিজের উপস্থিতি জানান দিয়েছে পৃথিবীকে।
ভেষজ চিকিৎসায় এ ফলের রস অতুলনীয় বলে জানা যায়। মাথাব্যথা নিরাময়ে এর ভূমিকা অনেকটা অব্যর্থ। তীব্র অথবা সাধারণ মাথাব্যথা দূর করতে এর জুড়ি নেই।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের সিদ্দিকীবাদ ফ্রুটস ভ্যালীতে না এলে অন্য ফলদগাছের মতো লেবুর এতো প্রজাতি রয়েছে তা জানাই হতো না। তিল তিল করে বাগানটি গড়ে তুলেছেন বৃক্ষপ্রেমী মুনিম সিদ্দিকী। বাগানে রয়েছে অনেক দুর্লভ ফলের প্রাকৃতিক হাসি।
‘কাঁটালেবু’ সম্পর্কে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এই লেবুকে আমাদের অঞ্চলে ‘কাঁটাজামির’ বলে। কাঁটালেবু আকারে মাল্টার মতো হলেও তার চামড়া মসৃণ নয়। রং ঘনসবুজ বা কালচে-সবুজ হয়। এই লেবুগাছে প্রচুর কাঁটা হওয়ায় এর নামকারণ কাঁটা জামির হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কমবেশি কাঁটা অবশ্য সব লেবুগাছেই ছিল। এখন বংশবৃদ্ধির জন্য কলম থেকে কলম, তার থেকেও কলম হতে হতে লেবু গাছের গা থেকে যেমন কাঁটা গায়েব হয়ে যাচ্ছে, তেমন লেবুর ভিতর থেকে বীজও গায়েব হয়ে যাচ্ছে। এই কলমের কারণে বীজ আর কাঁটার সঙ্গে সঙ্গে লেবুর ভিতরের আর কি কি উপাদান গায়েব হয়ে যাচ্ছে তা বোঝা মুশকিল।
কাঁটালেবু খাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাঁটালেবু দিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়া যায়। চামড়া কোনো অবস্থায় খাওয়া যায় না। কারণ চামড়ায় এসিডের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। তবে সবচেয়ে উপকারী রস কাচের বোতলে সংগ্রহ করে রাখা। কাঁটালেবু তো সবসময় পাওয়া যায় না, তাই এর রস বোতলে সংগ্রহ করে রাখলে জ্বরজনিত মাথাব্যথা দূর করতে এটি দারুণ উপকারী।
বাল্য স্মৃতিচারণ করে মুনিম সিদ্দিকী জানান, কাঁটালেবু আমাদের পরিবারের ট্রেডিশনাল একটি ওষুধি ফল। আমি ছোটবেলায় দেখেছি আম্মা কাঁটালেবু কালেকশন করে তার রস চিপে বের করে বোতলে ভরে রাখতেন। কারও মাথাব্যথা শুরু হলে এই বোতলের রস কাপড়ে ভিজিয়ে কপালে একটুখানি ডলে দিয়ে তারপর ওই কাপড়টি কপালেই রেখে দিতেন। ধীরে ধীরে মাথাব্যথা দূর হয়ে যেত।
** ‘কলম্বো লেবু’র দারুণ সুঘ্রাণে
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৭
বিবিবি/এএ