উজান থেকে নেমে আসা পানির সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত পরিস্থিতিকে ক্রমেই খারাপের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ব্রক্ষ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মাসহ মধ্যাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রক্ষ্মপুত্র নদের পানি সমতল স্থিতিশীল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। গঙ্গা-পদ্মার পানি বৃদ্ধি আগামী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টা পানি হ্রাস অব্যাহত থাকতে পারে সুরমা-কুশিয়ারায়।
বুধবার (১৬ আগস্ট) সকাল ৯টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৯০টি স্টেশনের মধ্যে ২৯টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন সকালে বাংলানিউজকে বলেন, কুমিগ্রামসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের পানি কমতে শুরু করেছে। তবে যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে সিরাজগঞ্জে নিচের দিক প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি ২০ সেমি কমে বিপদসীমার ৭৬ সেমি, বদরগঞ্জে যমুনেশ্বরী নদীর পানি ৩ সেমি বৃদ্ধি পেয়ে ১৪৫ সেমি, গাইবান্ধায় ঘাঘট নদীর পানি স্থিতিশীল হয়ে বিপদসীমার ৮৩ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ব্রক্ষ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ১১ সেমি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩ সেমি, চিলমারী পয়েন্টে ৮ সেমি কমে ৭৯ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
যমুনা নদীর পানি বাহাদুরবাদে ১ সেমি বেড়ে বিপদসীমার ১৩৪ সেমি, কাজীপুরে ১৬ সেমি বেড়ে ১৫১ সেমি, সারিয়াকান্দিতে ৯ সেমি বেড়ে ১২৬ সেমি, সিরাজগঞ্জে ২০ সেমি বেড়ে ১৪৮ সেমি ও আরিচায় ২৩ সেমি বেড়ে ৫৯ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আত্রাই নদীর পানি বাঘাবাড়িতে ২৯ সেমি বেড়ে বিপদসীমার ৭৯ সেমি, ধলেশ্বরীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ২৪ সেমি বেড়ে ৯৩ সেমি, লুখাই নদীর পানি লক্ষ্মীপুরে ৩ সেমি বেড়ে ২০ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আত্রাই নদীর পানি মহাদেবপুরে ২৬ সেমি বেড়ে বিপদসীমার ৭৯ সেমি উপর দিয়ে বইছে।
মধ্যাঞ্চলে পদ্মা নদীর পানি গোয়ালন্দে ২১ সেমি বেড়ে বিপদসীমার ৭৭ সেমি, বাঘাইকুলে ১৭ সেমে বেড়ে ১৫ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে সুরমা-কুশিয়ারার পানি কমতে শুরু করেছে। সুরমার পানি কানাইঘাটে ১০ সেমি কমে বিপদসীমার ৮৫ সেমি, সিলেটে ১৪ সেমি কমে ৩০ সেমি, সুনামগঞ্জে ১২ সেমি কমে ৫৭ সেমি উপর দেয় বইছে।
এদিকে কুশিয়ারার পানি শেওলায় ১ সেমি বেড়ে বিপদসীমার ৭৪ সেমি, শেরপুর-সিলেটে ৩ সেমি উপর দিয়েছে প্রবাহিত হচ্ছে।
পুরাতন সুরমার পানি জারিয়াজঞ্জালে ২৪ সেমি কমে বিপদসীমার ১৩৮ সেমি, তিস্তা নদীর পানি ১০ সেমি বেড়ে ১৩ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে। এর ফলে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি আর ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বাংলানিউজকে বলেন, চলমান বৃষ্টিপাত বৃহস্পতিবার থেকে কমতে শুরু করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৭
এমআইএইচ/জেডএম