ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পেছনে মানুষের কর্মকাণ্ড দায়ী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২১
পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পেছনে মানুষের কর্মকাণ্ড দায়ী

ঢাকা: পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পেছনে মানুষের অনিয়ন্ত্রিত কর্মকাণ্ড সবচেয়ে বেশি দায়ী। কারণ পৃথিবীতে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণের সমন্বয়ে যে বাস্তুতন্ত্র গড়ে উঠেছে, তার একটি উপাদান ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাস্তুসংস্থানের ভারসাম্য সামগ্রিকভাবে বিনষ্ট হয়।

ধরিত্রী দিবসে পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা রক্ষা ও পুনরুদ্ধারের দাবিতে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন-পবা’র আয়োজনে  বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল ) অনলাইনে জুম প্লাটফর্মে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে ও সম্পাদক মেসবাহ সুমনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছে এবং এসব উন্নয়ন করতে যেয়ে আমাদের ইকোসিস্টেমের বেইজকে ধ্বংস করে দিচ্ছি। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে যেয়ে জলাধার ধ্বংস করে ফেলছি। নদীর গতি পরিবর্তিত হয়েছে। যার ফলে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে। বায়ুদূষণের কারণে ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশ ও প্রতিবেশ মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে।
 
বক্তারা আরও বলেন, দেশের নদী ও জলাধারসমূহ শেষ হয়ে যাচ্ছে, মৃত ও ভরাটকৃত নদী-জলাশয় হয়তো ফিরাতে পারবো না, কিন্তু কৃষি উৎপাদনকে প্রাকৃতিকভাবে উন্নত করতে পারি। নদীর দূষণ রোধ করতে পারি। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নদী দখল, দূষণ হচ্ছে ও ভরাট হচ্ছে। যারা এসব অবৈধ কাজ করছে, তারা অত্যন্ত ক্ষমতাশালী। যারা আইন অমান্য করছে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।  

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী ও পরিবেশ বার্তার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল।

আলোচনা সভায় বক্তারা আরও বলেন, করোনা আমাদের বড় সংকেত দিয়েছে সেটা হলো সভ্যতার হ্রাস টেনে ধরতে হবে, প্রকৃতির সঙ্গে মানিয়ে আমাদের কর্মকাণ্ডকে তৈরি করতে হবে। ইকোসিস্টেমকে ভাঙা যাবে না। জড়বস্তুর বিন্যাস তাকেও ভাঙা যাবে না। বিজ্ঞান এবং পরিবেশের সূত্র অনুযায়ী যেভাবে পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষা করা যায় সেভাবে প্রকৃতির পাশে দাঁড়িয়ে রক্ষা করতে হবে। পরিবেশ প্রতিবেশ এবং বাস্তুসংস্থানের স্বাভাবিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
 
উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কিন্তু একইসঙ্গে পরিবেশ ও ইকোসিস্টেম বজায় রেখে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। টেকসই উন্নয়নে প্রয়োজন ‘পরিবেশ-বান্ধব উন্নয়ন নীতি’। ‘ইকো-সিস্টেম’-এর ক্ষতি করে যে ‘প্রবৃদ্ধি' আসে তা আসলে ‘টেকসই উন্নয়ন' নয়। টেকসই উন্নয়নের জন্য, অর্থনৈতিক স্থিতি অর্জনের জন্য একমাত্র পরিবেশ-বান্ধব নীতি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।  

আমাদের জীব বৈচিত্র্যের আধার হলো বন জঙ্গল, যার ধ্বংস ফলে ইকোসিস্টেম ধ্বংস হচ্ছে। পাহাড় ধ্বংস করে পানির ধারা ধ্বংস হচ্ছে, গাছপালা ধ্বংস হচ্ছে, গাছপালা বিনষ্টের ফলে বিভিন্ন পশু-প্রাণি ধ্বংস হচ্ছে। অপরিকল্পিত শিল্প দূষণের ফলেও ইকোসিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদেরকে প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনে ও ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। এছাড়া নবায়নযোগ্য শক্তির উপর জোর দিতে হবে। আর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে নিজেদের অশেষ ভোগের বাসনা।  

বাংলাদেশ সময়: ০২৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২১
এমআইএস/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।