ঢাকা, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

ক্রিকেট

বিশ্বকাপের আগে আফগান সিরিজ থেকে কী পেল বাংলাদেশ?

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৪ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
বিশ্বকাপের আগে আফগান সিরিজ থেকে কী পেল বাংলাদেশ? ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টিতে হোয়াটওয়াশ। আয়ারল্যান্ডকে উড়িয়ে দেওয়া।

ঘরে বাইরে গত কয়েকমাস সাদা বলের ক্রিকেটে বলতে গেলে দারুণ সময়ই কাটছিল বাংলাদেশের। তবুও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটা ছিল একটু বেশিই গুরুত্বপূর্ণ।  

কেননা কদিন পরেই যে এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ। তার আগে রশিদ-মুজিব-নবীতে সাজানো বিশ্বমানের স্পিন ত্রিফলাকে খেলে প্রস্তুতি নিতে পারা মানে তো ফাইনালের আগে টেস্ট পরীক্ষায় নিজেদের যাচাই করার মতো সুযোগ!

কিন্তু সেই পরীক্ষায় যেন ঢাহা ফেল নাজমুল হোসেন শান্ত-আফিফ হোসেনরা। এই সিরিজ জিতে সুখ স্মৃতি নিয়ে এশিয়া কাপ আর বিশ্বকাপের মঞ্চে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল বাংলাদেশ, সেখানে এই সিরিজটা কি না উপহার দিল দুঃস্বপ্ন! শেষ ওয়ানডেতে হারাতে পারলেও ট্রফি লিটন দাসের হাতে নয়, উঠেছে হাশমতউল্লাহ শহীদিদের হাতেই।

জয়ের অভ্যাস থেকে বেরিয়ে বাজেভাবে হারা এই সিরিজ থেকে আসলে কিছুই কি পেল বাংলাদেশ। সেটির ময়নাতদন্ত একবার হয়ে যাক!

দুটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের আগে এই সিরিজে সুযোগ ছিল তামিম ইকবালের ফিটনেস যাচাই করা। সুযোগ ছিল টিমের সাত নম্বরে কে স্থায়ী হবে তা যাচাইয়ের। এ সিরিজে ফিরতে পারতেন ফর্মহীন ক্রিকেটাররা। বোলিংয়ে যাচাই করা যেত শক্তিমত্তা। কিন্তু কিছুতেই যেন কিছু হলো না।  

চোটের কারণে টেস্ট থেকে ছিটকে পড়া তামিম ঠিকই ফিরেছিলেন ওয়ানডেতে। কিন্তু প্রথম ম্যাচে খারাপ পারফরম্যান্স, দ্বিতীয় ম্যাচের আগে অবসর নিয়ে তামিম নামক কাল বৈশাখী ঝড়ে অনেকটাই ছন্নছাড়া ছিল দেশের ক্রিকেট। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবসর ভেঙে তামিম ফিরেছেন ঠিকই তবে ফেরা হলো না আফগান সিরিজে।  

সুযোগ ছিল তামিমের অবর্তমানে দলের ওপেনিং কম্বিনেশন যাচাই করার। তাও হলো না আর। ওপেনিং এ সুযোগ পেয়ে নাঈম শেখ নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। দুই ম্যাচে ৯ রান করা নাঈম যেন নিজেই বার্তা দিলেন ‘বিশ্বকাপ তার জন্য নয়’।


শেষ ম্যাচে ফিফটি করে দলকে জেতালেও প্রথম দুই ম্যাচে কথা বলেনি লিটন দাসের ব্যাট। এর পাশাপাশি লিটনের এপ্রোচ নিয়েও কথা হচ্ছে। দ্বিতীয় ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে শেষ ১০ ম্যাচে ২০-২৫ এর ব্যাটিং গড় বর্তমান ক্রিকেটে ভালো দাবি করে যেন কিছুটা নেতিবাচক বার্তাই দিলেন এই ব্যাটার।

দলের সাত নম্বর স্থানটি নিয়ে কোনো সমাধানই খুঁজে পাচ্ছে না বিসিবি। টানা তিন সিরিজ অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বাহিরে রেখে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে টিম ম্যানেজন্ট। কিন্তু কোনো সমাধানই আসেনি। রিয়াদের পরিবর্তে ইয়াসির আলী রাব্বির পর আফিফ হোসেনও এ জায়গায় ব্যর্থ। চলতি সিরিজে আফিফ করেছেন মাত্র ৪ রান। যদিও শেষ ম্যাচে ব্যাট হাতে মাঠে নামার সুযোগ হয়নি তার।

প্রশ্ন আছে আরও অনেক। যে পেস বোলিং নিয়ে টেস্টে আফগানদের ঘুম হারাম হয়েছে, সেই বোলিং ইউনিটই কি না ওয়ানডেতে এসে বিবর্ণ। শেষ ম্যাচে বোলাররা দাপট দেখালেও আগের দুই ম্যাচে অনেকটাই ফিকে ছিল বোলারদের পারফরম্যান্স। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সমতা ফেরানো সুযোগ থাকলেও উল্টো রান পাহাড়ে চাপা পড়ে টাইগাররা।

বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপের দলের হতশ্রী পারফরম্যান্স ভাবাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। শেষ ম্যাচ জিতে ধবল ধোলাই হয়তো এড়ানো গেল কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায় বাংলাদেশ কী পেল এ সিরিজ থেকে?


বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘন্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
এমআর/টিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।