‘চোকার্স’— আপনার হয়তো বুঝতে বাকি নেই শব্দটি কোন দলের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি খাটে৷ হ্যাঁ, আরও বৈশ্বিক মঞ্চে হৃদয় ভাঙার গল্প লিখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। গত জুনেই ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবার ফাইনালে উঠে ভারতের কাছে হেরেছে দেশটি।
দুই দলের ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা ছিল আগেও। কিন্তু কখনোই শিরোপা জেতা হয়নি। তাই আগেই নিশ্চিত হয় এবার নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের দেখা মিলবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলা দক্ষিণ আফ্রিকার আক্ষেপ বাড়িয়ে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শিরোপা উল্লাসে মাতে নিউজিল্যান্ড৷
এভাবেও যে রূপকথা লেখা যায়, তা প্রমাণ করে দেখাল কিউই মেয়েরা। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তাদের গোনায় ধরার মতো লোক খুব বেশি ছিল না। টানা ১০ ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপে এলে সেই দলটির ওপর কজনই বা আস্থা রাখতে চাইবেন। অথচ সেই নিউজিল্যান্ডই কিনা এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।
সোফি ডিভাইন, সুজি বেটস ও লিয়া তাহুহু— ক্যারিয়ারের শেষবেলায় এসে পেলেন শিরোপার স্বাদ। সেজন্য হয়তো আজীবন অ্যামেলিয়া কেরকে ধন্যবাদ জানাবেন তারা। ২৪ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার ফাইনালে আলোকিত করেন নিজেকে। ব্যাটিংয়ে দলীয় সর্বোচ্চ ৪৩ রান করার পর বল হাতে শিকার করেন মূল্যবান ৩ উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ১৫৮ রানের পুঁজি দাঁড় করায় কিউইরা। শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি তাদের। দলীয় ১৬ রানে ফিরে যান জর্জিয়া প্লিমার (৯)। আরেক ওপেনার সুজি বেটস ৩১ বলে ৩ চারে আউট হন ৩২ রানে। অধিনায়ক সোফি ডিভাইনও (৬) থিতু হতে পারেননি। পরে ব্রুক হ্যালিডেকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৫৭ রানের জুটি গড়েন।
২৮ বলে ৩ চারে ৩৮ রান করে ফিরে যান হ্যালিডে। কের ৩৮ বলে ৪ চারে করেন ৪৩ রান। শেষে ৬ বলে ১২ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ম্যাডি গ্রিন। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৩১ রানে দুটি উইকেট নেন ননকুলুলেকো এমলাবা।
তাড়া করতে নেমে ৯ উইকেটে ১২৬ রানে থামে প্রোটিয়ারা।
পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৭ রান তোলে তারা। তবে স্নায়ুচাপ ধরে রাখে ঠিক পরের ওভারেই ম্যাচে ফেরে নিউজিল্যান্ড।
তাজমিন ব্রিটসকে (১৭) ফিরিয়ে ৫১ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ফ্রান জোনাস। এরপর দশম ওভারে এসে জোড়া শিকার করেন অ্যামেলিয়া কের। বিপজ্জনক হতে থাকা লরা ভলভার্টকে তুলে নিয়ে প্রোটিয়া শিবিরে স্বস্তি আনেন তিনি। একই ওভারের শেষ বলে ফেরান আনেক বোশকে।
দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে আর দাঁড়াতেই পারেনি প্রোটিয়ারা। কিউইদের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ের সামনে ধস নামে তাদের ব্যাটিং লাইনআপে। কিউইদের হয়ে কেরের পাশাপাশি সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট নেন রোজম্যারি মেয়ার। জোনসসহ একটি করে উইকেট পান হ্যালিডে ও ইডেন কারসন।
ফাইনালে দারুণ ঝলক দেখানো কের আসরজুড়েই ছিলেন ধারাবাহিক। ব্যাট হাতে ১৩৫ রানের পাশাপাশি বোলিংয়ে ১৫ উইকেট শিকার করেন এই অলরাউন্ডার। তাই ফাইনাল সেরার মতো টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারও উঠেছে এই অলরাউন্ডারের হাতে।
বাংলাদেশ সময়
এএইচএস