ফতুল্লা থেকে: পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে এক উইকেটে জয় পেয়েছে বিসিবি একাদশ। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে সাত বল বাকি থাকতেই পাকিস্তানের দেয়া ২৬৯ রান টপকে যায় মুমিনুল হকের দল।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে এদিন আসল কাজটি করে গিয়েছিলেন সাব্বির রহমান। ৮১ রানে চার উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলকে টেনে নিয়ে গেছেন ২১৩ রান পর্যন্ত। ১২৩ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গেছেন এই ব্যাটসম্যান। আর সাব্বিরকে দারুণ সঙ্গ দেন ইমরুল কায়েস। এরা দু’জনে মিলে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১২৪ রান যোগ করেন।
তবে সাব্বির-ইমরুলের বিদায়ের পর শুভাগত ও মুক্তার আলীও দ্রুত ফিরে গেলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নেয় পাকিস্তান দল।
উইকেট হাতে দুটি, তখনও জয় থেকে ৩১ রান দূরে স্বাগতিক দলটি। সাব্বির যেটুকু কাজ বাকী রেখে গিয়েছিলেন সেটি ঠিকই সেরেছেন সোহাগ গাজী। জয়ের বন্দরে পৌঁছার ১০ রান আগে জুনায়েদ খানের বলে সোহাগ গাজী ২৮ বলে ৩৬ রান করে বিদায় নিলে ফের ম্যাচে চলে যায় পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রনে। তবে স্বাগতিক দলের শেষ উইকেট জুটি জয় তুলে নিতে কোনো ভুল করেননি।
মো: শহীদ ১২ ও তাইজুল ইসলাম ৮ রান করে অপরাজিত থেকেছেন।
১৯৯৯ বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশের কোনো দল। অবশেষে বিসিবি একাদশের হাত ধরেই ১৬ বছর পর জয় পেল স্বাগতিকরা।
পাকিস্তানের পক্ষে ৩৮ রানে চার উইকেট নেন জুনায়েদ খান।
এর আগে টস জিতে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশকে ২৬৯ রানের লক্ষ্য বেধে দেয় পাকিস্তান। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হয় সকাল সাড়ে ৯টায়।
ভালো সূচনা করে বড় সংগ্রহের আভাস দিচ্ছিলো পাকিস্তান দলের দুই ওপেনার মোহাম্মদ হাফিজ ও আজহার আলী। ওপেনিং জুটিতে ৬৬ রান যোগ করার পর মুক্তার আলীর বলে ২৭ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন আজহার।
তবে হারিস সোহেলকে সঙ্গে নিয়ে বড় সংগ্রহে চোখ রাখেন হাফিজ। দলীয় ১৩০ রানের মাথায় শুভাগত হোম হারিস সোহেলকে (২৩) ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন। আর দলীয় ১৮৫ রানে ব্যক্তিগত ৮৫ রান করে হাফিজ শুভাগত হোমের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন।
এর পরই ভেঙ্গে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন-আপ। ১৮৫ থেকে ২০৩ রানে পৌঁছাতে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারীরা।
ফাওয়াদ আলমের অপরাজিত ৬৭ রানের সুবাদে শেষ পর্যন্ত ২৬৮ রানের লড়াকু স্কোর গড়ে পাকিস্তান দল। দশম উইকেট জুটিতে ফাওয়াদ আলম ও সাঈদ আজমল যোগ করেন ৪০ রান। আজমল ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
বিসিবি একাদশের হয়ে শুভাগত হোম তিনটি উইকেট দখল করেন। এছাড়াও মোহাম্মদ শহীদ, মুক্তার আলী, জুবায়ের হোসেন ও সোহাগ গাজী একটি করে উইকেট লাভ করেন।
প্রস্তুতি ম্যাচ হলেও বুধবার গ্যালারীতে ছিল আন্তর্জাতিক ম্যাচের আবহ। সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে স্টেডিয়ামের গেট খুলে দিতেই ভেতরে ঢোকার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে স্থানীয় দর্শকরা। বৈশাখের শুরুতে তীব্র তাপদাহের মাঝেও ম্যাচটি উপভোগ করছেন তারা।
বিসিবি একাদশে এই ম্যাচে ছিলেন জাতীয় দলের পাঁচ ক্রিকেটার। এরা হলেন রনি তালকুদার, মুমিনুল হক, তামিম ইকবাল, সাব্বির রহমান ও আবুল হাসান রাজু। সদ্য বাদ পড়া ইমরুল কায়েস, তাইজুল ইসলাম, আল-আমিন হোসেনরাও ছিলেন বিসিবি একাদশে।
আগামী শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রথম ওয়ানডে। এমন আত্নবিশ্বাস জাগানিয়ে জয় জাতীয় দলকেও নিশ্চয়ই উজ্জীবিত করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৫
এসকে/এমএমএস