ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

প্রাণের টানে, খেলার মাঠে

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০১ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৫
প্রাণের টানে, খেলার মাঠে ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মিরপুর থেকে: মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ জুটি তখন মিরপুরের ২২ গজে রানের ‘বাণ’ তুলেছে। বাংলাদেশের পতাকা দিয়ে বানানো লম্বা টুপি আর ঘাড়ের উপর পতাকা রেখে বেশ উপভোগ করছিলেন শামস রশিদ জয়।

সঙ্গে আসা তার ভাগ্নি বুশরা ও বুশরার বন্ধু সৌরভকে বোঝাচ্ছিলেন টেস্ট ম্যাচের খুঁটিনাটি বিষয়।

বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্টে টাইগারদের নিয়ে প্রত্যাশা কি? জানতে চাওয়ার সঙ্গেই শামস রশিদের উত্তর, ‘অবশ্যই জয়। বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টেও জয়ের প্রত্যাশা নিয়েই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে গিয়েছিলাম। প্রথম ইনিংসে চার’শ রান করে সেটা প্রমান করেছিলাম, আমরা টেস্টও খেলতে পারি। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে সুনিল জোশি ৬ উইকেট নিয়ে স্বপ্নপূরণ হতে দিল কই!’

সেই থেকেই বাংলাদেশ দলের খেলা মানেই মাঠে সরব উপস্থিতি এই টাইগার সমর্থকের। ক্রিকেট নিয়ে কথার ঝাঁপি নিয়ে বসলেন গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের দোতলায়। গুছিয়ে-সাজিয়ে বলছিলেন তার ক্রিকেট-প্রীতির গল্প, ‘ঢাকায় হওয়া বাংলাদেশের কোনো খেলা এখন পর্যন্ত মিস করিনি। এ সিরিজে চট্টগ্রামেও ছিলাম। আমার কাছে মনে হয় খেলাধুলার মাধ্যমে দেশকে  উপস্থাপনের বিষয় রয়েছে। ক্রিকেটারদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সেটা সচেতনভাবেই করে যাচ্ছি। ’ 
 
২০০০ সাল থেকে নিয়মিত মাঠে আসছেন শামস রশিদ। এখন যেমন বাংলাদেশের জয়ের আনন্দগুলো উপভোগ করছেন তেমনি শুরুর সময়ে এক বুক হতাশা নিয়ে বার বার মাঠ থেকে ঘরে ফিরতে হতো তাকে।

বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা তখন হতাশ করলেও তাদের সম্মান জানানোর ব্যাপারে সচেতন এই টাইগার সমর্থক, ‘আমি কখনো বাংলাদেশের ম্যাচ পুরোপুরি শেষ না করে স্টেডিয়াম ত্যাগ করিনি। ক্রিকেটাররা দেশের প্রতিনিধি, ওদের ছোট করার অধিকার আমাদের কারোরই নেই। সবসময়ই ভেবেছি, দেশের সেরা একাদশই তো মাঠে নেমেছে, ওদের ছোট কেন করবো। ওরা তো সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করে। খাবার খেতে বসার সময় রেগে-মেগে উঠে যাওয়া যেমন অন্যায় ম্যাচ শেষ হওয়ার আগে স্টেডিয়াম ত্যাগ করা আমার কাছে তেমনই একটা অন্যায় ব্যাপার মনে হয়। ’

শামস রশিদের ভাগ্নি বুশরা ক্রিকেট ওতটা বোঝেন না। তবে দেশের প্রতি ভালোবাসায় তিনি অন্তঃপ্রাণ। সে কারণেই মাঠে ছুটে আসা। কানাডার নামকরা কুইন্স ইউনিভার্সিটি থেকে ‘গ্লোবাল ডেভেলপম্যান্ট স্টাডিজ’ এ পড়াশোনা শেষ করে দেশের মানুষকে সেবা দিতে বাংলাদেশে ফিরেছেন। একটি এনজিওতে মনিটরিং ডিপার্টমেন্টে কর্মরত আছেন বুশরা। শিক্ষার্থী থাকাকালীন সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্টেডিয়ামে গিয়ে ফুটবল-ক্রিকেট দেখেছেন।

তবে মিরপুরে খেলা দেখার অভিজ্ঞতা অনেক আবেগের তার কাছে, সেটা নিজ দেশের খেলা বলেই, ‘গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে বসে শত-শত দর্শকের সঙ্গে আনন্দ করতে খুব ভালো লাগে আমার। এ নিয়ে চারবার আসলাম বাংলাদেশের খেলা দেখতে। প্রথম আসি ভারতের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে। সে কি উত্তেজনা, ক্রিকেটারদের কি স্পিরিট! সত্যি খুব উপভোগ করেছিলাম। সবার সঙ্গে হইচই করতে খুব ভালো লাগে, শরীরের পশম দাড়িয়ে যায়-সত্যি সত্যি এমনই অনুভূতি হয় স্টেডিয়ামে আসলে, বুঝতে পারি নিজ দেশের খেলা বলেই এমনটা হয়। হয়তো দেশকে ভালবাসি বলেই। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, জুল‍াই ৩০, ২০১৫
এসকে/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।