ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বিকেএসপিতে তারার হাট

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫
বিকেএসপিতে তারার হাট ছবি: শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সাভার, বিকেএসপি থেকে: ফেলে আসা কতই না রোমাঞ্চকর স্মৃতি জমাট হয়েছে এতদিনে।   সেই দিনগুলোতে ফিরেও যেতে চান কেউ কেউ! কারও বিকেএসপি অধ্যায় শুরু ক্লাস ফাইভ থেকে, কারও সিক্স।

এর পর টানা ৬-৭ বছর কেটেছে এই সবুজ চত্ত্বরে। কঠোর নিয়ম-কানুন মেনে অধ্যাবসায় করেছেন এখান থেকেই। আজ তাদের অনেকেই জাতীয় খেলোয়াড়, তারকা খেলোয়াড়।

এর বাইরে কেউ পেশাগত জীবনে হয়েছেন ক্রীড়া সাংবাদিক, কেউ মেম্বার অব পার্লামেন্ট (এমপি) কেউবা সরকারী চাকুরীজীবী। সাবেক শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা বসেছিল আজ (১২ সেপ্টেম্বর) সাভার জিরানী ক্যাম্পাসে। অ্যালামনাই অ্যাসেসিয়েশন অব বিকেএসপি (অ্যাব) আয়োজিত সাবেক ছাত্র-ছাত্রীদের পুনর্মিলনীতে তারুণ্যের সেই দিনগুলোতে ফিরে গেলেন ছাত্র-শিক্ষকরা। ব্যাচমেটদের সঙ্গে আড্ডা, ছবি তোলাতেই কেটেছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) সাবেক ছাত্র-ছাত্রীদের শনিবারের (১২ সেপ্টেম্বর) দিনটি। ঢাকের আওয়াজের সঙ্গে নেচে-গেয়ে বিকেএসপি চির-চেনা আঙ্গিনা মাতিয়েছেন সৌম্য সরকার আর এনামুল হক বিজয়। সামনে থেকে র‌্যালির নেতৃত্ব দিয়েছেন এই দুই তরুণ ক্রিকেটার।

সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিমের দিন পার হয়েছে নতুন শিক্ষার্থীদের সেলফি-আবদার মেটাতেই। খেলা মনেই সবার আবদারই মিটিয়েছেন জাতীয় দলের এই দুই তারকা ক্রিকেটার। শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করে ব্যাচমেটদের নিয়ে জমিয়ে আড্ডা দিয়েছেন সাকিব-মুশফিক। আরও ছিলেন নাসির হোসেন, লিটন দাস, মোশাররফ রুবেল, আব্দুর রাজ্জাক, নাইমুর রহমান দূর্জয়, ছিলেন জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম, সাবেক হকি তারকা মামুনুর রশীদসহ একঝাঁক সাবেক ও বর্তমান তারকা খেলোয়াড়।

পুরণো দিনের স্মৃতির ভান্ডার সবারই বেশ সমৃদ্ধ। পুরণো স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে নাইমুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সময়ে অনেক কঠোরতার মধ্য দিয়ে বিকেএসপি অধ্যায় কাটাতে হয়েছে। তখন বিনোদনের জন্য তেমন কিছু ছিল না। অবসরে হয়তো আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা গান শুনতাম। এসব এখন খুব মিস করি। ’

ফুটবলার মামুনুলের কাছে বিকেএসপি যেন স্বর্গ! সুযোগ হলে ফিরে যেতে চান পেছনের দিনগুলোতে, ‘সব সময় বিকেএসপির লাইফটা মিস করি। আমি ছিলাম ব্যাচমেট ও সিনিয়রদের কাছে সবচেয়ে আদরের। ১৯৯৭ সালে যখন ক্লাস ফাইফে পড়ি তখন ভর্তি হই এখানে। এখন যদি বলা হয় তুমি আগের লাইফে ফিরে যাও আমি আগের লাইফেই চলে যাব। বিকেএসপির জন্য আবেগটা একই রকম আছে। আমি আসার সময় বিকেএসপির গেটের মশালটা দেখছিলাম। আগে যখন আসতাম মশলাটা দেখলে চোখ দিয়ে পানি পড়তো। আজ ভেতরে ঢোকার আগে দূর থেকে মশালটা খেয়াল করছিলাম, অতীতে ফিরে যাচ্ছিলাম। মিস করি বড় ভাইদের,টিচারদের। যারা সুন্দরভাবে গড়ে তুলছে আমাদের। ’

বিকেএসপির প্রথম দিনটির কথা মনে পড়লেই নস্টালজিক হয়ে পড়েন জাতীয় ক্রিকেট দলের ওপেনার সৌম্য সরকার, ‘পুরণো দিনের কথা বলতে, সব মনে পড়ছে আজ। ২০০৬ সালে আমি এখানে ভর্তি হই। তো প্রথম দিনের কথাই বেশি মনে পড়ছে। আজ ঢুকলাম ৭-৮ বছর পরে। সাবেক স্টুডেন্ট হয়ে। আমার কাছে মনে হয় সুযোগের পুরোপুরি সদ্বব্যবহার করতে পারি নাই। ২০০৬ থেকে ২০১২ এই ৬ বছর ছিলাম। সব সময় এমন মজা করা হয় না বা সুযোগ হয় না। এখানে আসতে পেরে ভালো লাগছে। আগে এখানে লাফালাফি করতে পারতাম না এখন পারি। এইটাই পরিবর্তন। ’

এনামুল হক বিজয় স্মৃতিকাতুরে হয়ে পড়লেন পুরনো দিনের স্মৃতি প্রসঙ্গ উঠতেই, ‘অনেক ভালো সময় কাটিয়েছি বিকেএসপিতে। ব্যাচমেটদের খুব মিস করি। আজ সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে, আড্ডা দিচ্ছি হৈ-চৈ করছি। শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করছি। ভালো লাগছে। ’

উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে যাত্রা শুরু করা বিকেএসপি দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে বড় অবদান রেখে আসছে। খেলার মাধ্যমে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা এবং দেশকে নেতৃত্বও দিয়ে আসছে এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর, ২০১৫
এসকে/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।