ঢাকা: বাংলাদেশ দলের ‘গতিদানব’ তাসকিন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষেত্রে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি নিজেদের আইন নিজেরাই ভঙ্গ করেছে। অ্যাকশনে সন্দেহ প্রকাশ থেকে শুরু করে ল্যাবে পরীক্ষা ও তার পরবর্তী পদক্ষেপ, সবক্ষেত্রে তারা এ আইন ভঙ্গ করেছে।
এই অভিমত দিয়েছেন তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন ইস্যুতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আইনজীবী হিসেবে কাজ করা সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান। নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে আইসিসি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর শনিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দিয়ে এ অভিমত দেন।
মুস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, আইন অনুসরণ করলে তাসকিন আহমেদকে সর্বোচ্চ সতর্ক করা যায় নির্দিষ্ট ডেলিভারিটির ক্ষেত্রে, কিন্তু নিষিদ্ধ করার সুযোগ নেই। তারপরও নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আইসিসি তাদের তৈরি করা নিয়ম নিজেরাই ভেঙেছে।
যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, বোলিং অ্যাকশন সম্পর্কিত আইসিসির আইনের ২.২.৬ ধারায় বলা আছে, যে ডেলিভারির জন্য আম্পায়াররা বোলারকে সন্দেহ করেছেন, ল্যাব পরীক্ষায় সেই নির্দিষ্ট ডেলিভারিই করে দেখাবেন বোলার। কিন্তু অফিসিয়ালরা তাসকিনকে নির্দিষ্ট কোনো ডেলিভারির জন্য অভিযুক্ত করেননি। কেবল বলেছেন, ‘তার অ্যাকশন সন্দেহজনক’।
তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী পরীক্ষা হওয়ার পরও তাসকিন যে ধরনের বল করে থাকেন তার মধ্যে স্টক ও ইয়র্কারের অ্যাকশনে কোনো ঝামেলা হয়নি। অ্যাকশনে ত্রুটি ধরা পড়েছে কেবল তার বাউন্সারে। হিমাচলের ধর্মশালার বৈরী পরিবেশে টানা তিন ম্যাচ খেলে ক্লান্ত হয়ে আইসিসির ল্যাবে যাওয়ার পর তাসকিনকে মাত্র ৩ মিনিটে অবিশ্বাস্যভাবে ৯টি বাউন্সার করানো হয়েছে। এরমধ্যে ৬টি বাউন্সারেরই অ্যাকশন বৈধ ছিল। ত্রুটি ছিল ৩টির, যে ৩টির গতি আবার বেশ কম ছিল। অথচ এই ৩টির ভিত্তিতেই তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলো।
মজার ব্যাপার হলো, যে ম্যাচে তাসকিনের অ্যাকশন নিয়ে আইসিসির অফিসিয়ালরা সন্দেহ প্রকাশ করেন, সে ম্যাচে তিনি কোনো বাউন্সারই দেননি। যদিও আইসিসির ২.২.৬ ধারাতেই বলা আছে, ‘যে ম্যাচে সন্দেহে পড়বেন সেই ম্যাচের করা ডেলিভারির বাইরে অন্য কোনো ডেলিভারি এই পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত নয়’।
মুস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, বোলিং অ্যাকশন নিয়ে মাঠের দুই আম্পায়ারের সন্দেহ থেকে শুরু করে ল্যাব পরীক্ষার পর নেওয়া কোনো সিদ্ধান্তেই আইসিসি নিজেদের নিয়ম নিজেরা অনুসরণ করেনি।
বিসিবির এ আইনজীবী স্পষ্ট করে বলেন, তাসকিন অবিচারের শিকার। আমি বিসিবিকে ধারাগুলো নির্দিষ্ট করে এর আওতায় সংশ্লিষ্ট কোর্টে রিভিউ করার পরামর্শ দিয়েছি।
মুস্তাফিজুর রহমান খান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রহসনেরও একটা সীমা আছে। ফাইজলামিরও একটা সীমা আছে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৬
এইচএ/