চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম থেকে: আইসিসির অযৌক্তিক সিদ্ধান্তে বিশ্বকাপের শেষ দশের দ্বিতীয় ম্যাচে ছিলেন না দুই টাইগার বোলার তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানি। তারপরেও বাংলাদেশ যেভাবে লড়েছে সেটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।
তাদের এই জয় অতটা সহজ হতো না যদি বাংলাদেশের বোলাররা প্রথম ৬ ওভারে অজিদের ১টি বা ২টি উইকেট নিতে পারতেন বলে মনে করেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
সোমবার (২১ মার্চ) বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের সম্মেলন কক্ষে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।
শুধু তাই নয়, অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রতিপক্ষ এবং এমন ফ্ল্যাট উইকেটে তাসকিন ও সানি থাকেলে ম্যাচের ফলাফল অন্য রকম হতে পারতো বলেও মনে করেন তিনি।
‘আমরা প্রথম ৫-৬ ওভারে ওদের কোনো উইকেট ফেলতে পারিনি যা দিন শেষে আমাদের হারের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এমন ফ্ল্যাট উইকেট এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাসকিন ও সানি না থাকাটা আমাদের জন্য সুখকর ছিলো না। ’
এর বাইরেও ম্যাচে ছোট ছোট কিছু ভুলের কারণে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি হাতছাড়া হয়ে গেছে।
কি কি ভুল ছিলো- জবাবে তিনি বলেন, “দুই-তিনটা জায়গায় আমাদের ব্যাটসম্যান-বোলাররা ভালো করেনি। সেগুলো যদি আমরা ভালো করতে পারতাম তাহলে হয়তোবা ম্যাচটা আমাদের দিকে আসলেও আসতে পারতো। ”
পেটের অসুখের কারণে এদিন মাঠে নামতে পারেননি টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। তার অনুপস্থিতিতেই শক্তিশালী অজিদের বিপক্ষে লড়তে হয়েছে টিম বাংলাদেশকে।
এমন হাই ভোল্টেজ ম্যাচে তামিম ইকবালের অনুপস্থিতি দলের জন্য বড় ক্ষতির কারণ জানিয়ে মাশরাফি বলেন, “তামিমেরটা আমাদের জন্যে বিগ লস। এমনিতেই দুর্ভাগ্যবশত দু’জন খেলোয়াড় আমাদের সঙ্গে নেই। এরওপর আজ সকাল থেকেই তামিমের শরীর খারাপ। এটা আমাদের জন্যে বড় ধাক্কা। ”
এছাড়া অজিদের বিপক্ষে এমন গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টাইগারদের হয়ে মাঠে নামতে পারেননি নাসির হোসেন।
“নাসির অবশ্যই আমাদের কম্বিনেশনে আছে, সব সময় থাকবে। শেষ পর্যন্ত ওকে কম্বিনেশনের কারণে বিভিন্নভাবে সুযোগ দেওয়া হয় না। আশা করি ও সামনে সুযোগ পেলে ভালো খেলবে। ”
গেলো কয়েকটি ম্যাচের ধারাবাহিকতায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই ম্যাচেও ওপেনিংয়ে জ্বলে উঠতে পারেননি সৌম্য সরকার। ব্যক্তিগত ১ রানেই ফিরে গেছেন প্যাভিলনে।
সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলেন, “আসলে এটা তো হয়। কখনো কখনো এরকম সময় যায়। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে রানও করতে হবে এরকম তাড়া সব সময় থাকে। রিস্ক নিয়েও খেলতে হয়, যারা টপ সিক্সে ব্যাটিং করে। ফ্লোটা ভালো থাকলে কখনো ওরকম হয় না। একদিন খারাপ গেলে দু’দিন ভালো যায়। পরিস্থিতিটা ওর জন্যে কঠিন হয়ে গেছে। একদিন রান করলে আবার সব ঠিক হয়ে যাবে। আশা করছি সৌম্য আবারও রানে ফিরবে। ”
“তাসকিন-সানির বিষয়টা মাথায় না রেখে মাঠে নামলেও অগোচরে তাদের দলে না থাকার বিষয়টি মনের মাঝে হয়তো কাজ করেছে। মূল একাদশের তিনজন খেলোয়াড় বাইরে যাওয়া ও টপ ফর্মের খেলোয়াড় চলে যাওয়া টিমের জন্যে বাড়তি কষ্ট। তারপরও আমরা যথাযথ চেষ্টা করেছি বিষয়গুলো ভাবনা থেকে বাইরে রেখে খেলতে। বাইরে থেকে মনে নাও হতে পারে। ”
এটা ঠিক বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরেছে। তবে এমন হারের ভেতরেও ইতিবাচক অনেক কিছুই দেখছেন মাশরাফি। তিনি বলেন, প্রয়োজন মাফিক রান হয়নি। আমার মনে হয়, ফিল্ডিং ও বোলিংয়ে আরেকটু ভালো করতে পারলে রানটা অনেক বড় হয়ে যেতো। তারপরও মনে করি, ইতিবাচক যে জিনিসগুলো হয়েছে, রিয়াদ ফর্মে আছে। ধারাবাহিকভাবে ভালো করেছে। সাকিব বোলিংয়ে ভালো করেছে। ব্যাটিংয়েও ওই সময়টাই ভালো করেছে। মুশফিকও অনেক দিন পর হাত খুলে ব্যাটিং করলো। এগুলো আমাদের সামনের ম্যাচে কাজে লাগবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৬
এইচএল/এটি