ঢাকা: অন্য দেশের ক্রিকেটারদের নিয়ম-কানুন লঙ্ঘনের কারণে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করা হলেও ভারতীয় ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির নিয়ম ঠিক উল্টো। তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার কথা বললে তা প্রত্যাখ্যান করে কর্তৃপক্ষ।
বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়ার আগে আইসিসি ও সংস্থাটির ভারত বিষয়ক নীতি নিয়ে এ বিস্ফোরক কথা বলে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার আম্পায়ার ড্যারেল হার্পার। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘গতিদানব’ তাসকিন আহমেদ ও ‘ঘূর্ণি জাদুকর’ আরাফাত সানিকে বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটির অভিযোগ তুলে নিষিদ্ধ করার পর এ বিষয়টি আবার সামনে এসেছে।
বিশ্বকাপের মাঝপথে টাইগারদের প্রধান দুই বোলারের ওপর এ নিষেধাজ্ঞায় চটেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার ইয়ান চ্যাপেল, পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম ও শোয়েব আখতাররা। এই নিষেধাজ্ঞা জারিতে অনেকে ক্রিকেটের একটি মোড়ল রাষ্ট্রের কলকাঠি নাড়ার অভিযোগও তুলছেন।
২০১১ সালে ভারতের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ শেষে অবসরে যাওয়া হার্পার আইসিসিকে সমালোচনার শূলে চড়িয়ে বলেন, দায়িত্ব পালনে যখন আমাকে বিবেচনা করতে হয় কোন দল খেলছে এবং একেক দলের জন্য একেক নিয়ম প্রয়োগ করতে হয়, তখন খেলা তার মান ও মূল্য হারায়।
ওই সিরিজে আম্পায়ারিং নিয়ে ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির সমালোচনায় ক্ষুব্ধ হয়ে হার্পার বলেন, আইসিসির কর্মকর্তার সমালোচনার পরও তার কোনো শাস্তি হয়নি। আমি আইসিসির ম্যানেজেমেন্টের কোনো জবাব বা পদক্ষেপের অপেক্ষায় ছিলাম... এবং আমি অপেক্ষায়...! কোনো জবাব দেওয়া হলো না... না কোনো সহযোগিতা (আমাকে), না কোনো পদক্ষেপ। এমনটা আসলে আমি প্রথমবারই অনুভব করিনি।
আইসিসির ‘এলিট প্যানেল অব আম্পায়ার’র সদস্য হার্পার বলেন, যদি এমনটা ম্যাচ চলাকালে হতো, তাহলে আমি অ্যাকশনে যেতাম। কিন্তু খেলা শেষে আমি আইসিসির দিকে তাকিয়েছিলাম, নিয়ন্ত্রক পরিষদের দিকে তাকিয়েছিলাম।
অস্ট্রেলিয়ার এ আম্পায়ার ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ওই ম্যাচ চলাকালে একজন তরুণ ভারতীয় বোলার পিচের মধ্যে ছোটাছুটি করছিল বলে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। আমি তাকে পিচ আক্রমণ করতে বারণ করলে ধোনি আমাকেই আক্রমণ করে।
নিজের আম্পারিংয়ের রেকর্ড ভালো দাবি করে হার্পার বলেন, মে মাসে আমাকে অপসারণের আলোচনা তুলে আইসিসি। তারপর আর চালিয়ে যাওয়া হয়নি।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অন্য দলের খেলোয়াড়দের যেভাবে দেখা হয়, তার চেয়ে আলাদাভাবে দেখা হয় ভারতীয় খেলোয়াড়দের। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আমাকে নিয়ে অনেক বেশি অপপ্রচার চালিয়েছিল। এক্ষেত্রে আমি আইসিসিরও ততোটা সমর্থন পাইনি।
অবশ্য, ভারতের খেলায় ‘বাজে আম্পায়ারিং’র বলি কেবল হার্পারই হননি। অস্ট্রেলিয়া-ভারত সিরিজ শেষে আরেক খ্যাতিমান আম্পায়ার স্টিভ বাকনরকেও বলি হতে হয় ভারতেরই অভিযোগের প্রেক্ষিতে।
হার্পারের এ বিক্ষুব্ধ বক্তব্যের খবরটি অস্ট্রেলীয় একটি সংবাদমাধ্যমেই প্রকাশ হয়েছিল। এটি এমন সময় আবারও সামনে এলো, যখন ক্রীড়া সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বোলিং অ্যাকশন ত্রুটিতে এ পর্যন্ত চার টাইগারসহ ১৬ জন বোলার নিষিদ্ধ হলেও খগড়ে পড়তে হয়নি কোনো ভারতীয় বোলারকে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৬
এইচএ