ঢাকা: ২২ এপ্রিল থেকে মাঠে গড়াচ্ছে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ২০১৫-১৬ মৌসুমের খেলা। ঘরোয়া ক্রিকেটের মর্যাদাপূর্ণ এ আসরে অংশ নিতে ঢাকামুখী এখন দেশের ক্রিকেটাররা।

প্রিমিয়ার লিগ খেলতে রাজশাহী থেকে রোববার (১০ এপ্রিল) ঢাকায় এসেছেন লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জের এই ক্রিকেটার। গতবার রুপগঞ্জের হয়ে সর্বোচ্চ রান (৫৫২) করেছিলেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় ছিলেন ছয় নম্বরে। তাইতো এবারও তাকে ধরে রেখেছে রুপগঞ্জ। জহুরুলও এমনটিই ভাবছেন, ‘গতবারের পারফরম্যান্স দেখেই হয়তো আমাকে রেখে দিয়েছে। চেষ্টা করবো সেটা অক্ষুন্ন রাখার। ’
গতবার চ্যাম্পিয়ন কিংবা রানার্সআপ না হতে পারলেও একেবারে মন্দ করেনি রুপগঞ্জ। সুপার লিগে উঠেছিল তারা। এবার প্লেয়ার্স ড্রাফটে রুপগঞ্জ দলে ভিড়িয়েছে সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন, মোশাররফ হোসেন রুবেল, তাইজুল ইসলাম, জুনায়েদ সিদ্দিকী, আলাউদ্দিন বাবুর মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। উদীয়মানদের মধ্যে আছেন মেহেদী হাসান রানা, আবু হায়দার রনির মতো ক্রিকেটার।
তাইতো এবারও ভালো করার সম্ভাবনা দেখছেন জহুরুল, ‘আমাদের টিমটা গতবার খুব ভালো ছিল, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই করেছিল বাদল ভাই (লুৎফর রহমান)। অতটা ভালো করতে পারিনি। এবারও ভালো টিম হয়েছে, চেষ্টা করবো ভালো খেলার। চেষ্টা করবো ওনাকে ভালো একটা গিফট দেয়ার। ’
বিপিএলে ব্যাট হাতে দারুণ করেছিলেন জহুরুল ইসলাম। রংপুর রাইর্ডাসের এই ক্রিকেটার ৯ ম্যাচ খেলে সর্বোচ্চ গড়ে (৪১.০০) করেছেন ২০৫ রান। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে রান করে যাওয়া জহরুল বিপিএল আর প্রিমিয়ার লিগকে দুই মেরুতেই রাখতে চান, ‘বিপিএলের চেয়ে এটা আলাদা একটা টুর্নামেন্ট। এখানে আরেকটু দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হয়। এখানে লোকাল যারা সিনিয়র প্লেয়ার তাদের দায়িত্ব বেশি। ৫০ ওভারের খেলা তাই প্ল্যানটাও ভিন্ন হবে, ভিন্ন স্ট্র্যাটেজি (কৌশল)। ৫০ ওভারের ম্যাচে কিভাবে সফল হওয়া যায় সেই প্ল্যান করছি। ’
এবারের লিগে আবহাওয়া যে স্বস্তিতে রাখবে না ক্রিকেটারদের সেটা আগেই আঁচ করতে পারছেন জহুরুল। বৈশাখে খরতাপের সঙ্গে ঝড়-বৃষ্টি লেগেই থাকবে তাইতো একটু বুদ্ধি খাটিয়েই খেলতে হবে বলে মনে করছেন জহরুল, ‘আবহওয়াটা একটু অন্য ধরনের। আমরা সাধারণত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে প্রিমিয়ার লিগ খেলি। এবার ভিন্ন একটা সময়। আবহাওয়া যখন ভালো থাকবে তখন প্রচন্ড রোদ থাকবে। মাঝে মাঝে আবার বৃষ্টি হবে। খুব বেশি রানের ম্যাচ হবে না। একটু বু্দ্ধি খাটিয়ে খেলতে হবে। ’
প্রিমিয়ার লিগে ভালো করতে পারলে এবার চোখটা জাতীয় দলে রাখবেন কিনা-এমন প্রশ্নে জহুরুল জানান, ‘এত দূর ভাবতে চাই না। জাতীয় দল নিয়ে কোনো কিছুই ভাবছি না। ভালো খেলতে পারলেই আমি খুশি। ’
বাংলাদেশ জাতীয় দলে ২০১৩ সালের মে মাসে জিম্বাবুয়ে সফরে সবশেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন জহুরুল। এরপর থেকে একরকম ক্রিকেটের বাইরেই থাকতে হয়েছিল জহুরুলকে। পারিবারিক-ব্যক্তিগত সমস্যা পিছু ছাড়ছিল না এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে। এখন সব বাধা কাটিয়ে মাঠে ফেরা এই ক্রিকেটার ক্রমশ নিজেকে ফিরে পাচ্ছেন। তবে এখন ক্রিকেট খেলে যেতে পারলেই বেশি খুশি থাকেন এই ক্রিকেটার। ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত এ পারফরমার কেন জাতীয় দল নিয়ে আর ভাবতে চাচ্ছেন না, সেটা কৌতুহল জাগিয়েই রাখলো!
প্রিমিয়ার লিগে ভালো করেই জহুরুল ২০১০ সালে পেয়েছিলন জাতীয় দলের ঠিকানা। ২০১০ থেকে ২০১৩-এই তিন বছরের ৭টি টেস্ট, ১৪ ওয়ানডে ও ৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন বাংলাদেশের জার্সি গায়ে। প্রিমিয়ার লিগটা তাই জহুরুলের কাছে ভিন্ন কিছু, ‘আসলে প্রিমিয়ার লিগটা খেলেই তো আমরা প্লেয়ার হয়েছি। এই লিগটা টিকিয়ে রাখা উচিত। শঙ্কায় ছিলাম লিগটা বুঝি হবেই না। ২২ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে, ভালো লাগছে। অনেকেই আছেন যারা বিপিএলে টিম পায়নি, অনেকে আবার ম্যাচ পায়নি। সে খেলোয়াড়রা তাকিয়ে থাকে প্রিমিয়ার লিগের দিকেই। প্লেয়ারদের রুটি-রুজি বলেন আর পারফরম্যান্স শো করার জায়গা কিন্তু প্রিমিয়ার লিগই। ’
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৬
এসকে/এমআরএম