ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

অবৈধ বোলিং অ্যাকশন ও বিসিবির ভাবনা

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৬
অবৈধ বোলিং অ্যাকশন ও বিসিবির ভাবনা

ঢাকা: ত্রুটিপূর্ণ বোলিং অ্যাকশনের কারণে তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানি বিশ্বকাপের মাঝপথে নিষিদ্ধ হওয়ায় হাপিত্যেশ উঠেছিল দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফর্মে থাকা দুই বোলারের অনুপস্থিতি ভুগিয়েছে বাংলাদেশ দলকে।

এমন পরিস্থিতি আর কখনোও চাইবে না বাংলাদেশের ক্রিকেট। চাইছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও। বোলিং অ্যাকশন ‘রিভিউ’ কমিটি গঠনের পরিকল্পনা আপাত সেটাই প্রমাণ করে।

কারা আছেন কমিটিতে? নামগুলো বলতে চাইলেন না বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। তিনি জানালেন, বিশেষজ্ঞরাই থাকবেন কমিটিতে। ওয়ার্কআউট চলছে।

জানা গেছে, ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানসহ কমিটিতে থাকবেন কোচ, আম্পায়ার, কম্পিউটার বিশ্লেষক ও বিসিবি পরিচালকদের প্রতিনিধি মিলে ৭/৮ জন।

কোনো বোলারের বিরুদ্ধে আম্পায়ার রিপোর্ট দিলে রিভিউ কমিটি মাঠে উপস্থিত থেকে সেই বোলারের বোলিং পর্যবেক্ষণ করবে। ভিডিও ক্লিপ দেখে এ কমিটি সিদ্ধান্ত দেওয়ার চেষ্টা করবে।

এ ব্যাপারে নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানান, একটা বোলারের হাত কতটা বাঁকে সেটা আম্পায়ারের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। বোলিং অ্যাকশন রিভিউ কমিটি সেটা দেখে নিশ্চিত হলেই ব্যবস্থা নেবে।

কমিটি গঠনের পরিকল্পনার পরই ফল মিলতে শুরু করেছে। খালি চোখে কারও বোলিং অ্যাকশন সন্দেহজনক হলে সঙ্গেসঙ্গেই আম্পায়াররা রিপোর্ট করছেন।

লিগের প্রথম দিনই (২২ এপ্রিল) প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে চার বোলারের অ্যাকশন। এদের চারজনই স্পিনার। ম্যাচ শেষেই আম্পায়াররা তাদের সন্দেহের কথা আম্পায়ার্স কমিটিকে জানিয়েছেন।

আম্পায়ারের সন্দেহে পড়া চার স্পিনার হলেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বাঁহাতি স্পিনার মইনুল ইসলাম, অফস্পিনার মুস্তাফিজুর রহমান। আবাহনীর বাঁহাতি স্পিনার অমিত কুমার ও প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের বাঁহাতি স্পিনার রেজাউল করিম।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের তালিকায় যোগ হয়েছেন ক্রিকেট কোচিং স্কুলের (সিসিএস) পেস বোলার মোহাম্মদ সাইফু্দ্দিন। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে কয়েক মাস আগে যুব বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব করেন এ অলরাউন্ডার।

সন্দেহজনক অ্যাকশন নিয়েও প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে পারবেন বোলাররা। চূড়ান্ত শাস্তিটা তাদের ওপর দিয়ে যাবে পরের বারের লিগে।

নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর কথায় স্পষ্ট হলো তা। তিনি বলেন, কা‍দের ত্রুটি আছে সেটা বোঝা যাবে রিভিউ কমিটির প্রতিবেদনের পর। আমরা টিম ম্যানেজম্যান্টকে জানিয়ে দেব, কারা এ তালিকায় আছে। ক্লাবগুলো সেটা শুধরে দিতে চেষ্টা করবে। তবে পরের বার দল বদলের আগে এবারের লিগে যারা চাকিং করছেন তাদের দল বদলের তালিকাতেই রাখা হবে না।

এমন প্রক্রিয়ায় হয়তো বোলাররা ম্যাচে চাকিং করার সাহস কম দেখাবে। লিগ শুরুর আগে ন্যূনতম সন্দেহে থাকা বোলারকেও টিমে ভেড়ানোর চিন্তায় যাবে না ক্লাবগুলো। এভাবে হলে কমে আসার কথা অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের ভয়াবহ এ রোগ।

তবে এ ক্ষেত্রে ক্রিকেট প্রশাসনের সদ্বিচ্ছায় কমতি কিংবা গাফিলতি থাকলে অন্ধকারেই পড়ে থাকতে হবে। আবার সামনে আসবে বিশ্বকাপের মতো কোনো পরিস্থিতি। ক্রিকেট পাড়ায় শোনা যায়, অতীতে প্রিমিয়ার লিগে এমনও হয়েছে-এক স্পিনারের অ্যাকশন সন্দেহজনক বলে বিসিবির কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন ম্যাচ রেফারি। প্রতিবেদন জমা পড়লেও বিষয়টি নিয়ে চরম উদাসিনতায় ঘরোয়া লিগে বৈধতার সার্টিফিকেট নিয়েই খেলছেন সেই বোলার। ভবিষ্যতে এমন যেন না হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৬
এসকে/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।