ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

মা দিবসের বিশেষ আয়োজন

মায়ের মুখে মাশরাফির গল্প

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১১ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৬
মায়ের মুখে মাশরাফির গল্প মা হামিদা মোর্তজা ও মাশরাফি বিন মর্তুজা

নড়াইল থেকে ফিরে: পৃথিবীর সব মায়ের কাছেই সবচেয়ে প্রিয় তার সন্তান। সব মা’ই তার সন্তানের কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মা।

মা-সন্তানের সম্পর্ক যে নাড়ির। মা’ই সবচেয়ে ভালো জানেন সন্তানের আবেগ-অনুভূতি, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, পছন্দ-অপছন্দের কথা। মায়ের কাছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) মাশরাফি বিন মর্তুজা কেমন, সেটি জানার চেষ্টা করেছেন বাংলানিউজের স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট সাজ্জাদ খান।

জন্মের পর থেকেই মাশরাফির বেড়ে ওঠা নড়াইলের সরকারি হাইস্কুল সংলগ্ন বাবার বাড়ি থেকে মিনিট পাঁচেকের দূরত্বের নানা বাড়িতে। নড়াইলবাসী মাশরাফিকে তার ডাকনাম কৌশিক বলে ডাকেন। নানী-মামাদের কোলে-পিঠে চড়েই বড় হয়েছেন মাশরাফি। এখনও মামা বাড়ির প্রতি ঝোঁক কাটেনি তার।

মামারা আদরে ভাসালেও নানী আদর-কড়া শাসন দু’টোই করতেন। মাশরাফির মামা নাহিদের মতে, নানীর কাছ থেকেই জীবনে আদর্শ-নৈতিকতায় বলিষ্ঠ থাকার শিক্ষা পেয়েছেন ‘কৌশিক’। আর বাবা গোলাম মোর্তজার কারণে পেয়েছেন খেলোয়াড়ি প্রতিভা। মাশরাফির বাবা ছিলেন ফুটবলার ও অ্যাথলেট। যদিও তিনি চাইতেন না ছেলে ক্রিকেট খেলুক। তবে মাশরাফির মা স্কুলশিক্ষিকা হামিদা মোর্তজা চাইতেন মাশরাফির সব ইচ্ছা পূরণ করতে। ক্রিকেট খেলার সামগ্রী কেনার টাকা মা’ই কিনে দিতেন মাশরাফিকে।

বিশ্ব মা দিবসে সেই মায়ের কাছ থেকেই জানা যাক মাশরাফির ছেলেবেলা, কৈশোর, ক্রিকেটার হয়ে ওঠা, ছেলেমানুষি ও মাতৃভক্তির গল্প।

‘মাশরাফি’ নাম যেভাবে
কৌশিক নামটা আমি রেখেছি। ১৯৮০ সালের দিকে ভারতে টিভিতে একটা অনুষ্ঠান হতো। তখন কৌশিক চ্যাটার্জি নামে একটা লোক অনুষ্ঠান করতেন। ওই নামটাই আমার পছন্দ হয়েছিল। ওখান থেকেই আমি কৌশিক নামটা রাখি। মাশরাফি আর মোরসালিন-এ দুটো নাম এক করে মাশরাফি বিন মোরসালিন মর্তুজা-বড় একটি নাম ওর মেজো কাকা (তপন) রেখেছিলেন। অত বড় নাম স্কুলে বড় হয়ে যায়। স্কুলের শিক্ষকরা বললেন, নামটা বড় হয়ে যায়। মাশরাফি ও মোরসালিন দু‘টোই ইসলামী নাম। তখন কী করা যায়, ওর কাকা বললেন, তাহলে মাশরাফি বিন মর্তুজা  রাখেন। মাশরাফির নামের সঙ্গে মোরসালিনও ছিল। দ্বিতীয় সন্তান হওয়ার পর সেই মোরসালিন নিয়ে রাখি মোরসালিন বিন মর্তুজা। মোরসালিন-মাশরাফি দু’টি নামই পবিত্র কোরআনে আছে।

মাশরাফির শৈশব
অনেক মানুষ থাকে না যারা মানুষের মন কেড়ে নিতে পারে। মাশরাফিও ছোটবেলা থেকেই এরকম। ও খুব সহজ-সরল একটা ছেলে। এখন যেমন, ছোটবেলোতেও তেমন ছিল। সবসময় একই রকম। ওর মধ্যে কোনো দিন কোনো কিছুতে পরিবর্তন দেখিনি। ও যখন এই বাসায় পড়তে আসতো, আমি গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম। ভাবতাম, সন্ধ্যা লেগে গেল, আসছে না কেন। তখন শীতের সময়। এসে বলতো, ‘আম্মা বলো তো, আমি কয়টা জামা গায় দিছি’। আমি বলতাম, ‘কয়টা দিছ, দুইটা?’ ও বলতো, ‘এই দেখ, আমি পাঁচটা জামা গায় দিছি’। এই বলে একটা একটা করে খুলে গুনে গুনে দেখাতো। বাড়িতে এত চুপচাপ থাকতো, ও যে বাসায় আছে সেটা বোঝাই যেত না। কিন্তু বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে থাকলে ওর গলাটাই সবার আগে শুনতে পেতাম।

পছন্দের খাবার
শীতের সময় হাঁটুর উপরে লুঙ্গি পরে পড়তে আসতো। তখন এসএসসি দেবে। বয়স ১৫-১৬। এলেই ওকে আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খেতে দিতে হতো। আলু ভর্তা আমি মাখিয়ে রাখতাম। ভাত খেয়ে পড়তে বসতো। রোজ সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ পড়ার আগে খেয়ে পড়তে বসতো। আর আমি যখন ওর মামা বাড়ি যেতাম, আসার সময় বলতো, ‘আম্মা আমার জন্য একটু খাবার নিয়ে আইসো’। ওখানকার জিয়া বেকারি দোকানটা বন্ধ হয়ে গেল। তখন সেই দোকানে চকবার নতুন উঠেছে। চকবার, পেপসি- এগুলো নিয়ে আসতাম। ওর নানা বাড়ির পেছনে একটা জানালা ছিল। জানালার পেছনে চকবারের খোসায় এমন স্তূপ পড়ে গেল। ঠাণ্ডা পেপসি খেত, চকবার, কোক খেতে পছন্দ করতো। এখন খায় না। আলু ,ভাত, ডাল আর গুরুর মাংস ওর পছন্দ। মোটা হয়ে যাবে বলে এখন অনেক কিছুই খায় না। বন্ধুবান্ধব নিয়ে এসে চা করতে বলে। আবার বলবে, ‘আম্মা ভাত আছে?’ আমি ভাত রেখে দিই। জানি ও ভাত চাইবে। এখনও আলু ভর্তা ওর প্রিয়। গরুর মাংস পেলে তো কথাই নেই, ভুড়ি খেতে পছন্দ করে। আমি পরিষ্কার করে ঢাকায় পাঠিয়ে দিই। গরুর পায়া চালের রুটি দিয়ে খেতে চায়।

মাশরাফির হাত খরচ যখন ১০ টাকা
কৌশিক নানাবাড়ি থেকে আমাদের ‍বাড়ি এলে ওর আব্বা ওকে ১০ টাকা করে দিতেন। ১০ টাকা করে দিলে ও হয়তো বিকেলে কিছু খেতো। একদিন ওর আব্বা ওকে ৫০০ টাকা দিয়েছেন। ১৫-১৬ বছর, ২০০০ সালের কথা। ও ওর আব্বার মুখের দিকে তাকিয়ে বলছে, ‘আব্বা এত টাকা তুমি আমাকে দিলা’। ওর আব্বা বললেন, ‘শোনো আমি তোমাকে প্রতিদিন ১০ টাকা করে দিই, তাই মনে করো না এই টাকা তুমি একবারে ভেঙে খেয়ে ফেলবা। তুমি দৈনিক কত খরচ করো, যা প্রয়োজন করবা। আর খাতায় লিখে রাখবা কত খরচ হয়েছে’।

যাপিত জীবন
ছোটবেলা থেকেই ওর কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিলো না। ঈদের সময় আমার মামার ছেলে এসে বলছে, ‘আপু কৌশিক মামাকে কি কিনে দিছো’। আমি বললাম, ‘একটা প্যান্ট, স্যান্ডেল আর একটা গেঞ্জি কিনে দিছি’। ও বললো, ‘কত টাকা দিয়ে’? ‘এই হাজার খানেক’। তখন ও বলে, ‘আল্লাহ, আমি একাই দুই হাজার টাকা দিয়ে জুতা কিনে পরছি, আর তুমি কৌশিককে এক হাজার টাকা দিয়ে সব কিনে দিছো’। এই জিনিসটা যে কৌশিকের ভেতরে কোনো অনুভূতি তৈরি করবে কোনোদিনও, এমনটা ওর মধ্যে ছিলো না। ও একটা জামা গায়ে দিলে দেখা যেতো জামার বোতাম নেই। দেখা যেতো, জামায় কলমের কালি লেগে আছে। চুল আঁচড়াতো না। দেখা যেতো, লুঙ্গি ছিঁড়ে গেছে, গিট দিয়ে পরছে। ওর লাইফটা এরকম ছিল।

বাবা-নানীর শাসন
ও সবচেয়ে বেশী ভয় পেতো ওর বাবা আর নানীকে। নানী দুষ্টুমি করলে বকা দিতেন, ভয় দেখানোর জন্য হালকা মারধরও করতেন। আবার নানীই ওকে বেশি ভালোবাসতেন। নানীর আঁচলে থেকে বড় হয়েছে। অভিভাবকদের মধ্যে ওর আব্বাকেও খুব ভয় পেতো। মাঠে খেলতে থাকলে ওর আব্বাকে দেখলে দৌড়ে পালাতো। ওর আব্বা সরে গেলে আবার খেলা শুরু করতো।
 
খেলার সামগ্রী কেনা
কৌশিকের বন্ধু শুভ্র’র ব্যাট ছিল। ওটা দিয়ে খেলতো। অনেক সময় ব্যাট দিতে চাইতো না বন্ধুরা। একদিন বসে আছি, কৌশিক বলে, ‘আম্মা পরীক্ষার পর আমাকে কিছু টাকা দিও, আমি ঢাকায় সেকেন্ড ডিভিশন লিগ খেলবো’। আমি বললাম, ‘বাবা তুমি আগে পরীক্ষা (এসএসসি) দাও, লিগ খেলবা, টাকা দিবো। থাকা-খাওয়ার টাকা আমি দেবো, তুমি খেইলো’। কৌশিক তখন নাইন-টেনে পড়ে। পরীক্ষা দিয়ে বাসে চড়ে মফিজ নানার (খুলনায়) বাসায় থেকে খেলার জিনিসপত্র কিনলো, তার দুই দিন পরই বিভাগীয় অনূর্ধ্ব -১৭ দলে ডাক পড়লো।

কৌশিকের ‘মাশরাফি’ হয়ে ওঠা
অনেকে বলতো একট‍ু গাইড পেলে কৌশিক অনেক ভালো করেবে। ওর আব্বা বলতো, ‘সেই পরিবেশ আছে নাকি। বাদ দাও তো ওসব খেলাধুলা’। বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলে কৌশিকের খেলা দেখে ওর আব্বার মনোভাব পাল্টে গেল। খুলনা বিভাগকে ও জেতালো। যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অ্যান্ডি রবার্টস বললেন, ‘মাশরাফির মতো পেসার থাকতে কে বলে বাংলাদেশে পেসার নেই’। তখন মিডিয়া ওকে নিয়ে লেখালেখি শুরু করলো। ওকে নিয়ে আমাদের দৌড়‍াদৌড়ি ঢাকায় একবার, নড়াইলে একবার। এই করে বেড়াতাম। এরপর তো সবার জানা।
 
মাশরাফির মায়ের খেলা না দেখা
ছেলে যখন খেলে প্রত্যেকটা মায়ের যেমন টেনশন কাজ করে, আমারও করে। ইনজুরির পর থেকে আমি ওর খেলা ঠিক মতো দেখিনি। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধর্মশালায় আফিগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটার দুই-তিন ওভার একদম মনোযোগ দিয়ে দেখেছি। এটুকু মনে আছে ১৫ বছরের মধ্যে ওই ২-৩ ওভারে বল আমি মনযোগ দিয়ে দেখছি। একটা ওভার বল করলো, তখন সাহস হলো। পরে দেখলাম। একটা উইকেট পেয়েছিল। এছাড়া, ও যখন বোলিংয়ে আসে, আমি ঘর থেকে বের হয়ে যাই। কেমন যেন লাগে, আমি নিজেও বলতে পারি না। আসলে আমি ওর খেলা দেখতে পারি না। ইনজুরি ছিল অনেক। টিভি ছাড়লে কী অবস্থায় দেখবো, কেমন মুখটা দেখবো। এসব চিন্তা করে দেখি না। যা করার আল্লাহই করবেন, আমি দেখবো না।

মাশরাফির মাতৃভক্তি
সারাদেশের দায়িত্ব, ব্যস্ত থাকে। তারপরও কে কোথায় কী অবস্থায় আছে, সবার খোঁজ নেবেই। আমার সঙ্গে প্রতিদিন এক সেকেন্ড হলেও কথা বলবে। জানতে চাইবে, ‘আম্মা তুমি কেমন আছো?’ হাজার ব্যস্তও যদি থাকে, ‘আম্মা তুমি কেমন আছো’ এই কথাটা বলে লাইন কেটে দিতে হলে দেবে। তবু অতটুকু সে জিজ্ঞসা করবেই। প্রতিদিন সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার ভেতর আমাকে ফোন করে। ব্যস্ততার কারণে যদি ফোন না দিতে পারে, রাত ১২টায় দেবে।

দেশের বাইরে থাকলে
বাইরের দেশে গেলে মাঠে যাওয়ার আগে ওর দুই মামাকে, ওর আব্বাকে, আমাকে এদের তো বলবেই। সবার আগে আমাকে বলবে, ‘আম্মা যাচ্ছি, দোয়া করো’। ম্যাচ শুরুর দেড়-দুই ঘণ্টা আগে ফোন বন্ধ করার সময় ফোন দেয়। যখন বাইরের দেশে যায়। প্লেন যতক্ষণ না ছাড়বে, ততক্ষণ ফোন দিতেই থাকবে। প্লেনের মধ্যে বসে বলবে, ‘আম্মা এই যে প্লেন ছাড়তেছে, আমি ফোন বন্ধ করতেছি। দোয়া করবা আম্মা’। বিমানন্দরে যাওয়ার আগ থেকে প্লেন ছাড়ার আগ পর্যন্ত চার-পাঁচবার ফোন দেবে। ‘আম্মা এই যে গাড়িতে উঠতেছি। নামলাম, প্লেনে উঠলাম, এখন ফোন বন্ধ হয়ে যাবে। পৌঁছাইয়া ফোন দিবোনি। ’

বিদেশ-ভীতি
বিদেশে যাওয়ার কথা শুনলেই কৌশিক কান্নাকাটি করে। ও দেশকে খুব ভালোবাসে। আমি যেমন নড়াইল ছাড়া কোথাও থাকতে পারি না, কৌশিকও ঠিক এমন। আগে তো নড়াইল ছাড়া থাকতেই পারতো না। এখন তো দু’টো সন্তান আছে। নিজে বাবা হয়েছে। বাচ্চাদের সময় দিতে হয়। মেয়েটা স্কুলে পড়ে। তাই ইচ্ছা করলেও নড়াইলে আসতে পারে না।

বাড়িতে এলে
এখনও বাড়িতে এলে আগের মতোই থাকে। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে হৈ-হুল্লোড়, আনন্দ করেই থাকে। এটা খাবো, ওটা খাবো। ওর মামার বাসায় খেয়ে আমার বাসায় আসে রাত ১২টার পর। ও যে কয়দিন থাকে, আমার বাসার কেউ ঘুমায় না। সবাই সজাগ থাকি। হাসি-তামাশা, খেলাধুলার আলাপ, বাসা-বাড়ির আলাপ। বন্ধুদের সঙ্গে এমন একেকটা কথা বলে, হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যায়। খুব মজা করে, সবাইকে মাতিয়ে রাখে, আনন্দের মধ্যে রাখে। মাঝে মাঝে আমার শরীর খারাপ হয়। শ্বাসকষ্টে প্রেসার বেড়ে যায়, কৌশিক বন্ধু-বান্ধব নিয়ে দেখতে আসে। হাসি-ঠাট্টা করে আম‍াকে চাঙ্গা করে দেয়, আমি সুস্থ হয়ে যাই।

পেপার কাটিং সংগ্রহ
কৌশিকের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ছোট একটা খবরও পত্রিকায় এলে আমি কেটে লেমেনেটিং করে রাখি। যত পেপার আছে। যে পেপারে ছবি দেখবো কেটে রাখবো। ও বাড়িতে এলে পুরনো, প্রথম জীবনের সেই ছবিগুলো দেখে। কৌশিকের এখনও ছেলেমানুষি আছে।    

খবরের কাগজে মাশরাফি
খেলার জগতে কারও সঙ্গেই আমার ওঠা-বসা নেই, পরিচিতি নেই। পত্রিকায় এমনভাবে লেখে আমার কৌশিককে নিয়ে খুব ভালো লাগে। তখন মনে হয়, আমার কৌশিক এতো ভালো! তখন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। আনন্দটা নিজের ভেতরেই ধরে রাখি। আল্লাহকে বলি, আল্লাহ তুমিই তো দিছো এমন ছেলে। আমি আনন্দটা এভাবে করি। সবাইকে বলে বেড়াবো, আমার কৌশিক এই হইছে, ওই হইছে। আমি এমন করি না। আমি আল্লাহকে ভয় পাই। বাসায় রাশেদুল নামে একটা ছেলে থাকে। ওকে ছোটবেলায় এনেছিলাম। এখন অনূর্ধ্ব- ১৪ দলে খেলে। নাইনে পড়ে। ওর সঙ্গে আমি শেয়ার করি। ও পেপারটা পড়ে। তখন আমাকে দেখায়, খালাম্মা পেপারে ভাইয়ের সংবাদ দিয়েছে। তখন আমি পড়ি, গোছাইয়া পড়তে পারি না। রাশেদুল ছন্দ মিলিয়ে পড়ে। তখন আরও ভালো লাগে। সেই অনুভূতি তো বোঝানোর মতো না।

মাশরাফিকে ঘিরে স্বপ্ন
কৌশিক আরও বড় হোক। অনেক সম্মানে সম্মানিত হোক। সে দেশের জন্য কিছু করুক। অসহায় মানুষের জন্য কিছু করুক, এটাই চাই। মানুষকে যেন পথ দেখিয়ে দিতে পারে। মানুষের জন্য কিছু করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এই বার্তা যেন দেশের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারে।

প্রার্থনা
দু’টো ছেলে ভালো থাকুক। তারা যেন কখনোই কষ্ট না পায়। তারা যেন মানুষের পাশে থাকে। যতোদিন দুনিয়ার বুকে আল্লাহ রাখে, আমিও যেন মানুষের পাশে এভাবেই থাকতে পারি। আমি কথিত বড়লোকদের সঙ্গে মিশি না। সাধারণ মানুষের সঙ্গেই ওঠা-বসা, তাদের সঙ্গেই যেন মিশে যেতে পারি, দিন কাটিয়ে যেতে পারি, এটাই আমার প্রার্থনা, আশা। আর কোনো আশা নেই।

ভালো লাগা
দেশের সবাই আমার কৌশিককে ভালোবাসে। মা হিসেবে এটা তো ভালো লাগারই কথা। সব মায়ের-ই তো ভালো লাগবে। আমার জায়গায় অন্য কোনো মা হলে তারও তো ভালো লাগতো। সব মায়েরই ভালো লাগার কথা। ভালো লাগবেই।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৬
এসকে/এইচএ/

** নড়াইলের নারী ফুটবলারদের এগিয়ে যাওয়ার গল্প
** অতীতের দিকে তাকালে চোখে পানি চলে আসে
** দুই মৌসুম ধরে বন্ধ খুলনা লিগ
** নারী ক্রিকেট মানেই তো সালমা
** মাঠের মানুষ আব্দুস সাত্তার কচি
** জাতীয় দলে ফিরবেন, বিশ্বাস জিয়ার
** লক্ষ্যটা নিজের ভেতরেই রাখতে চান সোহান
** ‘মাশরাফি ভাইয়ের রুমেই বেশী আড্ডা হতো’
** আবু নাসের স্টেডিয়াম যেভাবে ‘লাকি ভেন্যু’ হলো
** ক্রিকেটভক্ত-ক্রিকেটারভক্ত মিম, আফরিদ
** বিশ্বকাপের ক্যাচ দুটি মনে রাখবেন সৌম্য
** ‘লাল-সবুজ’ বাড়ির বাসিন্দা সৌম্য
** সৌম্যর সুন্দরবন-ট্রিপ
** মাশরাফিতে মুগ্ধ মুস্তাফিজের বাবা
** মুস্তাফিজের বোলিংটাই কেবল পাল্টেছে
** ‘কাটার স্পেশালিস্ট’ এর শুরু এ মাঠেই
** গ্রামের বাড়িতে দুরন্ত মুস্তাফিজ
** ক্রিকেটাঙ্গনে দাপট দেখানো খুলনার পথে…

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।