ঢাকা: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) প্রথম ‘স্বাধীন’ চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন শশাঙ্ক মনোহর। এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
গত এপ্রিলে আইসিসির বোর্ড সভায় প্রস্তাবের ভিত্তিতে গঠনতন্ত্র সংশোধনীর (স্বাধীন চেয়ারম্যান নির্বাচন ইস্যু) অনুমোদন দেয় সংস্থাটির পূর্ণাঙ্গ কাউন্সিল। লক্ষ্য ছিল এমন কাউকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা যিনি বর্তমানে কোনো ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে জড়িত নন। তারই ধারাবাহিকতায় নির্বাচিত প্রথম স্বাধীন চেয়ারম্যান পেল আইসিসি।
গত মঙ্গলবার (১০ মে) ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে ক্রিকেট বিশ্বকেই চমকে দেন মনোহর। একই সঙ্গে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসিতে ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলে বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি হিসেবেও পদত্যাগ করেন। এবার আইসিসির ইতিহাসে প্রথম স্বাধীন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন ৫৮ বছর বয়সী মনোহর। যার মেয়ার দুই বছর।
আগামী ২৩ মে আইসিসির চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুযায়ী, আইসিসির পরিচালকগণ (বর্তমান বা সাবেক) প্রত্যেকে একজন করে প্রার্থীকে মনোনীত করতে পারবেন।
কেউ যদি দুই বা তার বেশি পূর্ণ সদস্য পরিচালক কর্তৃক মনোনীত হন তবে নির্বাচনে লড়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন। কিন্তু, সবাই সর্বসম্মতিক্রমে মনোহরকেই সমর্থন দেওয়ায় পূর্ব নির্ধারিত ২৩ মে’র নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি! নির্বাচন প্রক্রিয়া দেখভালের দায়িত্বে থাকা স্বাধীন অডিট (নিরীক্ষা) কমিটির চেয়ারম্যান আদনান জাইদি মনোহরকে বিজয়ী ঘোষণা করে পুরো প্রক্রিয়ার সমাপ্তি টেনেছেন।
ভারতের বিশিষ্ট আইনজীবী শশাঙ্ক মনোহর ২০০৮ সাল থেকে ২০১১ পর্যন্ত বিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন। জগমোহন ডালমিয়ার মৃত্যুর পর গত বছরের অক্টোবরে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে এই পদে নির্বাচিত হন। শ্রীনিবাসন অপসারিত হওয়ার পরই আইসিসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। এবার তো ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার স্বাধীন চেয়ারম্যান হিসেবে কোনো বাধা ছাড়াই নির্বাচিত হলেন। বর্তমানে কোনো বোর্ডের প্রতিনিধিত্ব করছেন না বলেই তো আইসিসির চেয়ারম্যান পদকে ‘স্বাধীন’ বলা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত স্বাধীন থাকতে পারবেন তো মনোহর?
নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মনোহর বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়াটা সম্মানের এবং এর জন্য আমি আইসিসি পরিচালকদের কাছে কৃতজ্ঞ। তারা আমার সামর্থ্যের ওপর বিশ্বাস ও আস্থা রেখেছেন। এই সুযোগ পাওয়ায় বিসিসিআই’র সহকর্মীদেরকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা আমাকে বিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়ও সমর্থন দিয়ে গেছেন। ’
‘আমার সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হচ্ছে, ক্রিকেটকে বিশ্বব্যাপী আরও ছড়িয়ে দেওয়া। নতুন প্রজন্মকে ক্রিকেটের সঙ্গে আরও সম্পৃক্ত করতে চাই। ক্রিকেটের অতীত ইতিহাস সব সময়ই গৌরবের, ভবিষ্যতে ক্রিকেটকে আরও সুন্দর করে তুলতে আইসিসির সব পক্ষের সঙ্গে মিলে কাজ করতে মুখিয়ে আছি। ’-যোগ করেন মনোহর।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৯ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৬
এমআরএম