মিরপুর থেকে: ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে হারের ধারা অব্যাহত রেখেছে এবারের আসরের অন্যতম শিরোপা প্রত্যাশী দল আবাহনী। মুশফিকুর রহিমের মোহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব ৩৭ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে তামিম ইকবালের আবাহনীর বিপক্ষে।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দেশের ঐতিহ্যবাহী দুই দলের লড়াইয়ে মোহামেডানের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে আবাহনী। তবে, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়তে ব্যর্থ হয় তামিম বাহিনী। ওপেনারদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের হেভিওয়েট ম্যাচে মুশফিক বাহিনীর বোলিং তোপে ৪৮.৪ ওভারে মাত্র ১৮৩ রানে গুটিয়ে যায় আবাহনীর ইনিংস। ১৮৪ রানের সহজ টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৩.৫ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে মোহামেডান।
মোহামেডানের পেস বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দলীয় ১৫ রানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল, লিটন দাস ও অভিষেক মিত্রকে হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় আবাহনী। তামিম ইকবাল ফিরেছেন ব্যক্তিগত ৪ রানে শুভাশীষের বলে সৈকতের হাতে ক্যাচ দিয়ে। লিটন দাস ৩ রান করে বিদায় নেন। তার উইকেটটি পেয়েছেন হাবিবুর রহমান। আর অভিষেক মিত্র ব্যক্তিগত ৭ রানে ফিরেছেন ওই হাবিবুরের বলেই।
তবে আবাহনীর হয়ে এদিন ব্যাট হাতে হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও ভারতের মানভেন্দর বিসলা। চতুর্থ উইকেটে তাদের ৪৭ রানের জুটিতে ব্যাটিং বিপর্যয় কাটায় কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের শিষ্যরা। ৬৬ বলে ৪২ রানের এক কার্যকর ইনিংস খেলে এনামুল হক জুনিয়রের বলে ক্যাচ আউট হয়েছেন শান্ত। আর ৩৩ বলে ২৩ রানের সংগ্রহ নিয়ে নাঈমের শিকার হন বিসলা।
এই জুটির পর রীতিমতো ভেলকি দেখিয়েছেন দলটির দুই টেলএন্ডার আবুল হাসান রাজু ও তাসকিন আহমেদ। অষ্টম উইকেটে তদের ৫১ রানের জুটিতে ভর করে সবকটি উইকেটের হারিয়ে ১৮৩ রানের সংগ্রহ পায় আবাহনী। আবুল হাসান রাজু নাইমের বলে হাবিবুরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ২৮ রানের ইনিংসের সমাপ্তি টানলেও শেষ পর্যন্ত ৩৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তাসকিন। দলের হয়ে ২৭ রানের ইনিংস খেলেছেন মোসাদ্দেক হোসেন।
মোহামেডান বোলারদের মধ্যে শুভাশিষ রায় ৩টি, হাবিবুর রহমান ও নাইম ইসলাম জুনিয়র ২টি করে আর এনামুল হক জুনিয়র, আরিফুল হক ও নাঈম ইসলাম নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।
পঞ্চম রাউন্ডের ম্যাচে আবাহনী নিষ্প্রভ বোলিং ও ব্যাটিংয়ের দায়ে হেরেছিল লিজেন্ড অব রুপগঞ্জের বিপক্ষে। ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচেও সেই নিষ্প্রভ বোলিং ও ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে টানা দুই হারের দেখা পেল কোচ খালেদ মাহমুদ সজুনের দল।
মোহামেডানের দুই টপ অর্ডার এজাজ আহমেদ ও উপল থারাঙ্গার অনবদ্য ৯৭ রানের জুটিতে তামিম ইকবালদের দেয়া ১৮৪ রানের সহজ লক্ষ্য মুশফিকুর রহিমরা টপকে গেছে মাত্র ২ উইকেটের খরচায়। আর এই জয়ে ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে বেশ দাপটের সঙ্গেই টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে মোহামেডান।
আবাহনীর ১৮৪ রানের জবাব দিতে নেমে বেশ সতর্ক শুরু করে মোহামেডানের দুই ওপেনার সৈকত আলী ও এজাজ আহমেদ। ব্যক্তিগত ১৩ রানে হাতে আঘাত পেয়ে রিটায়ার্ড হার্ড হয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরেন সৈকত। সৈকত মাঠ ছাড়ার পর এজাজ আহমেদের সঙ্গে দলের হাল ধরেন উপল থারাঙ্গা। এই জুটিতে আসে ৯৭ রান। ব্যক্তিগত ৪২ রানে অমিত কুমারের বলে তাসকিনের তালুবন্দি হয়ে নিজের ইনিংস শেষ করেন এজাজ।
এজাজের বিদায়ের পর উপল থারাঙ্গার সঙ্গে ১৯ রানের জুটি গড়ে ব্যক্তিগত ১৭ রানে তাসকিনের বাউন্সারে পরাস্ত হয়ে স্নিক আউটের ফাঁদে পড়ে ক্রিজ ছাড়েন মোহামেডান অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। মুশফিকের পর নাঈম ইসলাম থারাঙ্গার সঙ্গে ৬৯ রানের অনবদ্য এক জুটি গড়ে মাত্র ২ উইকেটের বিনিময়ে ৪৩.৫ ওভারে ১৮৫ রান সংগ্রহ করে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। ব্যাট হাতে উপল থারাঙ্গা ৭৭ ও নাইম ইসলাম অপরাজিত ছিলেন ২৫ রানে।
আবাহনীর হয়ে বল হাতে তাসকিন আহমেদ ও অমিত কুমার নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, ১২ মে ২০১৬
এইচএল/এমআর