ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘নারীদের ক্রিকেট জাগাতে কাউন্সিলরশিপ থাকা জরুরি’

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১৬
‘নারীদের ক্রিকেট জাগাতে কাউন্সিলরশিপ থাকা জরুরি’ ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল

ঢাকা: ২০১৪-১৫ মৌসুমে প্রিমিয়ার ডিভিশন নারী ক্রিকেট লিগে অংশ নিয়েছিল ১২টি ক্লাব। অথচ এক মৌসুম পর এবার অংশগ্রহণ মাত্র ৭টি ক্লাবের! এতেই স্পষ্ট নারীদের নিয়ে দল গড়তে আগ্রহ হারাচ্ছে ক্লাবগুলো।

নারী ক্রিকেটে ক্লাবগুলোর কাউন্সিলরশিপ না থাকাতে সংখ্যাটা কমে আসছে বলে মনে করেন এবারের আসরের চ্যাম্পিয়ন দল রুপালি ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদের অধিনায়ক সাথিরা জাকির জেসি।

ক্রিকেটের প্রতি পরম ভালোবাসা, পরিশ্রম আর নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা জেসির ক্যারিয়ারে এনে দিয়েছে বহু সাফল্য। ক্রিকেটার পরিচয়ের পাশাপাশি জেসি এখন ধারাভাষ্যকার। সবগুলো ক্ষেত্র মিলিয়ে তিনি দেখেন তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে, ‘আমার সবকিছু জুড়ে কিন্তু ক্রিকেট। ক্রিকেট কমেন্ট্রি (ধারাভাষ্য) করি, ক্রিকেট কোচিং করাই, ক্রিকেট খেলি। ক্রিকেট ছাড়া অন্য কিছু করি না। আমাদের সবসময় কিন্তু খেলা থাকে ‍না। অনেক সময় বসেই থাকতে হয়। আমি কিন্তু কমেন্ট্রি থেকে অনেক কিছু শিখছি। আমি যখন কমেন্ট্রি করি লক্ষ্য করি কোন বলটা কোথায় গেল। ব্যাটসম্যান বলটাকে কিভাবে খেললো। সেখান থেকে অনেক কিছু জানা যায়। বাংলাদেশের একমাত্র মেয়ে হিসেবে আমি কোচিংয়ে ‘এসএসসি লেভেল টু’  কোর্স করেছি মালয়েশিয়া থেকে। এতে আমার নিজের ভুল ধরার জন্য কোচ দরকার হয় না। ভুল-ত্রুটি হলে নিজেই বুঝতে পারি। টিম চালাতেও সুবিধা হয়। নেতৃত্ব দিতেও সুবিধা হয়। সবকিছু মিলিয়ে ক্রিকেট নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসি। ক্রিকেট নিয়ে যে কাজই করি না কেন, তা আমার ক্যারিয়ারেই যোগ হয়। ’

 

জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা এ ক্রিকেটার বাংলানিউজকে বলেন, ‘ক্লাবগুলোকে কাউন্সিলরশিপ দেয়া হলে লিগে তারা আরও আগ্রহী হবে। ভালো টিম করবে, ক্রিকেটাররা উপকৃত হবে। নারীদের ক্রিকেট জাগাতে কাউন্সিলরশিপ থাকা জরুরি। ’

সদ্য শেষ হওয়া নারীদের প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে বড় বাজেটের দল গড়েছে কেবল রুপালি ব্যাংক ও মোহামেডান। প্রতিবারই দুই-তিনটির বেশি ক্লাব বিগ বাজেটের দল গড়ে না। এজন্য আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন জাতীয় দলের নারী ক্রিকেটাররা।

এ ব্যাপারে জেসি জানান, ‘শুধুমাত্র মোহামেডান ও রুপালি ব্যাংক খেলোয়াড়দের ভালো পেমেন্ট দিচ্ছে। জাতীয় দলের ৬ জন প্লেয়ার এ দুই টিমে খেলছে। জাতীয় দলের বাকি প্লেয়ারদের কম টাকায় খেলতে হয়েছে। আমার টিমের সাধারণ কোনো প্লেয়ার যে টাকা পেয়েছে জাতীয় দলের অন্য ক্রিকেটাররা সে পরিমান টাকাও পায়নি। অনেক কম টাকায় খেলতে হয়েছে তাদের। ’

জেসি  রুপালি ব্যাংকের অধিনায়ক ছাড়াও ম্যানেজম্যান্টের ভূমিকায় ছিলেন বলেই উভয় দিক থেকে জানেন ক্লাব ক্রিকেটের আদ্যোপান্ত, ‘টিমের ক্যাপ্টেন ছিলাম, বলতে গেলে ম্যানেজার-কোচও। অনেক সিদ্ধান্ত আমার কাছ থেকেই যেত। দল গড়ার সময় যে যত টাকা চেয়েছে আমি সেটা দিয়েই টিমে নিয়েছি। এমনও হয়েছে অন্য ক্লাবের অফিসিয়ালরা ফোন দিয়ে বলেছেন প্লেয়ারদের এত টাকা দিচ্ছ কেন? প্লেয়ারদের দাম তো বাড়িয়ে দিচ্ছ? এমন মনোভাব থাকলে নারী ক্রিকেট এগুবে না। ’

প্রিমিয়ার লিগে রিজার্ভ ডে রাখার জোর দাবি করলেন রুপালি ব্যাংকের এ অধিনায়ক,  লিগপর্বে রিজার্ভ ডে রাখা হয়নি। প্রথম রাউন্ডে দেখা গেল ৭০ লাখ টাকার বাজেটের একটা টিম ২০ লাখ টাকার একটি ক্লাবের সাথে পয়েন্ট ভাগাভাগি করছে, রিজার্ভ ডে না থাকাতে। এতে শেষের দিকে এসে আমাদের অনেক বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। যদিও আমরা বিপদে পড়িনি; মোহামেডান কিন্তু বিপদে পড়েছে। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা এবার রানারআপও হতে পারেনি। কারণ আমাদের সাথে একটা ম্যাচে খেলাঘরের পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়েছে। এই এক পয়েন্টের কারণে তারা এগিয়ে গেছে। মোহামেডান অনেক টাকা খরচ করেও রানারআপ হতে পারেনি। রিজার্ভ ডে না থাকাটা শক্তিশালী ক্লাবগুলোর জন্য অনেক বড় ক্ষতির। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ০২ জুলাই ২০১৬
এসকে/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।