ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘ঈদের দিন ঘুরতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলাম’

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০১৬
‘ঈদের দিন ঘুরতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলাম’ ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ঈদের দিন বান্ধবীকে নিয়ে ঘুরতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া! দুই ঘন্টার হাপিত্যেশ-উৎকন্ঠা, অতঃপর বাসা খুঁজে পাওয়া। ঘটনাটি বাংলাদেশ নারী দলের ক্রিকেটার শারমিন আক্তার সুপ্তার।

স্কুল জীবনে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে ঈদের দিন দুপুরে বান্ধবীকে নিয়ে রিকশায় চড়ে গাইবান্ধার রামচন্দ্রপুরের গ্রামটি ঘুরতে বেরিয়েছিলেন সুপ্তা। রাস্তাঘাট না চিনতে পেরে ফুঁফিয়ে কান্না। তবে কারও সহযোগিতা ছাড়াই বিকেলে খুঁজে পান নিজের বাড়ি।

ঈদ নিয়ে স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে মজার স্মৃতি হিসেবেই উল্লেখ করলেন ছোটবেলার এই ঘটনাটি, ‘ঈদের সময় আমাদের ওখানে রিকশায় চড়ার একটা চল ছিল। ঈদের দিন ঘুরতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলাম। বান্ধবীকে নিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে রিকশায় চড়ে ঘুরতে বের হলাম। ঘন্টাখানেক ভ্রমণের পর দেখি রাস্তাঘাট কিছুই চিনি না। ভয়ে বাসার ঠিকানাই ভুলে গেছি! কান্নাকাটির পর রাস্তার মানুষ সাহায্য করতে চাইছিল কিন্তু আমরা তো ঠিকানা জানি না। রিকশায় ঘুরতে ঘুরতে দোকানের সাইনবোর্ডে লেখা দেখলাম ডিডি রোড। তার মানে, আমরা ‍বাসার কাছাকাছিই আছি। বাসার সামনে যেতেই দেখি বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজনরা বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। ঘটনাটা উৎকন্ঠার হলেও এখন ভাবলে খুব মজা পাই। ’

প্রায় ২-৩ বছর পর পরিবারের সঙ্গে  ঈদ করার জন্য লম্বা সময় পেয়েছেন শারমিন আক্তার সুপ্তা। আবাহনীর হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শেষ করে গত ২০ জুন ঈদ করতে গেছেন রামচন্দ্রপুরে। বাবা-মা, ভাই-বোনসহ পরিবারের সবার সঙ্গে অনেকটা সময় কা‍টানো যাবে ভেবে বেশ খুশি ২০ বছর বয়সী সুপ্তা, ‘ঈদের সময় আমাদের বেশি খেলা থাকে। গতবার কোরবানির ঈদের সময়ে পাকিস্তান ট্যুর হলো। রোজার ঈদে ক্যাম্প হলো। শেষ দুই-তিন বছরের মধ্যে এবারের ঈদে অনেক সময় পাচ্ছি পরিবারের সবার সঙ্গে থাকার জন্য। লম্বা ছুটি। এবারের ঈদে তাই অন্যরকম একটা আমেজ পাচ্ছি। ’
 
ঈদের প্রসঙ্গ আসলে চলে আসে কেনাকাটার ব্যাপারটি। বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজনের জন্য ঢাকা থেকে কেনাকাটা করে গেছেন ‍বাড়িতে। পরিবারের মানুষের জন্য কেনাকাটা করতে পারার সুখানুভূতির কথা জানিয়ে সুপ্তা বলেন,  ‘ভাই-বোন আছে, চাচাতো, মামাতো ভাই-বোনরা আছে। ওরা অপেক্ষায় থাকে আপু ঢাকা থেকে শপিং করে নিয়ে আসবে বা পাঠিয়ে দেবে। ওরা যে আমার জন্য অপেক্ষা করে ‍তা ভাবতে খুব  ভালো লাগে। ’

বাবা আর ভাইয়ের জন্য একই ধরনের পাঞ্জাবি, মায়ের জন্য থ্রি-পিস, বোন ও নিজের ড্রেস, জুতো ও কসমেটিকস কিনেছেন সুপ্তা। কেনাকাটায় সুপ্তার সবচেয়ে বেশি দূর্বলতা জুতোর উপর। ঈদের জন্য কিনেছেন তিন জোড়া জুতো।  

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার ও রাজনীতি বিভাগে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করছেন সুপ্তা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু, ক্রিকেটার, গ্রাম মিলিয়ে সুপ্তার বন্ধুদের সংখ্যা অনেক। ঈদ-শুভেচ্ছা কিভাবে বিনিময় হয় জানতে চাইলে সুপ্তা বলেন, ‘এখন তো যোগাযোগ করা খুব সহজ হয়ে গেছে। এসএমএস করি, ফেসবুকে উইশ (ঈদের শুভেচ্ছা জানানো) করা হয়। আগে ফ্রেন্ডসার্কেল কম ছিল তাই সবাইকে উইশ করা হতো। এখন অনেক বড় সার্কেল সবাইকে উইশ করা হয় না। তবে যারা খুব কাছের তাদের উইশ করি। কে কিভাবে ঈদ করছে ফোনে খোঁজখবর নিই।

‘আমার বেশিরভাগ বন্ধুই ঢাকায় থাকে। আমি প্রায় ৭-৮ বছর ধরে ঢাকায় আছি। ঈদের পর ঢাকায় ফিরে বান্ধবীদের বাসায় দাওয়াত থাকে। বন্ধু-বান্ধবীর মায়েরা বলে, মামুনি তুমি তো ঈদে ছিলে না...। অনেক আদর করে তারা। আমার ঈদটা দীর্ঘদিন ধরেই হয়। ’-যোগ করেন সুপ্তা।
 
ঈদের দিন পায়েস নিজের হাতেই রান্না করেন সুপ্তা। সন্ধ্যায় ছোট ভাইয়ের আবদার মেটান নুডুলস রান্না করে। মায়ের হাতের লাচ্ছা সেমাই খুব পছন্দ তার। ঈদে ছোটদের সালামি দেয়ার ব্যাপারটা খুব উপভোগ করেন বাংলাদেশ নারী দলের ব্যাটসম্যান শারমিন আক্তার সুপ্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৬
এসকে/এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।