ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

আশরাফুলের অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরির পেছনের গল্প

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৬
আশরাফুলের অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরির পেছনের গল্প ছবি:সংগৃহীত

ঢাকা: ২০০১ সালের আজকের দিনে (০৮ সেপ্টেস্বর) মাত্র ১৭ বছর ৬১ দিন বয়সে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরির মধ্য দিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে অনন্য এক নজির স্থাপন করেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে শ্রীলঙ্কার মুরালি-ভাসদের মতো ভয়ংকর বোলারদের সামনে কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে আশরাফুল খেলেন ২১২ বলে ১১৪ রানের অসাধারণ এক ইনিংস।

তিনদিনে শেষ হওয়া কলম্বো টেস্টে ইনিংস ও ১৩৭ রানে বাংলাদেশ হারলেও মুত্তিয়া মুরালিধরণের সঙ্গে যৌথভাবে ম্যাচসেরার স্বীকৃতি পান বাংলাদেশের লিটলমাস্টার মোহাম্মদ আশরাফুল। ওই সেঞ্চুরির সুবাদে আশরাফুল যেমন নিজেকে চিনিয়েছেন তেমনি হয়েছিলেন টেস্টের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান। যা এখন পর্যন্ত বিশ্ব রেকর্ড। সেই সঙ্গে বিশ্ব ক্রিকেটে টেস্টে বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা ছড়ায় বিশ্ব দরবারে।
 
অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরির ১৫ বছর পূর্তিতে বাংলানিউজের কাছে স্মুতি রোমন্থন করলেন আশরাফুল। জানালেন ১৫ বছর আগে করা সেঞ্চুরিটির পেছনের গল্প, ‘দ্বিতীয় ইনিংসে দুর্জয় (নাইমুর রহমান) ভাই আমাকে সুযোগ দিয়েছিল ওনার পজিশনে (৬ নম্বর) ব্যাটিং করার। দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে নামলাম ৪ রানে অপরাজিত থাকলাম। রাতে ঘুমের ভেতর স্বপ্ন দেখলাম দুইশো করে ফেলেছি। পরদিন সকাল দুর্জয় ভাইয়ের সাথে গাড়িতে বসলাম। হোটেল থেকে মাঠে যাবো। রাতের স্বপ্নের কথা দুর্জয় ভাইরে বললাম। দুর্জয় ভাই বললো, হ্যা তুই তো ব্যাটসম্যান দুইশো করা তো সম্ভব। পরের দিন ব্যাটিংয়ে নামলাম। বুলবুল (আমিনুল ইসলাম) ভাইয়ের সঙ্গে ব্যাটিং করতেছি। বুলবুল ভাই ছিল আমার প্রিয় ক্রিকেটারদের একজন তার সঙ্গে ব্যাট করতে পারার অনুভূতিই অন্যরকম। ’

 


 
বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে ভারতের বিপক্ষে মুরালিধরণ নেন দুই ইনিংসে ১২ উইকেট। ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে তখন মুরালি। এ ডানহাতি অফস্পিনারের দুসরা তখন দুর্বোধ্য বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানদের কাছেও। অথচ বিশ্বসেরা মুরালিকে খেলতেই নাকি সেদিন সহজ লাগছিল আশরাফুলের, ‘মুরালিধরণকে খেলা আমার জন্য সহজ হয়ে গিয়েছিল সেদিন। উইকেটে দাড়িয়ে মুরালির বল খেলতে আমি দারুন উপভোগ করছিলাম। তার আগের ম্যাচে দুই ইনিংসে ৭ উইকেট ও ৫ উইকেট নেয় ভারতের সাথে। সেই বোলারকে আমি সহজভাবে খেলতেছি। অনুভূতিই অন্যরকম। দুসরা মারতেছে আমি আস্তে করে করে খেলে দিচ্ছি। আমাদের সাথে দুই ইনিংসে ৫টি করে ১০ উইকেট পেল। তবে মুরালির দুসরা খেলতে আমার কোনো সমস্যাই হয়নি, বরঞ্চ উপভোগ করছিলাম। ’


দাপট দেখিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরুর পেছনে ঘরোয়া লিগেরও ফর্ম আর অ্ঙ্কুর ক্রিকেট একাডেমির গাঁথুনির কথা জানালেন আশরাফুল, ‘আমি লাকি ছিলাম কারণ দারুণ একটা একাডেমিতে বড় হয়েছি। ওয়াহিদুল গনি স্যারের কাছে শিখেছি ওই একাডেমিতে। ওখানে অনেক গড গিফটেড প্লেয়ার ছিল, ন্যাচারাল ট্যালেন্ট। লেগস্পিনার, অফস্পিনার ভালো পেসার সব কিছু ছিল স্যারের ওখানে। ওইসব বোলারদের খেলতে খেলতে আমার জন্য সব সহজ হয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া শ্রীলঙ্কা সফরের আগে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে আমার পাঁচটা সেঞ্চুরি ছিল। অস্ট্রেলিয়ার একাডেমি টিমের সঙ্গে একটি সেঞ্চুরি করেছিলাম। অনূর্ধ্ব ১৭ ও ১৯ দলের হয়ে চারটা সেঞ্চুরি ছিল। এক মৌসুমে পাঁচটা সেঞ্চুরি করা বিরাট ব্যাপার। লংগার ভার্সন খেলে গিয়েছিলাম তাই সুবিধা হয়েছিল। ’

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৯ঘণ্টা, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
এসকে/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।