ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

কোন বাধাই ওদের আটকে রাখতে পারেনি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৭
কোন বাধাই ওদের আটকে রাখতে পারেনি কোন বাধাই ওদের আটকে রাখতে পারেনি

ওভাল থেকে: শারীরিক কিংবা মানসিক কোন বিবেচনায়ই ওরা স্বাভাবিক নয়। কেনিংটন ওভালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচ দেখতে আসা বাকি আট দশটি মানুষের মতো উল্লাস করা স্বামর্থ ওদের নেই। ঠিকমতো ভাবতে পারে না, কথাও বলতে পারে না, হাঁটাচলার সাধ্যটুকুও সৃষ্টিকর্তা ওদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন!

তারপরেও ওরা মাঠে এসেছে বিশ্বক্রিকেটের এই মহাযজ্ঞের স্বাক্ষী হতে। ওদের অদম্য মানষিক শক্তির সামনে হার মেনেছে সকল পশ্চাৎপদতা।

  

ব্যাটসম্যানরা দৃষ্টিনন্দন এক একটি চার, ছয় মারছেন, বোলাররা ধারালো বলে গুড়িয়ে দিচ্ছেন উইকেট তারপরেও ওরা নীরব। হুইল চেয়ারে বসে নীরবে খেলা দেখাটুকুই যা। নিশ্চয়ই ওরা আনন্দ পাচ্ছে কিন্তু প্রকাশ নেই। বলছিলাম ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যকার ম্যাচ দেখতে কেনিংটন ওভালে আসা প্রতিবন্ধী দর্শকদের কথা।

বুধবার (১ জুন) ওভালের গ্যালারিতে নেমেছিলাম দর্শকদের মাঝে বসে কিছুক্ষণ খেলা দেখতে। সেখানেই আমার চোখ গিয়ে আটকে গেল অদম্য মনের জোরের অধিকারী এই মানুষগুলোর প্রতি। গ্যালারিতে বসার সামর্থ নেই তাই ওদের বসতে দেয়া হয়েছে একেবারে সামনে। সেখানে হুইল চেয়ারে বসে ওরা ক্রিকেট উপভোগ করছে।

এক পা দু পা করে ওদের দিকে এগিয়ে গেলাম। কাছে গিয়ে একজনের নাম জানতে চাইলে উত্তর দিল,‘ইয়াকু’। ইয়াকু লন্ডনেরই অধিবাসী। সঙ্গত কারণেই স্বাগতিক ইংল্যান্ডের সমর্থক। কথা বলতে গেলে সব এলোমেলো হয়ে যায়। তাই বেশি কথা না বলে জানতে চাইলাম কেমন লাগছে মাঠে বসে খেলা দেখতে? বেশ সাবলীল উত্তর ‘গ্রেট। ’

এর পেরর প্রশ্নে তার কাছে জানতে চাইলাম মাঠে বসে খেলা দেখছো অনুভূতি কেমন? বললেন, ‘ভীষণ খুশি লাগছে। যারা আমাদের জন্য এখানে বসে খেলা দেখার ব্যবস্থা করেছেন তাদের ধন্যবাদ। তোমাকেও ধন্যবাদ। ’ এতটুকু বলেই তার চোখ আবার ম্যাচের দিকে। বুঝলাম ও বিরক্ত হচ্ছে হয়তো প্রকাশ করতে পারছে না। আমি আর কোন প্রশ্ন না করেই ফিরে এলাম।

শুধু আইসিসি’র এমন মেগা ইভেন্টগুলোই নয়, এদেশে শাররীরিক ও মানষিক প্রতিবন্ধীদের জন্য যে কোন খেলাতেই আয়োজকেরা বিশেষ ব্যবস্থা রাখেন। কিন্তু আমাদের দেশে অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া এই মানুষগুলোর জন্য এমন ব্যবস্থা সচারচর চোখে পড়ে না।

তাই মনে মনে মনে বলতে লাগলাম, আহা! যদি আমরাও ওদের মতো পারতাম!

স্থানীয় সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, ১ জুন ২০১৭
এইচএল/এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।