যে দলের সাথে একটি সিরিজে খেলতে সময় লাগে প্রায় এক যুগের কাছাকাছি, কিংবা যে দলের সাথে আজও লাল-সবুজের একটি জয় পাওয়া হয়ে উঠেনি, সেই দলের বিপক্ষে যখন কেউ ২-০তে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখে তখন তাকে তো আর স্পর্ধা না বলে পারা যায় না।
হ্যাঁ, তেমনই স্পর্ধা দেখিয়েছে বাংলাদেশ।
স্বীকার করতেই হবে অস্ট্রেলিয়ার মতো বিশ্ব ক্রিকেটের দাপুটে এক দলের বিপক্ষে এমন প্রত্যাশা দারুণ চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু প্রত্যাশাটিতো আর টাইগারদের অহেতুক জন্মায়নি। স্বাগতিকদের সেজন্য পর্যাপ্ত রসদ আছে বলেই হয়তো। ঢাল নেই তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দারের মতো অবস্থাতো আর বাংলাদেশের নয়।
নিজেদের শক্তিমত্তার বিষয়টি নিয়ে শনিবার (২৬ আগস্ট) ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে টাইগারদের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম জানিয়েছেন, ‘আপনারা সবাই জানেন, শেষ সিরিজ এবং শেষ দুই বছরে আমরা হোম কন্ডিশনে কতুটুক ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলেছি। আমার মনে হয় সবাই সেই বিশ্বাস থেকেই বলেছে যে সিরিজ জেতা সম্ভব। আর বলার জন্য বলা নয়। আমাদের সেই বিশ্বাস আছে এবং পর্যাপ্ত রিসোর্স আছে এবং যথেষ্ট খেলোয়াড় আছে যারা যে কোনো সময়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। ’কেন নয়? গত বছরের অক্টোবরে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই মিরপুরেই এসেছিল বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের অনন্য জয়টি। দেশের গন্ডি পেরিয়ে এরপর ঐতিহাসিক জয় আসে এ বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কায় নিজেদের শততম টেস্টেও। তাই স্বাগতিক দেশের এমন স্পর্ধা নিশ্চয়ই অমূলক নয়।
অবশ্য বাংলাদেশের এমন প্রত্যাশায় অনেকটা জল ঢেলে দিয়েছেন অজি অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। ১০০ টেস্ট খেলে যে দেশ মাত্র ৯টিতে জয় পায় তারা কীভাবে এতটা আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারে তা তার বোধগম্য নয়।
স্মিথ জানান, ‘আমার মনে হয় এটা ওদের অতি আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য। অবশ্য ওরা বলতেই পারে। কেননা দেশের মাটিতে ওরা কয়েকটি সিরিজ ভালো খেলেছে। বাংলাদেশ ১০০ টেস্টের ভেতরে ৯টা জিতেছে। তাই সিরিজটি আমাদের চ্যালেঞ্জিংই হবে। তবে আমি তাদের এমন মন্তব্যে বিস্মিত। ’
আর অনুমিতভাবেই সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি নিজেদের করে নিতে চাইছেন এই অজি অধিনায়ক। মুশফিকদের বিপক্ষে ম্যাচটির জন্য সেরা একাদশেও দলে ফিরিয়েছেন ওসমান খাজা ও অ্যাস্টন অ্যাগারদের মতো সতীর্থদের।
১১ বছর পর দু’দলের মধ্যকার এই দ্বৈরথের জন্য মুশফিক যেমন প্রস্তুত তেমনি প্রস্তুত স্টিভ স্মিথও। এবার দেখার পালা মাঠের লড়াইয়ে কে এগিয়ে থাকে।
তবে তাদের এই প্রস্তুতিতে বাধ সাধতে পারে ভাদ্রের বৃষ্টি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরেরর দেয়া তথ্যমতে প্রথম টেস্টের প্রতিটি দিনই (২৭-৩১ আগস্ট) বৃষ্টির শঙ্কা আছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া এই পূর্বাভাস সত্যি হলে হয়তো বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেসে যাবে। আর যদি এমন হয়; বৃষ্টি হচ্ছে খেলাও হচ্ছে! তাহলে কে জানে, রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরির মধ্যেই লেখা হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশের ক্রিকেটের গর্বিত আরেকটি ইতিহাস।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, ২৬ আগস্ট ২০১৭
এইচএল/এমআরপি